Home ইসলাম বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে মুসলমানদের রোযায় মানবদেহের জন্য বহুবিদ উপকার বিদ্যমান

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে মুসলমানদের রোযায় মানবদেহের জন্য বহুবিদ উপকার বিদ্যমান

ছবি- সংগৃহীত।

।। মোশাররফ মাহমুদ ইসলাম ।।

ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত কল্যাণকর ও পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাই এতে রয়েছে মানবজাতির পরিপূর্ণ কল্যাণ ও স্বাস্থ্যনীতির সমাহার। ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত। আর রোযা ইসলামের এই পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম একটি স্তম্ভ।

আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক সক্ষম ঈমানদারের উপর রমযানের রোযা ফরয করেছেন। মানুষকে নিছক বা অযথা কষ্ট দেওয়া জন্য রমযানের উপবাস তথা রোযাকে ফরয করেননি। বরং এই রোযা পালনের মধ্যে রয়েছে মানবজাতির নানাবিধ কল্যাণ ও মঙ্গল।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র আল কুরআনে বলেছেন, তোমরা রোযা রাখো। এতে তোমাদের জন্য রয়েছে নানাবিধ কল্যাণ। যদি তোমরা বুঝতে সক্ষম হও। (সূরা বাকারা)।

বিশ্ববিখ্যাত আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম স্তম্ভ “রোযা” নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন এবং তাদের থিউরি ও গবেষণা বিশ্লেষণগুলো প্রকাশ করেছেন।

কায়রো থেকে প্রকাশিত science for fasting একদল চিকিৎসা বিজ্ঞানীর মূল্যবান গবেষণা সংকলন গ্রন্থ। পাশ্চাত্যের এই প্রখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এক বাক্যে এ কথা স্বীকার করে বলেছেন, the power and endurance of the body under fasting conditions are remarkable; After a fast properly taken the body is literally bom afresh. অর্থাৎ- রোযা রাখা অবস্থায় শরীরের সক্ষমতা ও সহ্যশক্তি ও ধর্যশক্তি (দেহের সাথে ) ভার্সাম্যপূর্ণ। সঠিকভাবে রোযা পালনের পর শরীরে প্রকৃতপক্ষে নতুন প্রাণ ও সজীবতা লাভ করে।

আরও পড়তে পারেন-

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলেন, রোযা একই সাথে দেহের রোগ প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। রোযা পালনের ফলে দেহে রোগজীবানুবর্ধক জীর্ণ অস্ত্রগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। মানুষের দেহে এক প্রকার ইউরিক এসিড থাকে। যার দেহে ইউরিক এসিড যত বেশি তার দেহে ততবেশি রোগ সৃষ্টি হয়। আর রোযার মাধ্যমে মানুষের দেহের ইউরিক এসিড কমে আসে। বাঁধা প্রপ্ত হয়। যার ফলে নার্ভ সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। রোযাদারের দেহে পানির পরিমান হ্রাস পাওয়ার কারণে চর্মরোগ সৃষ্টি হওয়া থেকে বেঁচে থাকে।

পাশ্চাত্যের বিখ্যাত এক চিকিৎসাবিধ বলেন, খাবারের উপাদান থেকে সারা বছর ধরে মানুষের শরীরে জমে থাকা কতিপয় বিষাক্ত পদার্থ ( যা চিকিৎসাবিধদের ভাষায় বলা হয় “টক্সিন” ) চর্বি ও আবর্জনা জমে থাকে। এগুলো দূর করার একমাত্র সহজ ও স্বাভাবিক উপায় হচ্ছে রোযা রাখা।

রোজা কিডনি ও লিভারের কর্মক্ষমতা ও সচলতা বৃদ্ধি করে। শরীরে এনে দেয় এক নতুন জীবনীশক্তি ও নতুন সজীবতা।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আরো বলেন, রোযা মানুষের মানসিক উৎসর্ষতা বৃদ্ধি করে, অনুভূতিশক্তি, স্মরণশক্তি, মনোযোগশক্তি বৃদ্ধি করে। প্রীতি-ভালোবাসা, অতীন্দ্রিয়, সুখানুভূতি ও আধ্যঅত্মিতার উন্মেষ ঘটে। ঘ্রাণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি বেড়ে যায়। রোযা খাদ্যের অরুচি ও অনিহা দূর করে। রক্তের পরিশোধনে দেহে প্রকৃতপক্ষে জীবনীশক্তি লাভ করে। রোযা মনস্তাত্ত্বিক ও মস্তিষ্কের রোগ নির্মূল করে। একজন ব্যক্তি যত বেশি রোযা রাখবে, তার ততবেশি বুদ্ধি ও মেধাশক্তি প্রখর হবে। রোযার মাধ্যমে শরীরের বিশেষ অঙ্গগুলো শক্তিশালী হয়।

রোযা রাখার ফলে যে সমস্ত রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক তৈরি হয়, তার মধ্যে চর্ম, ডাইবেটিক্স, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাষ্ট্রিক, আলসার, মেদ -ভুড়ি, কোলেষ্টবল, শ্রেষ্মা, কফজনিত রোগ ইত্যাদি অন্যতম। জার্মানির বিখ্যাত এক ক্লিনিকের গেইটে লেখা আছে, “রোযা রাখ, স্থাস্থ্যবান হবে”।

লেখক: তরুণ আলেম, ফারেগ- জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা, ঢাকা।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।