Home শিক্ষা ও সাহিত্য ছাত্রদের পড়াশোনার পাশাপাশি চারিত্রিক উন্নতিতেও মনোযোগ দিতে হবে: আল্লামা জসিমুদ্দীন

ছাত্রদের পড়াশোনার পাশাপাশি চারিত্রিক উন্নতিতেও মনোযোগ দিতে হবে: আল্লামা জসিমুদ্দীন

- আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ইলামী শিক্ষাকেন্দ্র আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটাহাজারীর সহযোগী পরিচালক মুবাল্লিগে ইসলাম আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন বলেছেন, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের কারণে ছাত্রদের পড়াশোনা, গবেষণা ও আমল-আখলাকে ব্যাপক অলসতা ও গাফলতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে গাইডভিত্তিক পরীক্ষার প্রস্তুতিও মৌলিক শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনে ক্ষতি বয়ে আনছে। এসব ক্ষতি থেকে উত্তরণের জন্য ছাত্রদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে কঠোরতা আরোপের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়ম মেনে চলা ও সুন্নাহভিত্তিক চারিত্রিক উন্নতি সাধনে মনোযোগ দিতে হবে।

আরও পড়তে পারেন-

আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন আরো বলেন, বর্তমান সময়ে বিশুদ্ধ তালীম-তারবিয়তের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক হচ্ছে মোবাইল ফোন। ইন্টারনেট ভিত্তিক মোবাইল ফোনের অবাধ ব্যবহার ছাত্রদেরকে পড়ালেখায় ব্যাপক অমনোযোগী করে তুলছে। উস্তাদদের অবাধ্যতায় প্ররোচিত করছে। পাশাপাশি চিন্তা, মেধা ও চারিত্রিক বৈশিষ্টে অধোগতি ডেকে আনছে। যার ফলে সহীহ তালীম-তারবিয়তদান ও তার অনুশীলন করানো সম্ভবপর হচ্ছে না। এজন্য আত্মবিধ্বংসী মোবাইল ফোনের ব্যবহার থেকে তালিবুল ইলমদের রক্ষা করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে শুধু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের একক চেষ্টায় হবে না, বরং ছাত্রদের অভিভাকদেরও দায়িত্ব পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, ছাত্রদের তালিমি বিষয়েই শুধু কঠোর নেগরানি করলে হবে না, বরং তাদের সুন্নাতের অনুসরণের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। আমল ও ইবাদতের সাথে সাথে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, উত্তম আচরণ, চারিত্রিক উন্নতি, আদব-আখলাক তথা নম্রতা, পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ, সহনশীলতা ও অন্যের কল্যাণকামিতার মতো সুন্নাতসমূহ পালনে তালিবুল ইলমদেরকে উদ্বুদ্ধকরণে সর্বোচ্চ কঠোরতা আরোপ ও অনুশীলনে সজাগ দৃষ্টি রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াযা-কাতা তথা পোষাক-পরিচ্ছদ, দাড়ি-গোঁফ, চুল ইত্যাদি সুন্নাত মোতাবেক রাখার ব্যাপারে যথারীতি তদারকি করা এবং অবহেলা করলে হুঁশিয়ারি ও সতর্ক করা চাই। এতে করে বর্তমান ক্ষতিকর প্রবণতা থেকে উত্তরণ সম্ভবপর হবে বলে আমি আশাবাদি।

আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন মাদ্রাসা ছাত্রদের আরবী টিকা, আরবী ব্যাখ্যাগ্রন্থ থেকে সহায়তা নেয়ার প্রতি অভ্যস্ত করে তোলার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, তাদের সামনে উর্দু ও বাংলা টিকা ও ব্যাখ্যাগ্রন্থকে এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে যে, যাতে তারা আরবীর দিকে ঝুঁকে পড়ে।

তিনি বলেন, বর্তমানে উর্দু ও বাংলা ব্যাখ্যাগ্রন্থগুলো তালিবুল ইলমদের মূল গ্রন্থ পড়ার যোগ্যতা নষ্ট করে দিচ্ছে। তাই মূল আরবী শরাহ ও ব্যাখ্যাগ্রন্থ পড়ার প্রতি অভ্যস্ত করে তোলা। বিশেষ করে নোট দেখে আসল কিতাবের মোতালায়া থেকে বিরত থাকা এবং শুধু নোট দেখে পরিক্ষার তৈয়ারী নেওয়া তালেবে ইলমদের জন্য অতি ক্ষতিকর।

ছাত্রদেরকে যোগ্য আলেম ও দ্বীনের দায়ীরূপে গড়ে তুলতে বিভিন্ন ফেরাকায়ে বাতেলা, বেদআতি, কাদিয়ানী, আহলে হাদীস এবং দেশি-বিদেশী ইসলামবিদ্বেষী চক্রের ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা বিষয়ে মুনাজারা-মুবাহাসার উপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এতে করে তারা ক্ষুরধার যোগ্যতাসম্পন্ন লেখক ও মুখলেস ওয়ায়েজ রূপেও গড়ে ওঠতে পারবে।

এ পর্যায়ে তিনি প্রত্যেক মহল্লায় মহল্লায় ফোরকানিয়া মক্তব চালু ও বয়স্কদের বিশুদ্ধ কুরআন ও নামায শিক্ষার উদ্যোগ নেওয়া এবং প্রত্যেক তালেবুল ইলমকে দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতের সাথে সংযুক্ত হওয়ার জন্য তারগীব ও গুরুত্বারোপের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।