Home ইসলাম তিব্বতে ইসলাম: পৃথিবীর অন্যতম উঁচু মসজিদ রয়েছে লাসা শহরে

তিব্বতে ইসলাম: পৃথিবীর অন্যতম উঁচু মসজিদ রয়েছে লাসা শহরে

তিব্বতে ইসলাম ধর্ম যে থাকতে পারে, সেটা চট করে কারোরই চিন্তায় আসে না। রহস্যময় পাহাড়ে ঘেরা তিব্বতের কথা উঠলেই সকলে প্রথমে ভাবে বৌদ্ধধর্মের কথা। কিন্তু আদতে তা নয়। প্রায় ১০০০ বছর আগে তিব্বতের পাহাড় ঘেরা অঞ্চলে পা রেখেছিল ইসলাম। তার নিদর্শন এখনও খুঁজে পাওয়া যায় বিখ্যাত লাসা শহরে।

তিব্বতে ইসলাম ধর্মের সূচনা

ঐতিহাসিকদের মতে, তিব্বতে মোট ছয়টি মসজিদ ও মাদ্রাসা রয়েছে। তার মধ্যে চারটি মসজিদই লাসা শহরে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, আরব ও তার চারপাশের অঞ্চল থেকে মুসলমান বণিকরা তিব্বতে বাণিজ্য করতে এসেছিল। অষ্টম শতকে বিখ্যাত ‘সিল্ক রুট’ -এর মাধ্যমেই তিব্বতে এসেছিল তারা। তিব্বতে ইসলাম ধর্ম পা রাখে এভাবেই।

এরপর, একাদশ শতকে দক্ষিণ তিব্বতের বহু মানুষ ইসলামের অনুরাগী হয়ে পড়ে। বিশেষত কাশ্মীরে ছোট ছোট মুসলমান জনপদের সূচনা হয়। এরফলে, তিব্বতের রাজধানী লাসা শহরে মুসলমান বণিকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। দ্বাদশ শতকে লাদাখ ও কাশ্মীর থেকে এক মুসলমান বণিকদের এক বৃহৎ দল এসে লাসাতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করে।

আরও পড়তে পারেন-

এই বণিকদের মধ্যে অনেকেই তিব্বতি রমণীদের প্রতি অনুরক্ত হয়ে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়েছিল। এর ফলে, তিব্বতিদের মধ্যেও ধীরে ধীরে ইসলাম ধর্মের প্রসার শুরু হয়।

সমাজবিজ্ঞানী ও ঐতিহাসিকরা জানিয়েছেন, তিব্বতে ইসলামের ভিত্তি মূলত আরব বণিকদের সঙ্গে বৈবাহিক ও সামাজিক সম্পর্কের মাধ্যমেই স্থাপিত। তবে, বেশিরভাগ মুসলমান জনপদ স্থাপিত হয়েছিল লাসাতেই।

তিব্বতিরা মুসলমানদের বলত “খা চে”, তিব্বতি ভাষার এই সম্বোধনের অর্থ ইসলামের উপাসক।

লাসাতে অবস্থিত পৃথিবীর উচ্চতম মসজিদ

যেহেতু লাসাতেই সবচেয়ে বেশি মুসলমান জনপদ দেখা যায়, তাই সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদের খোঁজ মেলে এই শহরেই। এটি আবার পৃথিবীর অন্যতম উঁচু মসজিদ। সমুদ্রতল থেকে প্রায় ৩৬৫০ মিটার উঁচু এই মসজিদে রয়েছে তিব্বতে ইসলাম ধর্মের ইতিহাস।

১৭১৬ অব্দে তিব্বতের কুইং সাম্রাজ্যের সম্রাট কাংচিইর সময় এই মসজিদটি তৈরি হয়। লাসা শহর থেকে একটু দূরে, চেনগুয়ান জেলার হেবালিন অঞ্চলে এই মসজিদের অবস্থান। তিব্বতে ইসলাম ধর্মের অন্যতম নিদর্শন ধরা হয় এই মসজিদকে।

প্রাথমিকভাবে মসজিদটির আয়তন ছিল ২০০ বর্গমিটার। কিন্তু ১৭৯৩ অব্দে, মুসলমান জনপদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেলে এটির আকার আরও বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে এটির আয়তন প্রায় ২৬০০ বর্গমিটার। শুধু তাই নয়, মসজিদের চারদিকে অপূর্ব সুন্দর বাগান স্থানটির পবিত্রতা বৃদ্ধি করে। মসজিদটিতে তিনদিক দিয়ে প্রবেশের পথ রয়েছে। প্রত্যেকটি পথে আল্লাহর বাণী সুন্দর ক্যালিগ্রাফিতে লেখা রয়েছে। এই বাগান সহ প্রবেশ পথের আয়তনই প্রায় ১৩০০ বর্গমিটার। বিখ্যাত তিব্বতিয় ইয়াং স্থাপত্য কৌশলেই মূলত এই মসজিদটি গঠিত।

আমাদের প্রিয় নবী রাসুল(সাঃ) চেয়েছিলেন আমরা আমাদের পবিত্র ধর্মের শান্তির বাণী দিকে দিকে ছড়িয়ে দিই। তিব্বতে ইসলাম ধর্মের এই নিদর্শন প্রমাণ করে যে আমরা আমাদের নবীর দেখানো পথে সঠিকভাবেই এগিয়ে চলেছি।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।