রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) জুলাই ৩৬ হলের ছাত্রীদের ‘যৌনকর্মী’ বলে মন্তব্য করার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতাকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হলের ছাত্রীরা।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হলের সামনে অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষোভকালে ছাত্রীরা ‘ইভটিজারের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘নারীদের বুলিং করে, প্রশাসন কী করে?’, ‘ইভটিজারের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’—এমন নানা স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ থেকে ছাত্রীরা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো, ছাত্রদল নেতা আনিসুর রহমান মিলনকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে, তার মনোনয়ন বাতিল করতে হবে এবং তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। একটি সাইবার বুলিং সেল গঠন করতে হবে। ফেসবুকে জড়িত সব অশালীন মন্তব্যকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসের নারী শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় প্যারিস রোডে একযোগে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। একই সময়ে ‘স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’ এবং ‘সোচ্চার’ নামের দুটি সংগঠনও বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
সোমবার রাত ১১টার পর হলে ফেরায় জুলাই ৩৬ হলের ৯১ জন ছাত্রীকে প্রাধ্যক্ষের অফিসে তলব করে নোটিশ দেয় হল কর্তৃপক্ষ। ওই বিজ্ঞপ্তির একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরের দিন মঙ্গলবার সমালোচনার মুখে হল প্রশাসন নোটিশটি প্রত্যাহার করে নেয়। ফেসবুকে এ-সংক্রান্ত একটি ফটোকার্ডের মন্তব্যের ঘরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হল শাখা ছাত্রদলের সহসভাপতি আনিসুর রহমান মিলনের আইডি থেকে ছাত্রীদের ‘বিনা পারিশ্রমিক যৌনকর্মী’ বলে মন্তব্য করা হয়।
অভিযোগ ওঠার পর বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল আনিসুর রহমানের পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করার কথা জানিয়েছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, বিষয়টি যাচাই ও সঠিক তদন্তের জন্য দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “প্রাথমিকভাবে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, তার আইডি তার নিয়ন্ত্রণে ছিল না। যদি ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়, তবে তাকে আজীবনের জন্য ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শাস্তির জন্য সুপারিশ করা হবে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান জানান, “বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রক্টরিয়াল বডি থেকে ওই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।”
উম্মাহ২৪ডটকম:আইএএ