Home বুক রিভউ আমাদের সাহিত্যে কিছু উজ্জ্বল বইপ্রদীপ

আমাদের সাহিত্যে কিছু উজ্জ্বল বইপ্রদীপ

।। রোকন রাশনান লুবান ।।

কিছু ভালো বইয়ের কথা বলবো আজ। বইগুলো মুসা আল হাফিজজাত। বইয়ের বসন্ত যখন এসেছে, বসন্তের সেরা ফুলগুলো চিনিয়ে দেয়া দরকার বৈ কি?

বইমেলা চলছে। নিত্যনতুন বই বের হচ্ছে। মনকাড়া প্রচ্ছদসহ বইয়ের সুগন্ধে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ভরে আছে। পৃথিবীতে বিশুদ্ধ সুন্দর কী, বলুন ত!

শিশু নিষ্পাপ সুন্দর। সঠিক। মায়ের মুখাবয়ব আরো নিটোল সুন্দর। প্রকৃতিতে ফুল, ফল ও পাখি মানুষকে চিরকাল আকৃষ্ট করেছে। এ তালিকা আরো দীর্ঘতর হবে। বিশুদ্ধ আনন্দ ও সুন্দরের মাঝে বই-ও অন্যতম।

বই সুন্দর। বই সুস্থ বিনোদন। বই পরিশুদ্ধ প্রজ্ঞান। আশা করি, ভিন্নমত করবেন না। বইমেলায় অযুত অযুত বই। প্রতিবছর বইমেলায় হাজার হাজার বই বের হয়। বইমেলা ছাড়াও সারাবছর অসংখ্য বই ছাপাখানা থেকে বের হয়।

এখন মুশকিল হল, এতো এতো বইয়ের নীহারিকা ঘেঁটে প্রয়োজনীয় বই বের করা। বইমেলা ত লাইব্রেরির সভা। এখানে আমার জরুরি বই বাছাই করা কঠিন। আপনার উপকারী বই চয়ন করা দুঃসহ জ্বালা। বই ত ভালো জিনিশ। তাই বলে, সব বই স্তূপাকার করে কিনলে, ফায়দা হবে? আর্থিক সীমাবদ্ধতা আছে।

পুরো পৃথিবীতে কোটি বই আছে। সব দশ জনমে পড়ে, শেষ করা অসম্ভব। এজন্য জেনে বুঝে ও প্লান করে বই খরিদ করতে হয়। প্রয়োজন ও আয়োজনের সাথে মিলিয়ে বই সংগ্রহ করতে হয়। সব বইয়ে জ্ঞান থাকে। কিছু বইয়ে অপজ্ঞানও থাকে। বই মানুষকে বিশুদ্ধ করে। আবার বই মানুষকে অশুদ্ধও করে। একটা ভালো বই আমাদের জীবনপথ সোনালি আলোয় নিয়ে যেতে পারে। আউজুবিল্লাহ, বই মানুষকে বিভ্রান্ত ও বৃন্তচ্যুতও করতে পারে।

এসব কারণে খুব ভাবনা চিন্তা করে বইয়ের মার্কেটে যেতে হয়। অত্যন্ত প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে লিস্টকৃত বই কিনতে হয়। নইলে, বইয়ের সরগরম হল্লায় আমরা পাগল হয়ে যাব। ভালো বই অফুরান সম্ভাবনার দোয়ার খুলে দেয়। গার্বেজ বই বইয়ের রুচি পর্যন্ত নষ্ট করে।

আমরা লেখক ও প্রকাশনী দেখে বই কিনি। এটা ভালো লক্ষণ। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র খারাপ বই ছাপে না। এজন্য তা কিনি। সৈয়দ মুজতবা আলি পচা লিখেন না। তাই তাঁর সব বইপত্র মুখস্থ কেনা যায়। তবে, হুমায়ূন আজাদ ও আহমেদের সব বই মানসম্মত ও ভাবসংযত নয়। তাদের বই কারো পরামর্শে ও শর্তাধীন কিনতে হয় ও পড়তে হয়।

আমরা মেলা ও বইঘরে খুঁটেখুঁটে বই উল্টেপাল্টে বই কিনতে পারি। তবে, তাতে সমঝদার ও রুচিবান পাঠক হতে হবে। আমরা বেশিরভাগ মানুষ বিদগ্ধ পাঠক নই। আমাদের উচিত, বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞদের পরামর্শে বই কেনা। নাহয়, আজেবাজে বইয়ে আমাদের সময়, কড়ি ও শ্রম গোল্লায় যাবে। আপনি আমার আবেগ বুঝবেন, সেই প্রত্যাশা রাখছি। আমি পাঠকও না।

এলেবেলে পড়াকে পাঠ বলা অনুচিত। বইয়ের খবর রাখার পাগলামি আছে। আলহামদুলিল্লাহ্। আপনি অবাক হবেন, হাস্যকর হল, আমার কিছু আপনজন আমার কাছে ভালো ও উপকারী বইয়ের তালিকা চান। এজন্য আমি লজ্জিত ও অনুতপ্ত। তাদেরকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। বই ও ভালো বইয়ের লিস্টি করার নিদেন যোগ্যতা আমার নেই। তবু, তাদের ভালোবাসার প্রতিভালোবাসা হিসেবে, কিছু বইয়ের সুন্দর নাম উল্লেখ করব। এসব বই উপকারী উপকরণ হবে, ইনশাআল্লাহ।

বইমেলা চলছে। তাই কিছু লেখকজনের বইয়ের সরণি দিব। এখন একজন লেখকের কিছু বইয়ের লিস্ট দিচ্ছি। এই সাহিত্যিককে আপনি চিনেন। মুসা আল হাফিজ। তিনি অনেক কিছু। তাঁর পরিচিতি দেওয়ার দরকার হয় না। শক্তিশালী লেখক ও সর্বগুণান্বিত সাহিত্যিক। তাঁর যেকোন লেখায় সত্য, সুন্দর ও সাহিত্য রসের একটা আপ্লুত আপ্লাবন থাকে। তাঁর সাহিত্য বিচ্ছুরণ আপনাকে ও সকলকে হিরণ শিহরণের ছোঁয়াচ সুখে আস্বাদিত করবে। তাঁর সম্পর্কে কোন শ্লাঘা নিষ্প্রয়োজন। তিনি স্বমহিমা ও স্বসুষমায় সমুজ্জ্বল।

এখানে তাঁর সাড়া জাগানো ও তুমুল জনপ্রিয় বইয়ের সংক্ষিপ্ত লিস্ট লিখছি-

১. পৃথিবী ঘরে ফিরো ( পরিবেশক পায়রা। স্টল নম্বর, ৬১৮ সোহওয়ার্দি উদ্যান ) ২. দুধের নদী, ৩. মহাকালের মধু ( প্রকাশক চৈতন্য, স্টল নম্বর ৬০৪-৬০৫ সোহওয়ার্দি উদ্যান ) ৪. তৃতীয় সহস্রাব্দের কিয়ামত, ৫. মরমী মহারাজ, ৬. মহাসত্যের বাঁশি, ৭. মহাকাব্যের কোকিল ( প্রকাশক ঝিঙেফুল, স্টল নম্বর ৫০৯-৫১০ সোহওয়ার্দি উদ্যান ) ৮. কানমলা, ( ছড়া) ৯. থাপ্পড় ( ছড়া)। বইগুলো পাবেন- মেলার ৬৩৭ নম্বর স্টল, প্রকাশক বলাকা, সোহরাওয়ার্দি উদ্যান। এসব বই সত্যস্নাত। সুন্দরভেজা। ভালোবাসাস্নিগ্ধ। ও সাহিত্যনিমিশ্ল।

এই বইগুচ্ছ আপনাকে সাহিত্যের সুধা সুখের পরিতৃপ্তি দিবে। লেখালেখি ও ভাবাভাবির এক অমল জোছনাও আপনি এসব বইয়ের পত্রপুষ্পে পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।