Home ইসলাম বসরার হাজার বই রক্ষা করা নারী গ্রন্থাগারিক আর নেই

বসরার হাজার বই রক্ষা করা নারী গ্রন্থাগারিক আর নেই

বসরার জনপ্রিয় নারী গ্রন্থাগারিক আলিয়া মুহাম্মদ বাকের মারা গেছেন। তিন দশকের বইপ্রীতির পর পরপারে পাড়ি জমান বিখ্যাত এই নারী গ্রন্থাগারিক। গত ১৩ আগস্ট (শুক্রবার) করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। 

বসরার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সাবেক প্রধান হিসেবে আলিয়া বাকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধের সময় তিনি ৩০ হাজারের বেশি বই রক্ষা করেন। আলিয়ার জীবনে এটি ছিল একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। 

ইরাকের সংস্কৃতি, পর্যটন ও পুরাকীর্তি বিষয়ক মন্ত্রী হাসান নাদিম আলিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বসরার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সাবেক প্রধান আলিয়া মুহাম্মদের পরিবারের প্রতি আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। কর্মজীবনে সততা ও দেশপ্রেমের উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত ছিলেন তিনি। যুদ্ধকালে বসরায় ৩০ হাজার গ্রন্থ ও পাণ্ডুলিপি ধ্বংসের হাত থেতে রক্ষায় সাহায্য করেন।’ 

আরও পড়তে পারেন-

ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন প্রশাসনের বৈরী মনোভাব উপেক্ষা করে আলিয়া গ্রন্থাগারের সব বই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়িতে করে গ্রন্থাগারের সব বই সরিয়ে নিতেন তিনি। এ সময় তিনি নিজের বাসভবনের নিরাপদ স্থানে তা সংরক্ষণ করেন। 

আলিয়া ও তাঁর বন্ধুরা বসরার গ্রন্থাগারের সংগ্রহশালা থেকে প্রায় ৩০ হাজার গ্রন্থ সরিয়ে নেয়। আরবি, ইংরেজি ভাষায় লিখিত গ্রন্থাবলি ও স্প্যানিশ ভাষায় অনূদিত কোরআন এবং সাত বছরের পুরনো মহানবী (সা.)-এর জীবনীগ্রন্থ সংরক্ষণ করেন।

বই সরিয়ে ফেলার পরদিন সত্যিই গ্রন্থাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অনেক বই পুড়ে যায়। অনেক বই হারিয়ে যায়। বই হারানোর দুঃখ-ব্যথায় আলিয়া নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। 

বসরার সাংবাদিক মিশাল হাশেম বলেন, ‘আলিয়া একজন সাহসী নারী। হাজারো বই তিনি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। গ্রন্থাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার আগে পাশের একটি ব্রিটিশ ট্যাংক সরিয়ে নেওয়া হয়। এর পর থেকে আলিয়া নিজের ও বন্ধুদের ঘর, রেস্টুরেন্টে বই নিয়ে জমা রাখেন।’ 

হাশেম আরো বলেন, ‘আলিয়া বইগুলোকে নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। গ্রন্থাগারের অবশিষ্ট বই সংরক্ষণ করতে না পারায় তিনি অনেক কাঁদেন। তিনি মনে করতেন যে তিনি তাঁর অনেক ‘সন্তান’কে আগুন থেকে রক্ষা করেছেন। এতে তিনি গর্ববোধ করতেন।’ 

বই রক্ষায় তাঁর সাহসী কর্ম নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসে বিভিন্ন প্রতিবেদন তৈরি হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে একজন সাহসী নারী হিসেবে তাঁর বিবরণ তুলে ধরা হয়। তবে তাঁর সাহসী পদক্ষেপেরে স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে মাত্র ২৫ হাজার ইরাকি দিনার (১৭ ডলার) সম্মাননা দেওয়া হয়।

সূত্র: আল ফানার মিডিয়া।

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।