Home ওপিনিয়ন ‘বাংলাদেশের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আরো অনিশ্চয়তার পথে এগোচ্ছে’

‘বাংলাদেশের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আরো অনিশ্চয়তার পথে এগোচ্ছে’

rohingya_crisis
প্রতিকী ছবি।

সামপ্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি, ভ‚-কৌশলগত অবস্থান এবং অর্থায়ন সঙ্কটসহ নানান কারণে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আরো অনিশ্চয়তার পথে এগোচ্ছে বলে মনে করেন রোহিঙ্গা নিয়ে কাজ করা সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। এতে করে মানবিক সহায়তার পাশাপাশি কক্সবাজারের ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওয়াশ (সুপেয় পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা) এর মতো বিষয়গুলো ব্যাহত হচ্ছে। গতকাল কক্সবাজারের একটি হোটেলে স্থানীয় ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই ওয়াশ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত ও রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ ও সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় (আরআরআরসি) আয়োজিত Plumbers of the World: Legacy and Realities of Rohingya Response শীর্ষক দিনব্যাপী আয়োজনে এসব বিষয়গুলো উঠে আসে। অনুষ্ঠানে অক্সফ্যামের উদ্ভাবন, ওয়াশ বিষয়ক সফলতা ও কার্যক্রম, রোহিঙ্গা সঙ্কট থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা, তহবিলের সীমাবদ্ধতা, আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি আহ্বান ও সঙ্কট মোকাবিলায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সুপারিশ উঠে আসে।

আরআরআরসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সা¤প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা সমস্যা আরো জটিল হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, ‘সামপ্রতিক মার্কিন প্রশাসন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তহবিল হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছে, যা রোহিঙ্গা সঙ্কটকে আরো খারাপ দিকে নেবে। ক্যাম্পের ওয়াশ ব্যবস্থাপনার নিয়ে বলবো এ বিষটি অন্যান্য ৮-৯টি খাতের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত। সীমিত সম্পদ নিয়ে ছোট একটা ভ‚খÐে এই বিশাল জনসংখ্যার জন্য সুপেয় পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘আমাদের চ‚ড়ান্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত তাদেরকে (রোহিঙ্গা) মাতৃভ‚মিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। যদিও জেআরপি (জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান-২০২৪) রোহিঙ্গাদের কিছু সুযোগ তৈরি করেছে যাতে তারা স্বাবলম্বী হতে পারে এবং তাদের দেশে ফিরে গিয়ে জীবিকার সুযোগ তৈরি করতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো- তারা অলস বসে আছে এবং এটি সবার জন্য নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করছে। এমন পরিস্থিতিতে এ কথা নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই যে, সেখানে কোনো মৌলবাদ কিংবা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সম্ভাবনা নেই। তাই তাদের প্রত্যাবর্তনে আমাদের কাজ করতে হবে।’

আরও পড়তে পারেন-

বিশেষ অতিথি বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর’র প্রতিনিধি সুম্বুল রিজভী বলেন, ‘সার্বিকভাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। মিয়ানমারের সামপ্রতিক পরিস্থিতির কথাও আমাদের মনে রাখতে হবে। বিশেষ করে সেখানে এমন কিছু হয়েছে যা আমরা কল্পনাও করিনি। এখনও আরাকানের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইছে, যা প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য বড় ধরণের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই মুহূর্তে এটা ভ‚-কৌশলগত ইস্যু।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে। তিনি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংগ্রাম এবং তাদের জন্য একটি টেকসই ভবিষ্য নিশ্চিতের প্রয়জনীয়তার উপর জোর দেন। এক্ষেত্রে সরকারসহ সকল পক্ষকে এগিয়ে আসা এবং একটি সমন্বয়ের মাধ্যমে ঐক্য ও সংহতির মাধ্যমে কাজ করার কথা বলেন।

এর বাইরে দিনব্যাপী এই আয়োজনে দুটি আলোচনা সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যার একটিতে কক্সবাজারের স্থানীয় কমিউনিটি ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওয়াশ (পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা) বিষয়ে। যেখানে এ বিষয়ে বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যত বিষয়গুলো উঠে আসে। দ্বিতীয় আলোচনায় কক্সবাজারের স্থানীয় কমিউনিটি ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিতে করণীয় বিষয়গুলো তুলে আনেন বক্তারা। এছাড়াও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের বিভিন্ন অনুপ্রেরণার গল্প নিয়ে দু’দিনব্যাপী একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীও এই আয়োজনের অংশ হিসেবে রাখা হয়।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।