Home ইসলাম বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইমামদের করণীয়

বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইমামদের করণীয়

।। মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ ।।

ইমামরা জনগণকে ইসলামের সাম্য-মৈত্রী, একতা-সংহতি, নীতি-নৈতিকতা, মানবতা, সমাজপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, অন্যের অধিকার, আমানতদারিতা, পরহেজগারি, জবাবদিহি, নমনীয়তা সর্বোপরি মানবসম্পদ উন্নয়নে গঠনমূলক পরিকল্পনা, আত্মনিয়ন্ত্রণ, আত্মশুদ্ধি, আত্মসমালোচনা ও গর্ব-অহংকার বর্জনসহ প্রভৃতি বিষয়ে জ্ঞান শিক্ষা দিতে পারেন।

নিজেদের মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে সমাজ থেকে অলসতা, কর্মবিমুখতা, ব্যক্তিপূজার প্রবণতা, লোভ, আত্মসাৎ, গিবত, অপবাদ, কাদা ছোড়াছুড়ি, হিংসার বিষবাষ্প ছড়ানো থেকে বিরত থেকে আত্মকর্মশীল করে তুলতে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। ইমামদের জন্য অবশ্যই করণীয় হলো জানা বিষয়গুলো আমজনতার কাছে প্রচার করা। বিরোধপূর্ণ বিষয়ে বিবাদে জড়ানো উচিত নয়।

যুগোপযোগী কৌশল, বুদ্ধিমত্তা, দূরদর্শিতা ও যথাযথ আদর্শের প্রতীক হয়ে সত্যকে মুসল্লিদের কাছে সহনীয়, বরণীয় ও গ্রহণীয় করে তুলতে হবে। মহান আল্লাহ তাঁর নবীর কাছে ওহি পাঠানোর পর তা মানুষের কাছে প্রচারের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে রাসুল! তোমার প্রতি তোমার রবের পক্ষ থেকে যা নাজিল হয়েছে (কোরআন), তা মানুষের কাছে পৌঁছে দাও…। ’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৬৭)

এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, আমার পক্ষ থেকে মানুষের কাছে পৌঁছে দাও—যদিও একটি আয়াত হয়। (বুখারি, হাদিস : ৩৪৬১)

আরও পড়তে পারেন-

অন্যদিকে আলেমসমাজ যদি অর্পিত দায়িত্ব পালনে কাজে অবহেলা করে কিংবা তা পালনে বিরত থাকে, তবে তার অবস্থা হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। নবী করিম (সা.) বলেন, যে জাতি এরূপ হবে যে তারা যখন গুনাহে লিপ্ত হবে, তখন তা প্রতিরোধ করার মতো কিছু লোক থাকা সত্ত্বেও যদি তারা প্রতিকার না করে তখন আল্লাহ তাদের সবাইকে আজাবে গ্রেপ্তার করবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৩৩৮)

মানুষকে দাওয়াত না দিলে দুনিয়াতেই শাস্তি হতে পারে। রাসুল (সা.) বলেন, ওই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয়ই তোমরা সৎকাজের আদেশ করবে এবং অন্যায় কাজের প্রতিরোধ করবে। অন্যথায় আল্লাহ শিগগির তোমাদের ওপর তাঁর শাস্তি অবতীর্ণ করবেন। তখন তোমরা তাঁর কাছে দোয়া করলেও তিনি তোমাদের দোয়া কবুল করবেন না। (তিরমিজি, হাদিস : ২১৬৯)

তবে আলেমদের অবশ্যই তাদের দাওয়াত অনুযায়ী আমল করতে হবে। অন্যথায় কিয়ামতের দিন তাদের কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। রাসুল বলেন, এক ব্যক্তিকে কিয়ামতের দিন নিয়ে আসা হবে। তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তখন তার নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যাবে। আর সে তা নিয়ে ঘুরতে থাকবে যেমনভাবে গাধা আটা পেষা জাঁতার সঙ্গে ঘুরতে থাকে।

জাহান্নামিরা তার কাছে একত্রিত হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করবে, হে অমুক ব্যক্তি! আপনার এই অবস্থা (পরিণতি) কেন? আপনি কি আমাদের ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করতেন না? সে বলবে, হ্যাঁ। আমি তোমাদের ভালো কাজের আদেশ করতাম, কিন্তু নিজে তা করতাম না। আর মন্দ কাজের নিষেধ করতাম, কিন্তু নিজেই সে মন্দ কাজ করতাম। ’ (বুখারি, হাদিস : ৩২৬৭)

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।