Home সম্পাদকীয় গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ

গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ

মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে। ১লা সেপ্টেম্বর থেকে সব আসনে যাত্রী তোলার প্রথম দিনেই উপেক্ষিত হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি। সেই থেকে এমন অনিয়ম বেড়েই চলেছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে পরিবেশিত খবরে দেখা যাচ্ছে, শুধু রাজধানী ঢাকায়ই নয় বাইরেও প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ শহরের বাসভাড়া নির্দিষ্ট হারে নেয়া হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়েছে চরম উদাসীনতা। বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলেও তা ছিল কম।

দেশে করোনা সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে টানা ৬৬ দিন গণপরিবহন বন্ধ ছিল। পয়লা জুন থেকে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার শর্তে বাস চলাচলের সুযোগ দেয় সরকার। বাসমালিকদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ভাড়া বাড়ানো হয় ৬০ শতাংশ। ফলে যাত্রীদের ওপর চাপ পড়ে। প্রতিটি আসনে যাত্রী বহন করায় এখন আগের ভাড়া নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এটি মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, স্বাস্থ্যবিধি যদি প্রথম দিনের মতো উপেক্ষিত হতে থাকে, তাহলে দেশে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে বৈ কমবে না।

দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে গেছে; এমন ভাবার কোনো অবকাশ নেই। প্রতিদিনই এখনো আক্রান্তের ও মৃত্যুর সংখ্যা যা দেখা যাচ্ছে, তাতে উদ্বেগমুক্ত থাকার উপায় নেই।

আরও পড়তে পারেন-

সরকার পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে ‘যত আসন তত যাত্রী’ নিয়মে বাস চলাচলের সুযোগ দিয়েছে। তবে শর্ত থাকে, রাজধানী ঢাকা, দূরপাল্লার বাস ও সারা দেশের কোথাও বাস-মিনিবাসে আসনের অতিরিক্ত যাত্রী না তোলা, যাত্রী ও পরিবহন-শ্রমিকদের মাস্ক ব্যবহার এবং তাদের হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান-পানি ও জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা রাখা। যাত্রা শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা ও জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা এবং যাত্রীদের হাতব্যাগ ও মালপত্র জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখার কথাও বলা হয়েছিল।

কিন্তু রাজধানীতে চলাচলকারী বাসে জীবাণুনাশক না ছিটিয়েই যাত্রা শুরু করেছে। বাসের ভেতর জীবাণুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকার কথা। বাস্তবতা হলো- ঢাকায় প্রায় কোনো বাসেই এ ধরনের ব্যবস্থা ছিল না। কিছু বাসের দরজার সামনে শুধু ব্লিচিং পাউডারমিশ্রিত ভেজা চট বিছিয়ে রাখা হয়। আর পরিবহন শ্রমিকদের বেশির ভাগের মুখে ছিল না মাস্ক। সচেতনতা লক্ষ্য করা যায়নি যাত্রীদের মধ্যেও। রাজধানীতেই যদি এ অবস্থা হয়, অন্য শহরগুলোর কথা না বলাই ভালো।

গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি কেবল কাগজপত্রে, বাস্তবে এর প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থাতেও সরকারের তরফ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। আর না মানার বিষয়ে বলা হয়েছে- মানুষের নিজের স্বার্থেই স্বাস্থ্যবিধি মানা উচিত।

আমরা মনে করি, এখনই গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রশাসনিক ও ব্যক্তি উদ্যোগ এবং সচেতনতা তৈরি করা না হলে, দিন দিন যাত্রী ও মানুষের উপস্থিতি যত বাড়তে থাকবে, পরিস্থতি অনেক নাজুক হয়ে পড়তে পারে। তাই শুরু থেকেই সতর্ক হওয়া জরুরি। যাতে যাত্রীবাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে কোনো শিথিলতা না আসে।

এ ক্ষেত্রে যাত্রা শুরুর আগে ও শেষে গণপরিবহনে জীবাণুনাশক ছিটানোর দায়িত্ব সরকার নিতে পারে। একই সাথে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে গণপরিবহনে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি সরকারি-বেসকারী গণমাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরিতে প্রচারণা চালাতে হবে।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।