Home ইসলাম মিরাজ: বিশ্বনবী (সা.)এর জীবনের অন্যতম বড় অধ্যায়

মিরাজ: বিশ্বনবী (সা.)এর জীবনের অন্যতম বড় অধ্যায়

।। মুনির আহমদ ।।

মি’রাজ আরবী শব্দ। ঊরুজ থেকে মি’রাজ শব্দের উৎপত্তি। যার অর্থ ঊর্ধ্বারোহণ। মূলতঃ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়াত প্রাপ্তির দশম বর্ষে হিজরতের এক বছর পূর্বে রজব মাসের সাতাশ তারিখের রাত্রিতে মক্কা শরীফ থেকে বাইতুল মুক্বাদ্দাস হয়ে সাত আসমান পেরিয়ে আরশ-কুরসী তথা আল্লাহর খাস সান্নিধ্যে গিয়ে তাঁর দীদার লাভ করেন। তিনি একই রাতের প্রত্যুষে আবার মক্কায় ফিরে আসেন। এ ঐতিহাসিক ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনাকেই মি’রাজ বলা হয়। মি’রাজের এই ঐতিহাসিক ঘটনা বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক অলৌকিক মু’জিযাও বটে।

সে রাতে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রথমে মাসজিদুল হারাম থেকে বুরাকে আরোহণ করিয়ে বাইতুল মুক্বাদ্দাস নিয়ে যান। সেখান থেকে বিশেষ বাহনে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে ঊর্ধ্ব জগতে তথা সিদরাতুল মুনতাহায় নিয়ে যান এবং সেখান থেকে ‘রফরফ’ নামক বিশেষ আকৃতির এবং গতিসম্পন্ন বাহন মারফত তাঁকে আল্লাহর চাক্ষুস সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর পবিত্র দর্শন লাভ করেন এবং মহান আল্লাহর সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথোপকথন হয়। সেখানে, আরশ-কুরসী, বেহেশ্ত, দোযখ প্রভৃতি সম্মানিত মেহমানকে দেখানো হয়। এ ছাড়া সে রাতে তিনি মহাশন্যের অনেক গুঢ় রহস্য সম্বন্ধে ওয়াকিফহাল হন।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মি’রাজের পরিভ্রমণ শেষে যখন সাহাবায়ে কিরামের কাছে এ ঘটনা বর্ণনা করেন, তখন হযরত আবু বকর (রাযি.) ও অন্যান্য সাহাবায়ে কিরাম এক বাক্যে তা বিশ্বাস করেছিলেন। কিন্তু বিধর্মী ও নাস্তিকদের নিকট এটি একটি উদ্ভট, কাল্পনিক ও বানোয়াট বলে বিবেচিত হয়েছিল।

বস্তুতঃ এ অত্যাশ্চর্য ঘটনা বস্তুবাদী সভ্যতায় বিশ্বাসীদের মনেও প্রশ্ন জাগিয়েছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মি’রাজ স্বপ্নে আধ্যাত্মিক, নাকি সশরীরে হয়েছিল? মি’রাজ সম্পর্কে আমাদের মধ্যে দু’টি মতধারা লক্ষ্য করা যায়। একটি মতের অনুসারীরা বলেন, মি’রাজ সংঘটিত হয়েছিল আত্মিক অর্থাৎ স্বপ্নযোগে। অন্য মতের অনুসারীরা বলেন মি’রাজ হয়েছিল সশরীরে।

আমরা যদি এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ঘোষিত আল্লাহর শাশ্বত বাণীকে বিচার-বিশ্লেষণ করি, তবে তা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে যাবে সকলের কাছে।

মহান আল্লাহ্ তাঁর পবিত্র কুরআনে সকল দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন- “পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি স্বীয় বান্দা (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে রাত্রি বেলা মাসজিদুল হারাম (কা’বা শরীফ) থেকে মাসজিদুল আক্বসা (বাইতুল মুক্বাদ্দাস) পর্যন্ত নিয়ে গেলেন, যার চতুর্পার্শ্বে বরকত দান করেছি। উদ্দেশ্য- তাকে আমার কুদরতের কিছু বিস্ময়কর নিদর্শন দেখাবো। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।” (সূরা বনি ইসরাইল- ১)।

পবিত্র কুরআনে আরো বলা হয়েছে- “তিনি (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছিলেন। তারপর আল্লাহর নিকটবর্তী হলেন, এমনকি দু’ধনুকের ব্যবধান অথবা তার চেয়ে কাছে। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁর বান্দার প্রতি যা প্রকাশ করার তা প্রকাশ করলেন।” (সূরা নাজ্মঃ ৬-১০)।

উল্লিখিত আয়াত দৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মি’রাজের রাতে পরম করুণাময় আল্লাহর ইচ্ছায় সশরীরে সপ্ত আসমান পরিভ্রমণ করে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছেছিলেন। সেখানে আল্লাহর তরফ থেকে বিস্ময়কর নিদর্শন দেখানো হয়েছিল এবং কিছু জরুরী নির্দেশ প্রদান করা হয়েছিল। কাজেই এরপর কারো মনে সশরীরে মি’রাজ সম্পর্কে দ্বিধাদ্বন্দ্বের অবকাশ থাকার কথা নয়। খাঁটি মু’মিনের জন্য উল্লিখিত আয়াতদ্বয়ই যথেষ্ট।

আরও পড়তে পারেন-

আসলে মি’রাজ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্বপ্ন ঘটিত কোন ঘটনা নয় বা আধ্যাত্মিক কোন ব্যাপারও নয়। যদি স্বপ্ন ঘটিত হত, তাহলে তিনি অকপটে তা সাহাবাগণের কাছে বলতেন যে, গত রাতে আমি এ ধরনের একটি স্বপ্ন দেখেছি। তাহলে বিতর্কের কোন প্রশ্নই উঠত না এবং এ ঘটনায় অযথা বোরাক বা রফরফকেও টেনে আনতেন না। আর মিথ্যা বা বানোয়াটের তো চিন্তাই করা যায় না। কেননা, এটি সর্বজন বিদিত যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন আল্ আমীন-বিশ্বস্ত। কাজেই এখানে কোনটাই ধোপে টেকে না। তাছাড়া যদি এটি স্বপ্নই হত, তাহলে কাফিরদের তা অস্বীকার করার কোন কারণ থাকত না। কেননা, স্বপ্ন তো স্বপ্নই। স্বপ্নে অনেক কিছুই দেখা সম্ভব।

আজকের মানুষ এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছে যে, চৌদ্দশ’ বছর পূর্বে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে যে মি’রাজ সংঘটিত হয়েছে তা বাস্তব সম্মত। কেননা, আধুনিক বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে, জড় জগতে কোন বস্তুকে আলোর গতিতে ভ্রমণ করানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই স্মরণ রাখা প্রয়োজন যে, স্থান ও কালের সীমাবদ্ধতা শুধু সৃষ্ট বস্তুর জন্য প্রযোজ্য। মহান স্রষ্টা যিনি সকল শক্তির আধার, তাঁর জন্য তা কখনো বাধা হতে পারে না।

বস্তুতঃ মহাশক্তিধর আল্লাহ্ তাআলা যাকে ইচ্ছে, যখন ইচ্ছে মুহর্তের মধ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে পারেন। কাজেই আল্লাহর এই সীমাহীন ক্ষমতার প্রতি দৃঢ় আস্থাশীল লোকের নিকট নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সশরীরে ঊর্ধ্বলোক ভ্রমণে কোন সংশয় থাকতে পারে না।

এখানে লক্ষ্যণীয় যে, আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় হাবীবকে ঊর্ধ্বলোকে নিয়ে গিয়েই শুধু ক্ষান্ত হননি, বরং স্বয়ং এবং তাঁর ফেরেশ্তা ও পয়গাম্বরগণের দ্বারা সংবর্ধনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে যদি আমরা একটু সূক্ষ্মভাবে চিন্তা-ভাবনা করি, তবে তা আমাদের কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এটাই স্বাভাবিক। আমাদের বাস্তব জীবনেও কিন্তু এ ধরনের কিছু দৃষ্টান্ত পরিলক্ষিত হয়। সাধারণতঃ আমরা যদি কোন মেহমানকে দাওয়াত দিয়ে বাসায় নিয়ে আসি, তখন আমরা তার জন্য সাধ্যমত আদর-আপ্যায়ন ও সম্মান করে থাকি। আর আমšিত মেহমানও তুহ্ফা স্বরূপ কিছু না কিছু সঙ্গে নিয়ে আসেন।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মি’রাজের রাতে আল্লাহর সাক্ষাত দর্শনে গিয়েছিলেন, তখন কিন্তু এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি। পিয়ারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আল্লাহর দরবারে গিয়েছিলেন তখন তাঁর উপঢৌকন পেশ করে বলেছিলেন- আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্সালা ওয়াতু ওয়াত্ তায়্যিবাতু- অর্থাৎ “আমার মৌখিক, দৈহিক ও আত্মিক ইবাদতসমূহ আপনার জন্য নিয়ে এসেছি।” বিনিময়ে আল্লাহ্ তাআলা তাঁর প্রিয় হাবীবকে তুহ্ফা স্বরূপ যা দান করলেন তাহল- আস্সালামু আলাইকা আয়্যুহান্ নাবিয়্যু ওয়া রাহ্মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু- অর্থাৎ “হে নবী! আপনার উপর আমার (আল্লাহর) শান্তি ও বরকত বর্ষিত হোক।”

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই সালাম শান্তিতে অন্য সকলকে শামিল করার জন্য বললেন- আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লা-হিস্ সালিহীন- অর্থাৎ “আমাদের উপরও শান্তি বর্ষিত হোক আর তাদের উপরও শান্তি নাযিল হোক যারা নেক আমল করবে।” তখন এর সাক্ষী স্বরূপ ফেরেশ্তাগণের মুখ দিয়ে সাক্ষ্যোক্তি উচ্চারিত হল- আশ্হাদু আল্লা-ইলা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহ ওয়া রাসূলুহু- অর্থাৎ “সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।”

উল্লেখ্য যে, মি’রাজের রাতে আল্লাহ্ তাআলা তাঁর প্রিয় নবীর উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামায তুহ্ফা স্বরূপ দান করেছিলেন। নামাযের মধ্যে শেষ বৈঠকে যে আত্তাহিয়্যাতু এবং তাশাহ্হুদ পাঠ করা হয় সেটি সেই মি’রাজের রাতে আল্লাহ্ ও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মধ্যকার কথোপকথনের স্মৃতি বিশেষ।

এতক্ষণের আলোচনায় আমরা একটি চিরন্তন সত্যের সন্ধান পেলাম। আর তা হল, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে মি’রাজ হয়েছিল তা সশরীরেই হয়েছিল এবং ঐ দিন আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের তরফ থেকে তাঁর প্রিয় হাবীবের উম্মতের জন্য তুহ্ফা স্বরূপ যা দেওয়া হয়েছিল তা হল পাঁচ ওয়াক্ত নামায।

আসলে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মি’রাজ নিছক একটি ঊর্ধ্বলোক আরোহণই নয়, বরং এ মি’রাজের তাৎপর্য অপরিসীম। অন্ততঃ মৃত্যু পরবর্তী জীবন, বেহেশ্ত, দোযখ, বরযখ প্রভৃতি যেসব বিষয় সম্পর্কে আল্লাহ্ তাআলা তাঁর প্রিয় হাবীবের মাধ্যমে আমাদেরকে অবহিত করেছেন, সেই বিষয়গুলোর স্বরূপ কি? এবং সে সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে আল্লাহ্ তাআলা তাঁর প্রিয় হাবীবকে মি’রাজে নিয়ে গিয়েছিলেন।

তাছাড়া আল্লাহর আরো একটি উদ্দেশ্য ছিল, আর তাহল তার প্রিয় হাবীবকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া যে, আল্লাহ্ কত মহান, কত বড়, কত ক্ষমতাবান এবং তাঁর সৃষ্টি জগত কত ব্যাপক।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণের জন্য যে তুহ্ফা স্বরূপ নামায মি’রাজের রাতে নিয়ে এসেছেন, আমরা কি তা যথাযথভাবে আদায় করি? যে নামাযের বিনিময়ে জীবনে সুখ-শান্তি নেমে আসার কথা, যে নামাযের বদৌলতে সংসার জীবনে অভাব-অনটন দূর হওয়ার কথা, যে নামাযের মাধ্যমে যে কোন সমস্যার সমাধান হওয়ার কথা, আমরা কি সেই নামায সঠিকভাবে কায়েম করতে পেরেছি? যদি তাই পারতাম, তবে কেন আজ ঘরে ঘরে অশান্তির আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে? কেন একজন নামাযী নামায আদায় করে মিথ্যা কথা বলতে পারছে? কিভাবে একজন নামাযী ঘুষ খেতে পারে? অথচ আল্লাহ্ তাআলা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন- “নিশ্চয়ই নামায সকল গর্হিত ও কদর্য কাজ থেকে বিরত রাখে।” (সূরা আনকাবুত- ৪৫)। সূরা বাক্বারার ১৫৩ আয়াতে বলা হয়েছে “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাযের দ্বারা সাহায্য চাও”।

আমরা তো নামাযের মাধ্যমে অনেক কিছুই আল্লাহর কাছে চাচ্ছি, কিন্তু আমরা কি নামাযের হক আদায় করতে পারছি? আসলে আমরা আজ নামায তথা ইবাদতের অর্থ-উদ্দেশ্যের কথা বেমালুম ভুলে গেছি। ইবাদত সম্পর্কে আমাদের যে ধারণা তা ভ্রান্ত। অজ্ঞতা বশতঃ আমরা আজ শুধু আনুষ্ঠানিক যৎসামান্য ইবাদত ও প্রদর্শনমূলক কিছু অনুষ্ঠানকেই যথেষ্ট মনে করি।

আমরা এক ওয়াক্ত নামায পড়লে আরেক ওয়াক্ত নষ্ট করি। যা পড়ি তাও তাড়াহুড়ো করে দায়সারাভাবে পড়ি। নামায পড়েও অন্যায় ও পাপ কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ি। এরূপ নামাযে কিন্তু আমরা ইহকালীন শান্তি এবং পরকালীন মুক্তি ও সাফল্যের আশা করতে পারি না।

তেমনিভাবে কেউবা কর্মসূচীর মাধ্যমে আবার কেউবা দিবস ভিত্তিক ইবাদত করাকে যথেষ্ট মনে করি। আর এটাকেই আল্লাহর নৈকট্য লাভের উত্তম পন্থা বলে মনে করি। এ ধরনের ইবাদতকারীর মধ্যে প্রায় দেখা যায়, অনুষ্ঠানের সাথে তাদের সম্পর্ক। অনুষ্ঠান শেষ তাদের ইবাদত শেষ। এটা মুসলমানদের জন্য শোভনীয় নয়। মুসলমানদের সামগ্রিক জীবনটাই তো হবে ইবাদতের পরাকাষ্ঠা।

বস্তুতঃ সর্বপ্রকার ইবাদতের মধ্যে নামায সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। আসলে আল্লাহর সার্বক্ষণিক স্মরণের মাধ্যমে তাঁর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রেখে তাঁর প্রতিটি আদেশ-নিষেধ মেনে চলার একটা যোগ্যতা পয়দা করার লক্ষ্যেই আল্লাহ্ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। স্মর্তব্য, সাধারণতঃ ঊর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তা কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যখন তার অধীনস্থদের দায়িত্ব প্রদান করতে চান, তখন তাকে তার খাস চেম্বারে ডেকে নিয়ে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়। সংগত কারণে দায়িত্বশীলরা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বটা গুরুত্বসহকারে পালন করতে চেষ্টা করে। আর এটাও ঠিক যে, যদি সেই কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে পালিত হয়, তবে তাকে উত্তমরূপে পুরস্কৃত করা হয়। তদ্রুপ যেহেতু আল্লাহ্ তাআলা তাঁর পিয়ারা হাবীবকে তাঁর খাস চেম্বারে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমাদের প্রতি নামাযের নির্দেশ দিয়েছেন, সেই হেতু অতিগুরুত্ব ও যত্নসহ এই নামাযের হক আদায় করা আবশ্যক।

আমাদের আজ গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মি’রাজের রাতে পরম দয়াময় আল্লাহ্ তাআলা তুহ্ফা স্বরূপ যে নামায আমাদেরকে দান করেছেন, সেটির আসল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হৃদয়ঙ্গম করে তা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

লেখক: নির্বাহী সম্পাদক- মাসিক মুঈনুল ইসলাম, সম্পাদক- উম্মাহ ২৪ডটকম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।