Home অন্যান্য খবর হাইয়্যাতুল উলইয়ার সনদ পরীক্ষায় জামিয়াতুন নূরের সাফল্য: শিক্ষক-ছাত্রদেরকে ধন্যবাদ জানালেন আল্লামা নাজমুল...

হাইয়্যাতুল উলইয়ার সনদ পরীক্ষায় জামিয়াতুন নূরের সাফল্য: শিক্ষক-ছাত্রদেরকে ধন্যবাদ জানালেন আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী

আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার নির্মাণাধীন শিক্ষা ভবনের মডেল।

রাজধানী ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী প্রতিষ্ঠিত ‘জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া’ সর্বোচ্চ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড ‘আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ”-এর কেন্দ্রীয় সনদ (মাস্টার্স-আরবী) পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক আল্লামা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী মহান আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করেছেন এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্র ও অভিভাবকদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

হাইআতুল উলয়া বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া থেকে বোর্ডের কেন্দ্রীয় সনদ (মাস্টার্স-আরবী) পরীক্ষায় ৩৯ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিলেন। তন্মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে ৩৬ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। পাসের হার ৯২.৩১%। এর মধ্যে মুমতাজ ৫ জন, জায়্যিদ জিদ্দান ৮ জন, জায়্যিদ ১৪ জন, মকবূল ৯ জন এবং রাসিব হয়েছেন ৩ জন।

জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আল্লামা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী হাইআতুল উলইয়ার পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনকারী ছাত্রদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আজ আমি আপনাদের এই গৌরবদীপ্ত অর্জনে অত্যন্ত সন্তুষ্ট ও মহান আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া আদায় করছি। জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়াও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আপনাদের সফলতায় গৌরববোধ করছে। প্রতিষ্ঠানটির তৃতীয় বছরেও আপনারা যে সফলতার ধারাবাহিকতা বয়ে এনেছেন, তা অবিস্মরণীয়। দেশের অনেক বড় বড় পুরনো প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররাও মেধা তালিকায় স্থান করতে পারেনি। কিন্তু আপনারা উস্তাদদের নির্দেশনা মেনে গভীর অধ্যাবসায়ে তালিমে মশগুল থাকায় এটা সম্ভব হয়েছে। আমি এজন্য প্রতিষ্ঠানের মেধাবী ও উদ্যোমি শিক্ষকবৃন্দদেরকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই জামিয়া প্রথম বছরেই এই বিশাল সফলতা অর্জন ও সকলের মনোযোগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বিজয়ী ছাত্রদেরকে অর্জিত ইলমের চর্চা জারি রেখে উম্মাহর মাঝে ইলম ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা হলেন ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া বা নবীগণের ওয়ারিশ। আপনাদের স্কন্ধে দাওয়াত ও তাবলীদের দায়িত্ব অর্পিত। নববী আদর্শে উম্মাহকে গড়ে তোলা ও হকের প্রচার করা আপনাদের আবশ্যিক দায়িত্ব। এটা কখনো ভুলে যাবেন না।

উল্লেখ্য, ‘জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া’ ২০২১ সালের মার্চ মাসে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার শুরু লগ্নেই মক্তব, হিফজ’সহ ইবতেদায়ী থেকে দাওরায়ে হাদীস ও তাখাসসুসাতের অন্যান্য ফ্যাকাল্টি খুলে সকল জামাতেই নির্দিষ্ট পরিমাণ শিক্ষার্থী সহ বোর্ড পরীক্ষায় মেধাতালিকা উচ্চহার অর্জন করে সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আল্লামা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী এই প্রতিনিধিকে আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ব্যাপক মেহনত এবং শিক্ষার্থীদের একাগ্র পড়াশোনা ও একাডেমিক শৃঙ্খলা কঠোরভাবে অনুশীলনের ফলে বরাবরের মতো এবারও জামিয়াতুন নূরের শিক্ষার্থীরা ঈর্ষনীয় সফলতা পেয়েছে। এতে জাতীয় স্তরে জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া এক ঈর্ষনীয় স্থানে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছে। এ জন্য আমি মহান আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করছি।

তিনি আরো বলেন, জামিয়াতুন নূরের শিক্ষাকার্য্যক্রম পরিচালনায় কোনরূপ গাফলতি বা শৈথল্যের সুযোগ নেই। আমরা শিক্ষার মান বজায় রাখার উপর কোনরূপ আপোষ করি না। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা দরসের পাশাপাশি সঠিক ঈমান-আক্বিদা, আমল-আখলাক এবং আদর্শ ও নৈতিকতার মানেও যাতে সর্বোচ্চ স্থানে জায়গা করে নিতে পারে।

আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ফলাফলের এই ধারাবাহিক সাফল্যে সামনের দিনগুলোতে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়ে আরো ভালভাবে ও মনোযোগের সাথে লেখাপড়া করবে, এতে আগামীতে হাইআতুল উলইয়ার সম্মিলিত মেধা তালিকায় আরো বেশি সফলতা আসবে, ইনশাআল্লাহ।

আরও পড়তে পারেন-

তিনি বলেন, আমরা যখন মাদরাসার ঘোষণা দিয়েছি তখন মাদরাসার কোন জায়গা ছিলো না। কোথায় ছাত্র ভর্তি করবো, ভর্তির পর ছাত্রদের থাকা, খাওয়া সবকিছুই অনিশ্চিত ছিলো। তবুও মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে নতুন মাদরাসার ঘোষণা দিয়েছিলাম। প্রতিষ্ঠার প্রারম্ভিক দিকে ১২নং সেক্টরে বাসা ভাড়া নিয়ে মাদরাসা শুরু করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী, তিনি খুব অল্প সময়েই জামিয়ার স্থায়ী ক্যাম্পাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আধুনিক মানের স্থায়ী ভবনে মনোরম পরিবেশে যত্নশীল, যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে ‘জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া’ শিক্ষা কার্যক্রম।

তিনি আরো বলেন, যেখানে মাদরাসার অস্তিত্ব ছিলো না, ছাত্রদের থাকা, খাওয়া সবকিছুই ছিলো অনিশ্চিত, সেখানে আল্লাহর কৃপায় স্থায়ী ক্যাম্পাস ও মেধাতালিকায় উচ্চহার অর্জনসহ আমাদের ফলাফল সন্তোষজনক। ইনশাআল্লাহ, আগামী সেশনে মেধাতালিকার এ প্রাপ্তি শতভাগ হবে বলে আমি মনে করি। আল্লাহ চাহেন তো শাওয়ালের শুরুতে ১৭ এপ্রিল বুধবার আগামী নতুন শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে, ইনশাআল্লাহ।

সাফল্যের এ ধারা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য জামিয়ার সকল ছাত্র, ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী ও শুভানুধ্যায়ীদের নিকট দোয়া কামনা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও শায়খুল হাদীস আল্লামা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।