মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, পাকিস্তানের ২৩ বছরের শাসন থেকে মুক্তির জন্য যদি স্বাধীনতা দিবস থাকে; তাহলে এর চেয়েও বড় আজাদী ব্রিটিশদের থেকে প্রায় পোনে দুইশত বছরের পরাধীনতা থেকে মুক্তির জন্য কোনো দিবস নেই। ব্রিটিশদের থেকে মুক্তির জন্য একটা স্বাধীনতা দিবসের দাবি তোলেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা তিনটায় মাওলানা আব্দুর রহমান সিংকাপনী স্মৃতি সংসদ আয়োজিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, পুরা ভারতবর্ষে ওলামায়ে কেরাম আজাদীর আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানিরা মুসলিম-হিন্দু একত্রিত হয়ে আজাদী আন্দোলন গড়ে তুলেছে। পাকিস্তান থেকে ২৩ বছরের আজাদীকে স্বাধীনতা বলি অথচ ১৯০ বছরের আজাদীকে স্বাধীনতা বা কোন দিবসও নাই। বৃটিশ থেকে স্বাধীন না হলে আওয়ামিলীগ বা বিএনপি কেউ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়া তো দূরের কথা কেউ লেবারেল শিক্ষায় শিক্ষিতও হতে পারত না।
বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যক, দার্শনিক ও গবেষক মূসা আল হাফিজ বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশের জ্বলন্ত মুখপাত্র “আল হেলাল” পত্রিকাকে ব্রিটিশ সরকার বন্ধ করে দিত। সেই “আল হেলাল” পত্রিকার সবচেয়ে ক্ষুরধার লেখক ছিলেন মাওলানা আব্দুর রহমান সিংকাপনী। যখন মুসলিম লীগ তৈরিতে মাওলানা আব্দুর রহমান সিংকাপনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ১৭৮২ সালে মহররম বিদ্রোহ হয়েছিল। নেতৃত্ব দিয়েছিল পীর হাদানিয়া এবং পীর মাদানিয়া। সিলেটের শাহী ঈদগাহে মহররমের দশ তারিখে তলোয়ার নিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে মহররম বিদ্রোহ হয়েছিল। সিলেটের চুনাপাথরের ব্যবসা নিয়ে নবাব মীর কাশিম আলীর সাথে ব্রিটিশদের যুদ্ধের অন্যতম কারণ।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে কয়েকটি স্তর ছিল। এরমধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বাংলা একাডেমির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মাওলানা আব্দুর রহমান সিংকাপনীর লেখার অনুবাদ প্রকাশ করার দাবি করছি। বিশেষ করে গান্ধী, নেহরু, মাওলানা আবুল কালাম আজাদসহ ব্রিটিশ ভারতের তৎকালীন নেতৃবৃন্দের কাছে। তারা সেই চিঠির উত্তরও প্রদান করতেন। এসব চিঠি এবং লেখালেখি উদ্ধার করে বাংলা একাডেমির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ করার দাবি করেন।
মাওলানা আব্দুর রহমান সিংকাপনী স্মৃতি সংসদের সভাপতি কে এম আবু তাহেরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাশেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাসিক মদিনার সম্পাদক আহমদ বদর উদ্দিনসহ প্রমুখ।
উম্মাহ২৪ডটকম:আইএএ