বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই বৈঠক কেন জানি মনে হয়েছে অনেকের মনে জ্বালা ধরিয়েছে। অনেকেই এটা মেনে নিতে পারছেন না। কেন এই জ্বালা ভাই আপনাদের? আপনাদের উদ্দেশ্য কী?
শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুরে মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে সব সময়ই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে। আমরা কেউই এই চক্রান্তের বাইরে নই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং বিএনপির ১৫-১৬ বছরের এক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি ড. ইউনূস সাহেব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হয়েছেন।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, রজমান মাসে কি নির্বাচনী প্রচারণা করা যায়? তবে ফেব্রুয়ারি এবং মার্চের পর গোটাটাই রমজান থাকবে আর থাকবে ঈদের আয়োজন। আপনি এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে কোথায় প্রচারণা চালাবেন? কখন আইনি প্রক্রিয়া হবে। কখন নমিনেশন পেপার জমা দেবেন? কখন প্রচার চালাবেন? কীভাবে প্রচার চালাবেন? সারাদিন রোজা রেখে কী করে এপ্রিল মাসের মধ্যে নির্বাচন হওয়া সম্ভব? আমাদের এমন একটি সময়, যে সময়ের মধ্যে অন্য কোনো, ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান, ধর্মীয় কোনো উৎপারোক, রোজা-ঈদ থাকবে না, সে সময়টাতেই উপযুক্ত সময় হওয়া উচিত। তাহলে যদি লন্ডনের বৈঠকে এটা হয় যে আমরা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বা প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনটা হবে, তো এর মধ্যে কোনো রমজান নেই, কোরবানির ঈদ নেই, বড় কোনো অনুষ্ঠান নেই, পহেলা বৈশাখ নেই। আবহাওয়া ভালো থাকে, শুকনো মৌসুম, হালকা শীত থাকে। এই সময়ই বরাবরই আন্দোলন সংগ্রাম হয়, এই সময়ই নির্বাচন হয়।
জামায়াতকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, আজকে আমাদের কিছু রাজনৈতিক বন্ধু তারা উষ্মা প্রকাশ করেছেন, লন্ডনের বৈঠককে তারা বলেছেন নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হবে। ভাই আপনাদের ইতিহাসটা বলুন তো দেখি। আপনারা কখন নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। পাকিস্তান আন্দোলনে আপনারা সমর্থন করেননি। আপনারা ৭১ সালে জনগণের বিরোধিতা করেছেন। আপনারা ৮৬ সালে শেখ হাসিনার সাথে নির্বাচন করেছেন। ৯৫ সালে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে হাসিনার সাথে একসাথে আন্দোলন করেছেন। আপনারা এই বার ৫ আগস্টের পর বলেছেন আওয়ামী লীগকে মাফ করে দেব, ভারতের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করব। তাহলে আপনাদের রাজনীতিটা কিসের রাজনীতি? রাজনীত মানেই জনগণের কাছে ওয়াদা, জনগণের কাছে অঙ্গীকার, যেটি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান বারবার বলেছেন এই হাসিনা দুর্বৃত্ত, এই হাসিনা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে, মানুষের কথা বলতে গেলে তার ঠিকানা হয়েছে আয়নাঘরে, তার ঠিকানা হয়েছে পুলিশের অত্যাচার, র্যাবের অত্যাচার তার বিরুদ্ধে শত শত মামলা, তার স্থায়ী ঠিকানা হয়েছে কারাগারে। আপনি সেই আওয়ামী লীগকে মাপ করে দেবেন?
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ