Home স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধে কমে টাইপ-২ ডায়াবেটিস

উচ্চ রক্তচাপের ওষুধে কমে টাইপ-২ ডায়াবেটিস

-প্রতিকী ছবি।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ টাইপ-২ ডায়াবেটিস কমায়। একই ওষুধ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক প্রতিরোধেও সহায়ক। এ ধরনের ওষুধ একই সাথে টাইপ-২ ডায়াবেটিসও কমিয়ে রাখে। টাইপ-২ ডায়াবেটিস হলে শরীরে পর্যাপ্ত ইনস্যুলিন তৈরি হয় না অথবা অন্যভাবে বলা যায় যে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসে দেহ কোষ ইনস্যুলিনের সাথে সাড়া প্রদান করে না।

এ ধরনের ডায়াবেটিস হলে গ্লুকোজ ভেঙে শরীরে শক্তি উৎপাদন হয় না। ডায়াবেটিসের মধ্যে ৯০ শতাংশই টাইপ-২ আক্রান্ত হয়ে থাকে মানুষ। অপর দিকে টাইপ-১ ডায়াবেটিস জন্মগত। এই ধরনের ডায়াবেটিস হলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অ্যাটাক করে এবং ইনস্যুলিন উৎপাদনকারী কোষকে ধ্বংস করে ফেলে। এ ধরনের রোগীকে বেঁচে থাকতে হলে জীবনভর ইনস্যুলিন নিতে হয়। টাইপ-২ ডায়াবেটিস হার্ট ডিজিজ, ব্রেইন স্ট্রোক, দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দেয়, পায়ের আঙুলে পচন ধরে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়।

আরও পড়তে পারেন-

বিশ্বব্যাপী ১৯টি বৈশ্বিক গবেষণায় এক লাখ ৪৫ হাজার ৯৩৯ জন মানুষের তথ্য থেকে অক্সফোর্ড ও ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এ উপসংহারে পৌঁছান যে, উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ওষুধও ডায়াবেটিস কমাতে সহায়তা করে। এ গবেষণাটি শেষ করতে সাড়ে চার বছর লেগেছে এবং এর মধ্যেই ৯ হাজার ৮৮৩ জন টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছে।

গবেষণার ওপর ল্যানসেটে প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ‘এই গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে হাইপারটেনশনরোধী ওষুধ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে।’ এ গবেষণায় ২২টি ক্লিনিকেল ট্রায়াল করা হয়েছে এবং সবগুলোতে প্লাসিবোর (কাউকে ওষুধ দেয়া হয়েছে, আবার কেউ কেউ ওষুধ পায়নি; কিন্তু সবাই জেনেছে তারা ওষুধই খেয়েছেন) প্রয়োগ ছিল। এনজিওটেনসিন কনভার্টিং এনজাইম (এসিই) ইনহিবিটর এবং এনজিওটেনসিন রেসেপ্টর-টু ব্লকারসের (এআরবি) শক্তিশালী ক্ষমতা রয়েছে ডায়াবেটিস কমাতে। এই দুইটি ওষুধ তার সেবনকারীকে ১৬ শতাংশ টাইপ-২ ডায়াবেটিস কমাতে পারে।

গবেষকেরা বলছেন, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন কমানোর অন্য কোনো ওষুধ ডায়াবেটিস কমাতে সহায়তা করে না। ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকারসেরও এই ক্ষমতা নেই। অন্য দিকে বিটকব্লকার এবং থায়াজাইড ডিউরেটিকস ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অবশ্য এই দুইটি ওষুধ যে ডায়াবেটিস বাড়ায় তা চিকিৎসকেরা জানেন এবং সেভাবেই প্রেসক্রাইব করেন। গবেষকেরা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে এমন লোকদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা এবং ওজন কমিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

গবেষণাটির প্রধান লেখক (লিড অথর) অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এবং কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট কাজেম রাহিমী বলেন, ‘আমাদের গবেষণা পরিষ্কার ধারণা দিচ্ছে যে বিশ্বব্যাপী সহজলভ্য এবং পরিচিত এসিই ও এআরবি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রাশ টেনে ধরতে পারে।’ তবে এই গবেষণা ডায়াবেটিস কমানোর কৌশল হিসেবে এসিই এবং এআরবি দেয়ার সুপারিশ করছে না।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে চার কোটি ২৫ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আক্রান্তদের অনেকেই জানেন না তাদের ডায়াবেটিস হয়েছে। সতর্ক না হওয়ায় জনগোষ্ঠীর প্রতি ১১ জনে একজন রোগটিতে ভুগছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ উঠে এসেছে বিশ্বের দশম শীর্ষ ডায়াবেটিস আক্রান্ত দেশের তালিকায়। ২০৪৫ সালের মধ্যে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যায় বাংলাদেশ নবম অবস্থানে চলে আসবে এবং তখন বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা হবে ছয় কোটি ২৯ লাখ।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন