Home রাজনীতি শাপলা-পিলখানার মত নির্মম হত্যাকান্ড জুলাই ঘোষণাপত্রে স্থান পায়নি: সংবাদ সম্মেলনে চরমোনাই পীর

শাপলা-পিলখানার মত নির্মম হত্যাকান্ড জুলাই ঘোষণাপত্রে স্থান পায়নি: সংবাদ সম্মেলনে চরমোনাই পীর

প্রত্যাশিত দিনে জুলাই ঘোষণাপত্র পঠিত হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তবে এতে ইতিহাসের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। চরমোনাই পীর বলেন, পতিত ফ্যাসিস্টের সময়ে শাপলা ও পিলখানার মত নির্মম হত্যাকাণ্ড এবং আলেম-ওলামাদের প্রতি নির্যাতন-নিপীড়নের কথা উল্লেখ না করে ইতিহাসের তাৎপর্যপূর্ণ অংশ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

বুধবার বিকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন। জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে দলটির প্রতিক্রিয়া জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে চরমোনাই পীর বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণার আগে এটা আমরা দেখি নাই। জাতির এত গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল উপস্থাপনার আগে থেকে না জেনে উপস্থিত থেকে তাতে সমর্থন জানাতে হয়েছে এটা আমাদের জন্য বিব্রতকর ছিল।

তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের বিভিন্ন ধারায় হাসিনা ও আওয়ামী অপকর্মের উল্লেখ আছে। ১৭ তম ধারায় জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের উল্লেখ আছে। কিন্তু কোথাও ফ্যাসিবাদের দোসর রাজনৈতিক, সামাজিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক শক্তির উল্লেখ নাই। এটা ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের পথ খুলে দেবে।

আরও পড়তে পারেন-

ঘোষণাপত্রের ধারা ১৯ এ রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট মোকাবিলায় গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রত্যয় ও প্রয়োগের রাজনৈতিক ও আইনি বৈধতা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ধারা ২৫ এ জনতা ও তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আইনের শাসন, মানবাধিকার, দুর্নীতি, শোষণমুক্ত বৈষম্যহীন ও মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ নির্মাণের প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কারকে পরবর্তী জাতীয় সংসদের ওপরে ন্যস্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের মর্যাদা ও সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ধারা ২৭ এ জুলাই অভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতিকে “উপযুক্ত” শব্দ প্রয়োগের মাধ্যমে আপেক্ষিক করে পরবর্তী সরকারের ওপরে ন্যস্ত করে অনিশ্চয়তায় ফেলে দেয়া হয়েছে।

চরমোনাই পীর বলেন, জুলাই সনদ এখনো না হওয়া আমাদেরকে সংস্কার নিয়ে অনিশ্চয়তায় নিক্ষেপ করেছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনীভিত্তি তৈরি করতে হবে এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, পিআর নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই নির্বাচনের মাস নির্ধারণ করা জনদাবীর প্রতি স্পষ্টত উপেক্ষা করা। আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাবো, এই জনদাবির বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কার্যক্রম শুরু করবেন না। একই সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাবো, অতিদ্রুত পিআর নিয়ে অ্যাজেন্ডা নির্ধারণ করে আলোচনা শুরু করুন।

চরমোনাই পীর বলেন, আমরা নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচনের জন্য আমাদের প্রস্তুতিও চলমান। আমরা আশা করি, সরকার আমাদের উদ্বেগ, আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশাকে আমলে নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে। জুলাই সনদ দ্রুত আলোর মুখ দেখবে। পিআর নিয়ে একটি যৌক্তিক সমাধান হবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির মাধ্যমে প্রত্যাশামাফিক আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জুলাই অভ্যুত্থান সার্থকতা পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও মাওলানা ইমতিয়াজ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।