Home ইসলাম ওয়াযাহাতি জোড়ে উলামায়ে কেরামের ইজমায়ী সিদ্ধান্ত মেনে চলাতেই কল্যাণ: মুফতী জাকির হোসাইন...

ওয়াযাহাতি জোড়ে উলামায়ে কেরামের ইজমায়ী সিদ্ধান্ত মেনে চলাতেই কল্যাণ: মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী

– মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী। ছবি- উম্মাহ।

মাওলানা সাদ কেন্দ্রিক তাবলীগ জমাতের চলমান সংকট নিরসনে গত ২৮ জুলাই শনিবার সকাল ৮টা থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশেষ ওয়াযাহাতি জোড়। এতে দাওয়াত ও তাবলীগের জিম্মাদার ও সাথীগণসহ শরীক হয়েছেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা উলামা-মাশায়েখগণ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উলামায়ে কেরামের মুরুব্বী হেফাজত আমীর ও দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী। ‍মাওলানা সাদ কেন্দ্রিক চলমান সংকট নিরসনে সর্বসম্মতিক্রমে উলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে ওয়াযাহাতি জোড়ে নেয়া হয়েছে ছয় সিদ্ধান্ত।

ওয়াযাহাতি জোড়ে গৃহীত এই ৬ সিদ্ধান্তকে যুগান্তকারী উল্লেখ করে চলমান বিরোধ নিরসন ও ঐক্য প্রতিষ্ঠায় সকলকে মেনে চলার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার মুহাদ্দিস, উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে পরিচালিত প্রাচীন ইসলামিক রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় অর্থসম্পাদক ও টঙ্গী তিস্তা গেট জামে মসজিদের খতীব মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী।

তিনি বলেন, ওয়াযাহাতি জোড় থেকে যেসকল সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে, সেটা ইজমায়ী সিদ্ধান্ত। ইজমায়ে উম্মাহ হওয়ার জন্য যেসকল শর্তাবলীর উপস্থিতি জরুরী, তার সবই মুহাম্মদপুরের ওয়াযাহাতি ইজতেমায় পাওয়া গেছে। সুতরাং এই জোড়ের সকল সিদ্ধান্ত ইজমায়ে উম্মাহর সিদ্ধান্ত বলেই আমাদের সকলকে মেনে নিতে হবে। যারা এই সিদ্ধান্ত মানবেন না তারা পথভ্রষ্ট ও উম্মাহর মধ্যে ফিতনা সৃষ্টিকারী বলেই বিবেচিত হবেন। এদের ব্যাপারে আমাদের সকলকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।

মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী আরো বলেন, দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ চলে ছয় উসূলের ভিত্তিতে। দিল্লীর মাওলানা সাদ সাহেবের অনুকরণ করতে হবে বলে, এই ৬ নম্বর উসূলের সাথে আরেকটা বাড়তি উসূল চালু করার কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশ মুসলিম অধ্যুষিত স্বাধীন-সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র। এদেশের সবকিছু কীভাবে পরিচালিত হবে, তার সিদ্ধান্ত নিবে এদেশের জনগণ। সুতরাং বাংলাদেশে তাবলীগী জামাআতের কার্যক্রম দিল্লীর কারো নির্দেশে নয়, বরং এদেশের উলামা-মাশায়েখগণের পরামর্শের ভিত্তিতেই পরিচালিত হবে। এখানে বাড়তি এক নম্বর যোগ করে তাবলীগকে দিল্লীর কোন এক ব্যক্তিবিশেষের ইচ্ছার গোলামে পরিণত করার সুযোগ নেই, যে কিনা ইসলামবিদ্বেষী শক্তির ক্রীড়নক হয়ে কাজ করছেন বলে শীর্ষস্থানীয় হক্কানী উলামায়ে কেরামের অভিমত।

তিনি বলেন, হক্কানী উলামায়ে কেরামের এই সম্মিলিত সিদ্ধান্তের বাইরে বাংলাদেশে কোনো এতায়াতী জামাত চলতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশে চলবে হযরতযী ইলিয়াস (রাহ.)এর নকশায় রেখে যাওয়া তাবলীগ, হযরতযী ইউসুফ সাহেব (রাহ.)এর নকশায় রেখে যাওয়া তাবলীগ, চলবে হযরতযী এনামুল হাসান (রাহ.) যেই শূরা পদ্ধতিতে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ রেখে গেছেন সেই মতে।

মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী তাবলীগের সাথী ভাইগণের প্রতি এই বিশাল জামাতকে ফিতনামুক্ত রাখতে এবং হযরত ইলিয়াস (রাহ.) কর্তৃক প্রবর্তিত ৬ উসূলের উপর অটূট রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ওয়াযাহাতি জোড়ের সিদ্ধান্তসমূহ সর্বস্তরের সকল সাথী ভাই এবং উলামা হযরতদের সমন্বয়ে বাস্তবায়ন এবং তাবলীগ জামাআতকে ফিতনামুক্ত রেখে হক্বের উপর পরিচালিত করুন।