Home মহিলাঙ্গন ইসলামের মত একটি সমৃদ্ধ ও যুক্তিভিত্তিক ধর্ম আর কোনোটি নেই: রাণী এলিজাবেথ

ইসলামের মত একটি সমৃদ্ধ ও যুক্তিভিত্তিক ধর্ম আর কোনোটি নেই: রাণী এলিজাবেথ

মিলি সুলতানা: একবার ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ আবুধাবি সফরে গিয়েছিলেন। বলা বাহুল্য ইসলাম ধর্মের প্রতি রানীর দুর্বলতার কথা বেশ প্রচলিত। তিনি আবুধাবির কিছু বিখ্যাত স্থাপনা দর্শন করেছিলেন। তার মধ্যে আবুধাবির বিখ্যাত শেখ জায়েদ গ্র‍্যান্ড মসজিদ। মসজিদটি দেখে রানী এলিজাবেথ মুগ্ধ হয়ে পড়েছিলেন।

আবুধাবির প্র‍য়াত রাষ্ট্রপ্রধান শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাইয়ানের নামানুসারে এই মসজিদের নামকরণ করা হয়।

শেখ জায়েদ গ্র‍্যান্ড মসজিদে ঢুকে রানীর চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। সর্বপ্রথমে রানী এগিয়ে গেলেন পবিত্র কোরআর শরীফ তিলাওয়াতরত বাচ্চাদের দিকে। তিনি কিছু সময় বাচ্চাদের পাশে ফ্লোরে বসেছিলেন।

রানীকে ফ্লোরে বসতে দেখে সবাই অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। একটা বাচ্চা সুরা আর রাহমান তেলাওয়াত করছিল। রানীর কৌতুহল গিয়ে ঠেকলো সুরা আর রাহমানের “ফাবিআইয়ি আ’লায়ি রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান” আয়াতের দিকে।

আরও পড়তে পারেন-

ওয়েব সিরিজের নামে নোংরামি ও নগ্নপনার চর্চা বন্ধ করুন

গীবত ও পরনিন্দার ভয়াবহ পরিণতি এবং শরয়ী বিধান

রাসূলুল্লাহ (সা.)এর দাম্পত্য জীবনে খাদিজা (রাযি.)এর ভূমিকা

এশিয়ায় ইসলামফোবিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ‘ভারত’

বিদেশনীতিতে প্রবল ধাক্কা খেল ভারত

কেন বার বার এই লাইন উচ্চারিত হচ্ছে রানী জানতে চাইলেন। তাঁকে বুঝিয়ে দেয়া হল-”অতএব, তোমরা উভয়ে তথা জিন ও ইনসান তোমাদের পালনকর্তার কোন্ কোন‌্ অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে?” এখানে বার বার সৃষ্টিকর্তার মহিমান্বিত অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রকাশ ঘটেছে। অর্থ জেনে রানী খুশি হলেন।

যে মেয়ে সুরাটি পাঠ করছিলো রানী তার গলায় পরিয়ে দিলেন নিজের গলায় ব্যবহৃত রুবি হীরা মুক্তার রাজকীয় হার। বাকি বাচ্চাদের তিনি পাউন্ড দিয়ে পুরস্কৃত করলেন।

শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ, আরব-আমিরাতের সবচেয়ে বড় মসজিদ। এমনকি এটি পৃথিবীর অষ্টম বৃহত্তম ও সুন্দরতম মসজিদ। মসজিদের ধারণ ক্ষমতা ৪০,০০০ হাজারের বেশি। এটি নির্মাণ কাজে ব্যয় হয়েছে ২ বিলিয়ন দিরহাম (৫৪৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার)।

মসজিদ নির্মাণে আরবের ২০০ বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও শিল্পচর্চার নমুনা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। মার্বেল পাথর, সোনা, আধা মূল্যবান পাথর, স্ফটিক ও মৃৎশিল্পের বিভিন্ন উপকরন ব্যবহার করা হয়েছে। জুম্মা ও ঈদের সময় দেড় থেকে দুই লাখ মুসল্লি এই মসজিদে নামাজ আদায় করেন।

মসজিদ পরিদর্শনের একপর্যায়ে রানী এলিজাবেথ থমকে দাঁড়ান ফ্লোরে বিছানো অপরূপ সুন্দর গালিচা এবং সিলিংয়ে ঝুলানো ঝাড়বাতি দেখে। মুগ্ধতায় তাঁর চোখজোড়া বন্ধ হয়ে আসে। ইরানের বিখ্যাত কার্পেট কোম্পানির কার্পেট দিয়ে ফ্লোর সুসজ্জিত করা হয়েছে।

বিখ্যাত ইরানী শিল্পী মোহাম্মদ আলী খালিদির ডিজাইন করা বিশ্বের বৃহত্তম গালিচা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই কার্পেটের দৈর্ঘ্য ৬০৫৭০ বর্গ ফুট, ওজন ৩৫ টন। ইরান এবং নিউজিল্যান্ডের উল দিয়ে বোনা হয়েছে এই গালিচা। এটি বানাতে সময় লেগেছিল দুইবছর।

স্ফটিক স্বচ্ছ লক্ষ লক্ষ পাথরের তৈরি পৃথিবীর বৃহত্তম ঝাড়বাতিটি এই মসজিদে। জার্মানির তৈরি তৃতীয় বৃহত্তম ঝাড়বাতি এটি।

রানী এলিজাবেথ শেখ জায়েদ গ্র‍্যান্ড মসজিদ পরিদর্শন শেষে মন্তব্য করেন, “ইসলাম শান্তি এবং গৌরবের ধর্ম। ইসলামের মত একটি সমৃদ্ধ ও যুক্তিভিত্তিক ধর্ম আর কোনোটি নেই। আমি ইসলামি জ্ঞান আহরণের চেষ্টা করবো।”

উম্মাহ২৪ডটকম:এমএমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।