Home ধর্মীয় প্রশ্ন-উত্তর নামাযের নিয়্যাতের জন্য আরবী ভাষা ও মৌখিক উচ্চারণ আবশ্যিক কিনা?

নামাযের নিয়্যাতের জন্য আরবী ভাষা ও মৌখিক উচ্চারণ আবশ্যিক কিনা?

প্রশ্ন: আমাদের এলাকার জনৈক ইমাম সাহেব বলেন যে, নামাযে আরবীতে নিয়্যাত পড়ার কোনই প্রয়োজন নেই। বরং মুখে বাংলায় নিয়্যাত করলেই হয়ে যাবে। কারণ, আমাদের দেশে নামাযের যে নিয়্যাত ‘নাওয়াইতুআন….’ পড়া হয়, সে ধরনের আরবী নিয়্যাত কুরআন হাদীস ও নির্ভরযোগ্য কোন কিতাবে নেই। আসলে কি এমন নিয়্যাতের কোন উল্লেখ নেই- জানালে উপকৃত হব।

– মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-মামুন, হরিনাথপুর, হিজলা, বরিশাল।

জবাব: প্রশ্নোল্লিখিত জনৈক ইমাম সাহেব যা বলেছেন, অবশ্যই সঠিক বলেছেন। কারণ, নিয়্যাতের অর্থ হচ্ছে অন্তরে যা সংকল্প করা হয়, অর্থাৎ নিয়্যাতের সম্পর্ক অন্তরের সাথে। আর এর জন্য মুখে উচ্চারণ করার প্রয়োজনই হয় না। যে কারণে নিয়্যাত করার কথা বলা হয়েছে, নিয়্যাত পড়ার কথা বলা হয়নি।

তদুপরিও যদি কেউ মুখে উচ্চারণ করে, তাহলে তাঁর নিজে বুঝেন এমন ভাষায় উচ্চারণ করাটাই বাস্তব সম্মত। সেখানে আরবী ভাষা ব্যবহার করার কোনই প্রয়োজন নেই। বরং ফিক্বাহশাস্ত্রের কিতাব অধ্যায়নে জানা যায় যে, যদি কেউ নিজের ভাষায়ও নিয়্যাত উচ্চারণ করে, অথচ তাঁর মনের খেয়াল অন্যদিকে, তাহলে তাঁর নিয়্যাত বিশুদ্ধ হবে না এবং এতে নামাযও আদায় হবে না।

পক্ষান্তরে কারও যদি মনের খেয়াল উক্ত নামাযের প্রতি থাকে, যা তিনি আদায় করছেন। কিন্তু মুখে নিয়্যাতের উচ্চারণে ভুল হয়ে যায়, তাহলেও তাঁর নামায সহিহ হয়ে যাবে। তাহলে বুঝা গেল, নিয়্যাতের বেলায় দিলের খেয়ালটাই ধর্তব্য। তাই আমাদের দেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচলিত আরবী নিয়্যাত পরিহার করা চাই। কারণ, এতে অনেকেই ভুল করে থাকেন। তবুও যদি কেউ এ ধরনের আরবী নিয়্যাত অর্থ বুঝে পড়ে থাকেন এবং উক্ত সময় মনের খেয়ালও উক্ত নামাযের দিকে নিবদ্ধ থাকে, তাহলে নামায আদায় হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য যে, সর্বাবস্থায় নামাযীকে তাক্ববীরে তাহরীমাহ ‘আল্লাহু আকবার’ স্পষ্ট উচ্চারণে বলতে হবে। (দুররে মুখতার-১/৬৭ ও ৩৮৬ পৃষ্ঠা)।

জবাব লিখেছেন- মুফতী মনির হোসাইন কাসেমী

ফাযেলে- দারুল উলূম দেওবন্দ (দাওরা ও ইফতা), মুহাদ্দিস ও মুফতি- জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা, ঢাকা এবং উপদেষ্টা সম্পাদক- উম্মাহ ২৪ডটকম।