Home রাজনীতি সম্পদ আত্মসাৎ ও লুণ্ঠনকারীদেরকে একদিন জবাবদিহি হতে হবে: আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক

সম্পদ আত্মসাৎ ও লুণ্ঠনকারীদেরকে একদিন জবাবদিহি হতে হবে: আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেছেন, জনগণের টাকা, দেশের সম্পদ আত্মসাৎ ও লুণ্ঠনকারী ডাকাতদেরকে একদিন অবশ্যই জবাবদিহি হতে হবে। অপরাধ করে কেউ চূড়ান্তভাবে নিস্তার পায় না। অপরাধের প্রতিফল অবশ্যই দায়ীদেরকে ভোগ করতে হবে।

গত কয়েকদিন ধরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ এর বিভিন্ন অপকর্ম গণমাধ্যমে প্রকাশ এবং সম্পদ আত্মসাৎ ও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত দায়ী কয়েকজন নেতার গ্রেফতারের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল (২১ সেপ্টেম্বর) শনিবার আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক উপরোক্ত কথাসমূহ বলেন।

তিনি দুর্নীতিবাজ ও সম্পদ আত্মসাৎকারীদের তীব্র সমালোচনা করে আরো বলেন, এগুলো হচ্ছে সাধারণ স্যাম্পল, এখনো দুর্নীতির প্রকৃত ভয়াবহতা এখনো দেখার বাকি।

আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক আরো বলেন, মানুষ এখন ব্যাংকে টাকা রাখতে ভয় পায়। কোথাও টাকা বিনিয়োগ করতেও ভয় পায়। শেয়ারবাজারে আস্থা রাখতে পারছে না। ফলে দেশের অর্থনীতি একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছে। এমন ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সকল দায় সরকারের। আজ সরকারদলীয় লোকেরা শেয়ার-মার্কেট ডাকাতি করে, অন্যায় জবরদখল করে। অর্থনৈতিক লুটপাট, দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে নিজেদের একেকটা অফিস যেন মিনি ব্যাংকে পরিণত হয়েছে। এসব অফিসে প্রতিদিন সরগরম ভাটবাটোয়ারা ও লেনদেনের হিসাব চলে এবং পরিকল্পনা হয় আরো বেশি অর্থ-সম্পদ কীভাবে আয়ত্ব করা যাবে তা নিয়ে। একদিন এসকল অপরাধীদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় জবাবদেহি হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সরকারদলীয় লোকেরা ক্যাসিনোর নামে মসজিদের শহর ঢাকা কে জুয়ার শহর বানিয়ে ফেলেছে। এই সরকার শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং নীতি-নৈতিকতাসহ সব জায়গা থেকে ইসলামের ন্যায়-নীতি ও ইনসাফের শিক্ষাকে মুছে দিয়ে ভোগবাদের আসর বসিয়েছে। নানা চলছাতুরি, প্রতারণা, ধোঁকা, জোর-জবরদস্তি, মিথ্যাচার এবং দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর অর্থ ও অধিকার কেড়ে নিয়ে কিছু দুর্নীতিবাজ সম্পদের পাহাড় গড়ছে। আস্তে আস্তে এসব টাকার কুমিরের খোলস খসতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, যারা অন্যায় করে, সম্পদ আত্মসাৎ করে, মানুষের অধিকার হরণ করে তাদের শেষটা কখনো ভাল হয় না। আল্লাহর পাকড়াও থেকে তারা বাঁচতে পারে না। ইহকালে তাদের জন্য রয়েছে শোচনীয় পরাজয়, জিল্লতি এবং পরকালে আল্লাহর কঠিন আযাব। সুতরাং আমি উদাত্ত আহ্বান জানাবো, যারা এ ধরণের অপকর্মের সাথে জড়িত, সত্ত্বর তাওবা করে সৎ ও ইনসাফের পথে ফিরে আসুন। সম্পদের সুষম বণ্টন ও মানুষের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিন। আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ক্ষমা করে দেন এবং সৎপথে ফিরে আসার সুযোগ করে দেন। কিন্তু অপকর্মে দৃঢ় থাকা ও অন্যায়ের উপর দম্ভকারীদেরকে চূড়ান্তভাবে কখনো ছাড় দেন না। একদিন না একদিন অবশ্যই পাকড়াও করে ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি করেন।

তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মাত্র কয়েকজন নেতার অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদের পাহাড়ের যে চিত্র সামনে এসেছে, তাতে সাধারণ মানুষের হতবিহ্বল অবস্থা। তাহলে শত শত রাঘব বোয়ালের গোপনীয়তা সামনে আসলে কত বড় পাহাড়সম দুর্নীতি যে সামনে আসবে, তা অনুমান করা কঠিন নয়। পাকিস্তানীদের যে লুটপাট ও অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে রক্তাক্ত দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সোনার বাংলা অর্জিত হল, দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বের দাবিদার দলটির হাতেই এখন তার চেয়ে বহুগুণ বেশি শোষণ, জুলুম ও অধিকারহারা হয়ে পড়েছে দেশের মানুষ। -বিজ্ঞপ্তি।