Home ইসলাম জোহর ও আসরে দীর্ঘ কিরাত পাঠ

জোহর ও আসরে দীর্ঘ কিরাত পাঠ

।। কাসেম শরীফ ।।

জোহর ও আসরের নামাজে খুব সংক্ষিপ্ত কিরাত পাঠ করে নামাজ সমাপ্ত করা হয়। এমনকি কখনো তা সবচেয়ে ছোট কিরাতের নামাজ মাগরিবের চেয়েও বেশি সংক্ষিপ্ত হয়। অথচ বুখারি, মুসলিমসহ ‘সিহাহ সিত্তা’র প্রায় সব কিতাবে জোহর ও আসরের যে কিরাতের বিবরণ পাওয়া যায়, তাতে বোঝা যায়, জোহর ও আসরের নামাজে দীর্ঘ—অন্তত মধ্যম ধরনের কিরাত পাঠ করা সুন্নত।

নবীযুগে জোহর ও আসরের কিরাত কত দীর্ঘ হতো : রাসুলুল্লাহ (সা.) জোহরের কিরাত এত দীর্ঘ করতেন যে প্রাকৃতিক প্রয়োজন সেরে অজু করে এসে কেউ কেউ দেখত যে তিনি এখনো প্রথম রাকাতে আছেন।

আবু সাঈদ আল খুদরি (রা.) বলেন, জোহরের সালাত শুরু হয়ে যেত। অতঃপর কোনো ব্যক্তি প্রয়োজন (প্রস্রাব-পায়খানা) পূরণের জন্য বাকি নামক স্থানে যেত। সে নিজের প্রয়োজন সেরে অজু করে এসে দেখত রাসুলুল্লাহ (সা.) তখনো প্রথম রাকাতেই আছেন। তিনি সালাত এতটা লম্বা করতেন। (মুসলিম, হাদিস : ৯০৭)

আরও পড়তে পারেন-

কোনো কোনো হাদিস থেকে জানা যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.) জোহরের নামাজে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’ অর্থাৎ সুরা হুজুরাত থেকে সুরা বুরুজ পর্যন্ত যেকোনো সুরা পাঠ করতেন। আবার কোনো কোনো হাদিসে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ অর্থাৎ সুরা তারিক থেকে সুরা লাম-ইয়াকুন পর্যন্ত যেকোনো সুরা পড়ার কথাও পাওয়া যায়।

জোহরের সালাতে পঠিতব্য আয়াতের সংখ্যা : জোহরের প্রথম রাকাতে ৩০ আয়াত এবং দ্বিতীয় রাকাতে ১৫ আয়াত পাঠ করার কথা হাদিসে এসেছে। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, নবী (সা.) জোহরের প্রথম দুই রাকাতে ৩০ আয়াত পরিমাণ পাঠ করতেন এবং শেষের দুই রাকাতের প্রতি রাকাতে ১৫ আয়াত পরিমাণ পাঠ করতেন। (মুসলিম, হাদিস : ৯০২; আবু দাউদ, হাদিস : ৮০৪)

রাসুল (সা.) কর্তৃক জোহরের নামাজে ফজরের নামাজের মতো দীর্ঘ কিরাত পড়ার নজিরও আছে। আবু সাঈদ আল খুদরি (রা.) বলেন, আমরা জোহর ও আসরের সালাতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কিয়ামের (দাঁড়ানোর) পরিমাণ নিরূপণ করার চেষ্টা করতাম। জোহরের প্রথম দুই রাকাতে তাঁর দাঁড়ানোর পরিমাণ ছিল সুরা আলিফ-লাম-মিম সাজদা পাঠ করার পরিমাণ সময়। তার পরবর্তী দুই রাকাত আমরা তাঁর কিয়ামের পরিমাণ নিরূপণ করেছি ওই সুরার অর্ধেক পাঠ করার পরিমাণ সময়। আমরা আসরের দুই রাকাতে তাঁর কিয়ামের পরিমাণ নিরূপণ করেছি জোহরের শেষের দুই রাকাত তাঁর কিয়ামের পরিমাণ সময়। আর আসরের শেষ দুই রাকাত তাঁর কিয়ামের পরিমাণ ছিল প্রথম দুই রাকাতের অর্ধেক পরিমাণ সময়। (মুসলিম, হাদিস : ৯০১)

জোহর ও আসরে রাসুল (সা.) কোন কোন সুরা পড়তেন : কখনো কখনো রাসুল (সা.) জোহরের নামাজে সুরা লুকমান ও সুরা জারিয়াত পড়তেন। (নাসাঈ : ৯৭১; ইবনে মাজাহ : ৮৩০)

কখনো কখনো রাসুল (সা.) জোহরের নামাজে সুরা ইনশিকাক এবং এ ধরনের সুরা তিলাওয়াত করতেন। (সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস : ৫১১)

কখনো কখনো রাসুল (সা.) জোহর ও আসরের নামাজে সুরা বুরুজ ও সুরা তারিক এবং এ ধরনের সুরা পাঠ করতেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৩০৭)। কখনো কখনো রাসুল (সা.) জোহরের নামাজে সুরা ওয়াল লাইলি ইজা ইয়াগশা (সুরা আল-লাইল) পাঠ করতেন এবং আসরের নামাজেও অনুরূপ কোনো সুরা পাঠ করতেন। (মুসলিম, হাদিস : ৯১৬)

কখনো কখনো রাসুল (সা.) জোহরের নামাজে সুরা আলা (সাব্বি হিসমি রব্বিকাল আ’লা)। পাঠ করতেন। (মুসলিম : ৯১৭)

মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।