পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সাঙ্কেতিক ভাষায় আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি কেনাবেচা করে। এসএমজি ও একে-৪৭ রাইফেলকে বলা হয় ‘বড় গাছ’, রিভলভারকে বলা হয় ‘ছোট গাছ’ এবং গুলিকে বলা হয় ‘বিচি’।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ভারত-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ৪৯১ কিলোমিটার অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার ও ভারত থেকে অবাধে প্রবেশ করছে ভারী অস্ত্র, মর্টার শেলসহ বিভিন্ন গোলাবারুদ। বর্তমানে প্রায় চার হাজার সশস্ত্র সদস্যের হাতে আছে এসব অস্ত্র।
রাঙ্গামাটিতে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়, বড় অস্ত্রের সাথে একটি বা দু’টি ছোট অস্ত্র বিনামূল্যে দেওয়া হয়। তবে গুলির দাম আলাদা। এসএমজি বা একে-৪৭ রাইফেলের দাম ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। গুলির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি রাউন্ড ১,২০০ টাকা পর্যন্ত।
অস্ত্র চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আগে মিয়ানমার থেকে অস্ত্র বেশি আসত, কিন্তু এখন ভারত হয়ে সহজে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। সব লেনদেন নগদে হয়, ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করা হয় না।
অস্ত্রের অর্ডার আসে হোয়াটসঅ্যাপের মতো এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেই অস্ত্র কেনার অর্থ সংগ্রহ করা হয়। ইউপিডিএফের সাবেক সদস্যদের মতে, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে ১০০ থেকে ২০০ সশস্ত্র সদস্য।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, রাঙ্গামাটিতে চারটি প্রধান অস্ত্র রুট রয়েছে। এগুলো মিয়ানমার ও ভারতের মিজোরাম হয়ে থানচি, ছোটপোতিঘাট, রাইখালী বাজারসহ দুর্গম এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সেনাবাহিনী ৯০টি অস্ত্র ও ৬২৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। বাঘাইছড়িতে সাম্প্রতিক অভিযানে ইউপিডিএফের আস্তানা থেকে একে-৪৭ রাইফেলসহ বিপুল অস্ত্র জব্দ হয়েছে।
ভারতীয় পুলিশও একাধিক অভিযান চালিয়ে এম-১৬, একে-৪৭, গ্রেনেডসহ বিপুল অস্ত্র জব্দ করেছে।
রাঙ্গামাটির এসপি এস এম ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, দুর্গম সীমান্ত পাহারা দেওয়া চ্যালেঞ্জিং হলেও সেনাবাহিনী ও বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
ইউপিডিএফ মুখপাত্র অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী এবং অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা সাজানো।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ