Home মহিলাঙ্গন ইসলামধর্ম গ্রহণকারী ১২ নওমুসলিম নারী যে অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন

ইসলামধর্ম গ্রহণকারী ১২ নওমুসলিম নারী যে অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন

সাদিয়া আহমদ (মনিকা): সৌদির আরবের গুরুত্বপূর্ণ শহর জেদ্দা। জেদ্দার মাওলানা হিফজুর সোহারভি একাডেমিতে বিভিন্ন দেশের ১২ জন নারী ইসলাম গ্রহণ করেন। সেখানে তারা তাদের ইসলাম গ্রহণের বিষয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেন। ইসলাম গ্রহণকারী এ নতুন মুসলিম নারীদের জন্য জেদ্দার মাওলানা হিফজুর রহমান সোহারভি একাডেমি এক সুন্দর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যেখানে তারা নিজেদের কথাগুলো প্রকাশ করেন। -খবর সৌদি গেজেট’র।

ভারত, ব্রিটেন, ফিলিপাইন এবং শ্রীলংকা থেকে বিভিন্ন সময়ে পবিত্র নগরী সৌদি আরবে আসেন এসকল নারী। ইসলাম গ্রহণকারী এসব নওমুসলিম নারী জানান, শান্তি ও নিরাপত্তার জীবন ব্যবস্থা ইসলাম গ্রহণে তাদের অনেক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে হয়েছে। অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে।

এদের মধ্যে দন্তচিকিৎসক একজন। তিনি অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরে আসতে তাকে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে। ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি খ্রিস্টান ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন। শুধু তাই নয়, ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি তার নিজের পল্লীতে একটি গির্জাও নির্মাণ করেন।

জীবনের কোথায় যেন তার অপূর্ণতা রয়েছে। সে অপূর্ণতা থেকেই তিনি ইসলামের শান্তি নিরাপত্তা চাদরে নিজেকে আবৃত করে নেন। ইসলাম গ্রহণকারী আরেক নারীর নাম আয়শা। তার জন্য পবিত্র কুরআনুল কারিমের তেলাওয়াত ছিল রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। সে অভিজ্ঞতার বর্ণনা করতে গিয়ে গভীর আবেগে পড়ে তিনি কাঁদতে থাকেন। যে কারণে তিনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারেননি। এক পর্যায়ে তিনি জানান, সর্বপ্রথম তিনি সুরা ফাতেহা তেলাওয়াত করেছিলেন। যাতে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়।

দীর্ঘ দিন আগে (২০০১) ইসলাম গ্রহণকারী নারী এলিনা। ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি ক্যাথলিক ছিলেন। তার সহকর্মীরা তাকে ইসলাম সম্পর্কে জানার জন্য গাইড দিয়েছিলেন। ইসলামের বিষয়ে পড়াশোনায় তিনি তাকে অনেক বইপত্র সরবরাহ করেছিলেন। অনেক ইসলামি বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ পড়ার পাশাপাশি কুরআনের ইংলিশ ভার্সনে পড়াশোনায় তাকে ইসলামের দিকে ধাবিত করেন। এসব বই ও কুরআন পড়ে তিনি নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, ইসলাম শান্তি ও নিরাপত্তা অনন্য জীবন ব্যবস্থা।

ফাতেমা জয় নামে আরেক নারী ইসলাম গ্রহণ করার পথে অনেক বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। তিনি অনেক দৃঢ়তা ও সাহসিকতা দিয়ে সেসব সমস্যার মোকাবেলা করেছেন। ঈমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। যা মহান আল্লাহর একান্ত রহমত ও সাহায্য ছাড়া সম্ভব হতো না বলেও জানান তিনি।

জেদ্দার এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উম্মে হুদাইফা। তার ইসলাম গ্রহণও ছিল বিশেষ ঘটনাবহুল। কারণ তিনি ইসলাম গ্রহণের আগে বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মের ওপর পড়া শোনা করেছেন। কোনো ধর্মই তাকে শান্তি দিতে পারেনি। সন্তুষ্ট করতে পারেনি তাকে। এরপর উম্মে হুদাইফা যখন ইসলমি বই ও সাহিত্যের দিকে নজর দেন, তখনই তিনি ইসলামের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। আর ইসলামেই পেয়ে যান জীবনের সফলতার মূলমন্ত্র ও দুনিয়ার পরকালের যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত ও ফয়সালা।

২০১৫ সালে সারাবিশ্বে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল প্রায় ২ বিলিয়ন। আর তা সারা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪ ভাগের এক ভাগ। অর্থাৎ প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১জন হলো মুসলিম। আর এতেই ইসলাম ধর্ম অবলম্বনকারীর দ্বিতীয় বৃহৎ জনসংখ্যায় পরিণত হয়।

উল্লেখ্য যে, ইসলাম ৫টি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। যার প্রথমটিই তাওহিদ ও রেসালাতের সাক্ষ্য দেয়ার মাধ্যমে শুরু হয়। ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার জন্য এটি প্রধান এবং প্রথম কাজ। অর্থাৎ- মহান আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, তার কোনো শরিক নেই। আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বশেষ রাসুল।

জেদ্দার সোহারভি একাডেমী সৌদি আরবে দাওয়া কার্যক্রম পরিচালনাসহ নানা সেবামূলক কাজ করে থাকে। প্রতি বছর হজ ও ওমরা পালনকারীদের দিয়ে নানা সেবামূলক কাজ রয়েছে তাদের।

ইসলাম গ্রহণকারী সব নারী-পুরুষের প্রতি রইলো শুভ কামনা। নতুন মুসলিমদের স্পৃহা জাগাতে মাওলানা হিফজুর রহমান সোহারভি একাডেমি হোক সত্যের ঝাণ্ডাবাহী প্রতিষ্ঠান।