Home শীর্ষ সংবাদ বিবাদ-অনৈক্য বাদ দিয়ে ইসলামের দাওয়াত ও মেহনতে ছড়িয়ে পড়ুন

বিবাদ-অনৈক্য বাদ দিয়ে ইসলামের দাওয়াত ও মেহনতে ছড়িয়ে পড়ুন

মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (হাটহাজারী ): হাটহাজারীর চারিয়ায় তাবলীগ জামাতের চট্টগ্রাম আঞ্চলের তিন দিন ব্যাপি আঞ্চলিক ইজতেমার দ্বিতীয় দিনে গতকাল শনিবার বক্তারা বিবাদ, অনৈক্য বাদ দিয়ে মানুষের উপকারার্থে ইসলামের দাওয়াতে মেহনত করার জন্য মুসল্লিদের প্রতি আহবান জানান। আজ রবিবার সকাল ৮টায় হেদায়তি বয়ান শুরু হবে। এর পর সকাল ১০টায় আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ৩ দিন ব্যাপি আঞ্চলিক ইজতেমার এ বড় জমায়েত। দেশী-বিদেশী মেহমানসহ লক্ষ লক্ষ মুসল্লির বিশাল এ জমায়েতে বয়ান শুরু হয় গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে। অসুস্থতাজনিত কারণে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই জন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে ইজতেমাস্থলে।

সুত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার ফজরের নামাজের পর বয়ান শুরু করেন ঢাকার কাকরাইল মারকাজের মুরুব্বি মাওলানা মুফতি আব্দুল বার। তিনি প্রায় ২ ঘন্টা মুসল্লিদের উদ্যেশ্যে বয়ান করেন। এরপর বাদ জোহর বয়ান করেন সৌদি আরব থেকে আসা তাবলিগ জামাতের মুরুব্বি মেহমান। বয়ানে তিনি বিবাদ-অনৈক্য বাদ দিয়ে ইসলামের দাওয়াত ও মেহনতে ছড়িয়ে পড়ার জন্য মুসল্লিদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। শান্তিময় বিশ্ব গড়ার জন্য ইসলামের দাওয়াতকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। বাদ আসর বয়ান করেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ইজতেমার প্রধান জিম্মাদার (শীর্ষ মুরুব্বী) ও হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি জসিম উদ্দিন। তিনি মাগরিব পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বয়ান করেন। এরপর বাদে মাগরিব বয়ান শুরু করেন তাবলিগ জামাতের বাংলাদেশের প্রধান মুরুব্বি ও কাকরাইল মসজিদের খতিব মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ জোবায়ের । মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আল্লাহর প্রতি মানুষ যে ধারণা পোষন করে, আল্লাহ তার প্রতি সে রকম আচরন করেন। আল্লাহ কখনও বান্দার নাফরমানি মেনে নেন না। তিনি বিগত সময়ের আম্বিয়ায়ে কেরামের ঘটনা এবং আল্লাহকে অস্বীকার করার করুণ পরিণতির কথা স্মরণ করে দিয়ে বলেন, এই উম্মত যদি ইসলামের দাওয়াতের মেহনত ছেড়ে দেন, তাহলে তাদেরকেও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে।

হাটহাজারী উপজেলার চারিয়ায় বিশ লক্ষ লোকের জন্যে প্রায় ১৬৫ একর জায়গা জুড়ে টানানো সামিয়ানার নিচে এলাকা ভিত্তিক অবস্থান নিয়েছেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আইন শৃংখলা বাহিনীর বিশেষ তদারকিতে কোন বিশৃংখলা নেই ইজতেমা ময়দানে। পুলিশসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী গত বৃহস্পতিবার থেকে বিভিন্ন স্পটে অবস্থান করে দায়িত্ব পালন শুরু করে। রয়েছে বিদেশী মেহমানদের জন্যে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা । ইজতেমায় অযু গোসলের জন্যে তেরটি ছোট বড় পুকুর, দুই হাজারেরও অধিক ল্যাট্রিন নির্মাণ করা হয়েছে। বিদেশীদের জন্যে আলাদা আধুনিক একশত ল্যাট্রিনসহ থাকার সুব্যবস্থা এবং সার্বিক নিরাপত্তার জন্যে কয়েক স্তরের আইনশৃংখলা বাহিনী ও সি সি ক্যামরা বসানো হয়েছে। হাটহাজারীতে তাবলীগ জামাতের বিশাল এ জমায়েতের প্রধান জিম্মাদারের (শীর্ষ মুরুব্বী) দায়িত্বে আছেন হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি জসিম উদ্দিন।

দুই দিনে দুই জন মুসল্লির মৃত্যু: হাটহাজারী ওলামা পরিষদের নেতা মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জি জানান, গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ৩দিন ব্যাপী ইজতেমায় গত দুই দিনে দুই জন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে অসুস্থ হয়ে ইজতেমা ময়দানে মোঃ ফজল আহমদ (৬৫) নামের এক মুসল্লী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের মৃত আবদুল মজিদের পুত্র। এর আগে ইজতেমা মাঠে স্ট্রোক করে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নিহত হন কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার ধুরং ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সিকদার বাড়ির মৃত মোক্তার আহমদের পুত্র রেজাউল করিম (৬০)।

আখেরী মুনাজাত ও হেদায়তি বয়ান: আজ রবিবার সকাল ৮টায় হেদায়তি বয়ান করবেন তাবলিগ জামাতের কাকরাইল মারকাজের মুরুব্বি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম। হেদায়তি বয়ানের পর সকাল ১০টায় আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে তিন দিনের এ আঞ্চলিক ইজতেমার সমাপ্তি হবে। ইজতেমা শেষে হাজার হাজার মুসল্লি ইসলামের দাওয়াত নিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে যাবেন বলে তাবলীগ জামাত সুত্র জানিয়েছে।