এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের এক আলোচনা সভায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যে, আওয়ামী-হাসিনা সরকারের আমলের নৃশংস গুম-খুনের ঘটনা তখনই মানুষ ভুলতে পারে যখন একই রকম খুন-খারাবি ও পাশবিক আচরণ ‘মজলুমদের’ দ্বারা সংঘটিত হতে থাকবে।
সম্প্রতি পুরোনো ঢাকায় পৈশাচিকভাবে একজন ভাঙারি ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক পক্ষগুলোর প্রতি এই আবেদন জানিয়েছেন।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “প্লিজ আর যা-ই করেন, হাসিনার আমলের গুম-খুনের কথা ভুলিয়ে দেওয়ার মতো নৃশংস আচরণ করবেন না।”
আজ (১২ জুলাই) শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত “ছাত্র-শ্রমিক জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি – বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা” শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
বাবর চৌধুরীর সঞ্চালনায় এবং শেখ আব্দুন নুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. আলী রিয়াজসহ অন্যান্য জাতীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু তার বক্তব্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বর্তমান বিভেদ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
তিনি বলেন, “কয়দিন আগেও আমরা সব রাজনৈতিক দল এক দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, কে ছোট কে বড় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলি নাই। সবাই একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছি। তাহলে আজ কেন এত বিভেদ? আজ কেন আমরা একে অপরের দিকে আঙুল তুলছি?”
তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে, শত্রুর হাতে রক্ত ঝরলে কিংবা নিগৃহীত হয়ে জেলে গেলেই আমরা শুধু ঐক্যবদ্ধ হই, এবং ক্ষুদ্র স্বার্থে বারবার ঐক্যের পর বিরোধে লিপ্ত হই।
বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও দখলবাজির সমালোচনা করে তিনি মন্তব্য করেন, “কোনো সংস্কার দিয়ে আমাদের এই রোগ সারবে বলে মনে হয় না।” ক্ষমতা পেলেই অন্যের অধিকার হরণের প্রবণতা থাকলে কোনো দলের পক্ষেই দেশ পরিবর্তন সম্ভব নয় বলেও তিনি জোর দেন।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, “হাসিনার শাসনামলের পুনরাবৃত্তিই যদি আমরা করি, তাহলে আমাদের সকলকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হবে। জুলাইয়ের শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ কেউ আমাদের ক্ষমা করবে না।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “আমরা জানতাম হাসিনাকে সরাতে একটি গণঅভ্যুত্থান লাগবে, কিন্তু এই গণঅভ্যুত্থান কীভাবে হবে? এর নেতা কে হবে? এটি আমরা জানতাম না।” দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কোনোভাবে আমাদের শত্রুকে সুযোগ দিতে চাই না। আমাদের একে অপরের প্রতি আঙুল তোলা এবং কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করতেই হবে।”
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ