রাজধানী ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী প্রতিষ্ঠিত ‘জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া’ দেশের সর্ববৃহৎ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ-এর ৪৭তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে।
কিতাব বিভাগের সর্বমোট পরীক্ষার্থী ১০৪ জনের মধ্যে মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে ২৫ জন, মুমতায (স্টারমার্ক) পেয়েছে ৪১ জন, জায়্যিদ জিদ্দান (১ম বিভাগ) থেকে উত্তীর্ণ হয়েছে ৩৮ জন। পাসের হার শতভাগ।
প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী মুঠোফোনে উম্মাহ২৪ ডটকমকে জানান, ‘জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া’ ২০২১ সালের মার্চ মাসে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার শুরু লগ্নেই মক্তব, হিফজ’সহ ইবতেদায়ী থেকে দাওরায়ে হাদীস ও তাখাসসুসাতের অন্যান্য ফ্যাকাল্টি খুলে সকল জামাতেই নির্দিষ্ট পরিমাণ শিক্ষার্থী সহ বোর্ড পরীক্ষায় মেধাতালিকা উচ্চহার অর্জন করে সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আল্লামা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী এই প্রতিনিধিকে আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ব্যাপক মেহনত এবং শিক্ষার্থীদের একাগ্র পড়াশোনা ও একাডেমিক শৃঙ্খলা কঠোরভাবে অনুশীলনের ফলে বরাবরের মতো এবারও জামিয়াতুন নূরের শিক্ষার্থীরা ঈর্ষনীয় সফলতা পেয়েছে। এতে জাতীয় স্তরে জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া এক ঈর্ষনীয় স্থানে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছে। এ জন্য আমি মহান আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করছি।
তিনি আরো বলেন, জামিয়াতুন নূরের শিক্ষাকার্য্যক্রম পরিচালনায় কোনরূপ গাফলতি বা শৈথল্যের সুযোগ নেই। আমরা শিক্ষার মান বজায় রাখার উপর কোনরূপ আপোষ করি না। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা দরসের পাশাপাশি সঠিক ঈমান-আক্বিদা, আমল-আখলাক এবং আদর্শ ও নৈতিকতার মানেও যাতে সর্বোচ্চ স্থানে জায়গা করে নিতে পারে।
আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ফলাফলের এই ধারাবাহিক সাফল্যে সামনের দিনগুলোতে শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়ে আরো ভালভাবে ও মনোযোগের সাথে লেখাপড়া করবে, যাতে আগামীতে বেফাকের সম্মিলিত মেধা তালিকায় আরো বেশি সফলতা আসবে, ইনশাআল্লাহ।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
তিনি বলেন, আমরা যখন মাদরাসার ঘোষণা দিয়েছি তখন মাদরাসার কোন জায়গা ছিলো না। কোথায় ছাত্র ভর্তি করবো, ভর্তির পর ছাত্রদের থাকা, খাওয়া সবকিছুই অনিশ্চিত ছিলো। তবুও মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে নতুন মাদরাসার ঘোষণা দিয়েছিলাম। প্রতিষ্ঠার প্রারম্ভিক দিকে ১২নং সেক্টরে বাসা ভাড়া নিয়ে মাদরাসা শুরু করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী, তিনি খুব অল্প সময়েই জামিয়ার স্থায়ী ক্যাম্পাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আধুনিক মানের স্থায়ী ভবনে মনোরম পরিবেশে যত্নশীল, যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে ‘জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া’ শিক্ষা কার্যক্রম।
তিনি আরো বলেন, যেখানে মাদরাসার অস্তিত্ব ছিলো না, ছাত্রদের থাকা, খাওয়া সবকিছুই ছিলো অনিশ্চিত, সেখানে আল্লাহর কৃপায় স্থায়ী ক্যাম্পাস ও মেধাতালিকায় উচ্চহার অর্জনসহ আমাদের ফলাফল সন্তোষজনক। ইনশাআল্লাহ, আগামী সেশনে মেধাতালিকার এ প্রাপ্তি শতভাগ হবে বলে আমি মনে করি। আল্লাহ চাহেন তো শাওয়ালের শুরুতে আগামী নতুন শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে, ইনশাআল্লাহ।
সাফল্যের এ ধারা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য জামিয়ার সকল ছাত্র, ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী ও শুভানুধ্যায়ীদের নিকট দোয়া কামনা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও শায়খুল হাদীস আল্লামা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ