Home শিক্ষা ও সাহিত্য ছাত্র রাজনীতি নয়, অপরাজনীতি বন্ধ করতে হবে

ছাত্র রাজনীতি নয়, অপরাজনীতি বন্ধ করতে হবে

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড দেশের ছাত্র রাজনীতিকে নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। চলমান ছাত্র রাজনীতির আদৌ প্রয়োজন আছে কিনা, তা নিয়ে চলছে বিতর্ক।

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তানি শাসকদের প্রতিরোধসহ নানা আন্দোলনের সূত্রপাত ছাত্রদের হাত ধরেই। ভাষা আন্দোলন, গণঅভ্যত্থান, মুক্তিযুদ্ধ কিংবা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্ররাই। স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যূদয়ের পরও গুরুত্বপূর্ণ ছিল ছাত্র সমাজ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শাসকরা বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও ৯০ এর আগে সেভাবে সফল হয়নি। এইচ এম এরশাদ সরকারের পতনের পর, ছাত্র রাজনীতিতে শুরু হয় নতুন মেরুকরণ। পরবর্তীতে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতার পালাবদল ঘটলেও পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। ছাত্রদের অধিকার আদায়ের পরিবর্তে ছাত্র সংগঠনগুলো পরিণত হয় লেজুড়বৃত্তিক দল বা লাঠিয়ালে। নিজেদের সুবিধা আদায়, ভিন্নমত দমনসহ নানা কাজে জড়িয়ে পড়ে।

লেজুড়বৃত্তি ও সুবিধাভোগী রাজনীতির সবশেষ বলি বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে তাকে হত্যা করে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতারা। ক্ষোভে ফেটে পড়ে বুয়েটের শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সারাদেশের মানুষ। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে বন্ধ করা হোক ছাত্র রাজনীতি।

তবে, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের যে দাবি করা হচ্ছে, সেটাও একটা রাজনীতি। দেশ, সমাজ, পৃথিবী সম্পর্কে সম্যক ধারণা না নিয়ে শিক্ষার্থীরা শুধু নিজস্ব একাডেমিক জ্ঞান নিয়ে বড় হলে দেশ যোগ্য নাগরিক পাবে না। তাই অপরাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্রমান্বয়ে সুষ্ঠু রাজনীতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। আর কীভাবে শিক্ষার্থীরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে, তাদের মত প্রকাশের অধিকার, মুক্তচিন্তার অধিকার নিশ্চিত করা যায়, তা স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দেখতে হবে। সত্যিকারের মানুষ তৈরির শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথাও বলেন তিনি।

ছাত্র রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করতে এগিয়ে আসতে হবে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোকে, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে। জ্ঞানচর্চা ও গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে। কার্যকর করতে হবে ছাত্র সংসদগুলোকে।