Home ইসলাম মুসলমানদের মাঝে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা

মুসলমানদের মাঝে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা

।। নওশেদ আলম ।।

দুনিয়ায় ইসলামের আগমণ ঘটেছে ঐক্যের পয়গাম নিয়ে। অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলার আবর্তে গোটা মানবজাতি যখন পর্যুদস্ত তখন ইসলামই মুসলমানদের আদেশ দিয়েছে তোমরা আল্লাহর রশিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরো! আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদেরকে সর্বক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ থাকতে আদেশ করেছেন।

মুসলমানদের মাঝে ঐক্যতা এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা ছাড়া মানুষ তার উদ্দেষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম না। ঐক্যতা মহান আল্লহর এক বড় নিয়ামত এবং খোদা প্রদত্ত অনেক বড় দান।

আল্লাহ তায়ালা বলেন- তোমরা স্মরণ করো তোমাদের উপর আল্লাহর অনুগ্রহ, যথা তোমরা ছিলে পরস্পর শত্রু তারপর তিনি তোমাদের হৃদয়ে সম্প্রীতি ঘটালেন কাজেই তার অনুগ্রহে তোমরা হলে ভাই-ভাই। (আলে ইমরান ১০৩)।

আল্লাহ তায়ালা যেমনিভাবে তার রশি শক্তভাবে আঁকড়ে ধরতে আদেশ করেছেন তেমনিভাবে মতানৈক্য এবং পরস্পর ঝগড়া করা থেকে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন তোমরা বিবাদে লিপ্ত হয়ো না। (সূরা আনফাল- ৪৬)।

রাসূল (সা.) বিচ্ছিন্ন থাকা ব্যক্তির ব্যাপারে কঠিন হুশিয়ার বাণী উচ্চারণ করে বলেন- যে তার দল থেকে বের হয়ে যায় সে তার গলা থেকে ইসলামের বাঁধনকে খুলে ফেলে।

মতানৈক্য এবং বিচ্ছিন্নতা জাতির ধ্বংসের কারণ। পূর্বের উম্মতরা যখন ঐক্যবদ্ধ ছিল তখন তারা সম্মানীত এবং মর্যাদাবান ছিল। কিন্তু যখন তারা মতানৈক্যে লিপ্ত হলো তখন তারা ধ্বংসে পতিত হলো এবং তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হলো লাঞ্ছনা, দারিদ্রতা এবং বিভিন্ন বিপদ-আপদ। মুসলমানদের জন্য মতানৈক্য এবং বিচ্ছিন্নতা থেকে দূরে থেকে ঐক্যবদ্ধ থাকা আবশ্যক। যখন তারা ঐক্যবদ্ধ থাকবে তখন ইসলামের শত্রুরা সহজে তাদের উপর আক্রমণ করতে পারবে না। একটি ডালকে সহজে ভেঙ্গে পেলা যায় কিন্তু কয়েকটি ডালের সমষ্টিকে সহজে ভেঙ্গে ফেলা সম্ভব হয় না।

একটি জাতি মর্যাদাবান এবং সৌভাগ্যবান হওয়ার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো ঐক্যতা। যেটা হবে একটি শরীরের মত। তার কোন এক অঙ্গ আক্রান্ত হলে বাকি অঙ্গগুলোও আক্রান্ত হবে। এব্যাপারে রাসূল সা: বলেন- ভালোবাসা,অনুগ্রহ এবং দয়ার ক্ষেত্রে মুমিনদের দৃষ্টান্ত হলো একটি শরীরের মত যখন তার একটি অঙ্গ আক্রান্ত হয় তখন বাকি অঙ্গগুলোও আক্রান্ত হয়ে যায়।

মুসলমানদের জন্য পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ এবং পরনিন্দা পরিহার করে ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা, সমতা, সহোযোগিতা এবং ঐক্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী।

যখন মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ থাকবে, তখন তারা আল্লাহর সাহায্য প্রাপ্ত হবে এবং সফলতা তাদের পদচুম্বন করবে, ইনশাআল্লাহ।

লেখক: ছাত্র- আরবী সাহিত্য বিভাগ, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা, ঢাকা।