Home ইসলাম পাপ ও হতাশা

পাপ ও হতাশা

।। আবরার নাঈম ।।

আল্লাহ তায়ালা হজরত আদম আ:কে সৃষ্টি করার পর ফেরেশতাদের বলেছিলেন, ‘তোমরা আদমকে সিজদা করো।’ তবে এই সেজদা মানে পায়ে পড়ে নয় বরং সম্মানসূচক সেজদা। এটাকে আরবিতে বলে ইনহিনা। আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক সব ফেরেশতাই সেদিন সেজদা করেছিল শয়তান ব্যতীত।

সে সেজদা করেনি। আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করায় সে বিতাড়িত হলো তাঁর সান্নিধ্য থেকে। বঞ্চিত হলো তাঁর রহমতের দরিয়া থেকে। চিরতরে নাম লেখাল অভিশপ্তের কাতারে। পবিত্র কুরআনেও তার অবাধ্যতার দৃষ্টান্ত বর্ণিত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছেÑ ‘যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সেজদা করো, তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সেজদা করল, সে অমান্য করল ও অহঙ্কার করল, কাজেই সে কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।’ (সূরা বাকারা-৩৪)

সেদিন থেকেই শয়তান বনি আদমের চরম শত্রুতে পরিণত হয়। কুরআনে বহু আয়াত ও হাদিসে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। শয়তানকে বনি আদমের প্রকাশ্য শত্রু হিসেবেও ঘোষণা করা হয়েছে কুরআনে। ইরশাদ হয়েছেÑ ‘হে মুমিনগণ! ইসলামের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সূরা বাকারা-২০৮) এ ছাড়াও অসংখ্য আয়াত ও হাদিসে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে শয়তান ও বনি আদমের মধ্যকার শত্রুতার বিষয়ে।

আরও পড়তে পারেন-

শয়তান তার রবের নির্দেশ অমান্য করে বিতাড়িত হাওয়ার পর তাকে এই ক্ষমতা দেয়া হলো যে, সে বনি আদমকে তার প্ররোচনায় প্ররোচিত করবে। মানুষের রগ-রেশায় চলবে। তাই আদমসন্তান শয়তানের ধোঁকায় পড়ে মাঝে মধ্যে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে ফেলে মনের অজান্তেই। তবে যারা সত্যিকারের মুমিন তাদের শয়তান ধোঁকা দিতে পারে না। কারণ তারা সদা-সর্বদা আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং তাঁর ওপরই ভরসা করে। পবিত্র কুরআনে এসেছেÑ ‘তার কোনো আধিপত্য নেই তাদের ওপর যারা ঈমান আনে ও তাদের রবের ওপরই নির্ভর করে।’ (সূরা নাহল-৯৯)

অতএব আমরা যদি কখনো শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কোনো পাপকাজে লিপ্ত হয়ে যাই, আল্লাহর কোনো নির্দেশ অমান্য করে বিপথগামী হয়ে যাই, আর পাপের কথা চিন্তা করে আমরা যেন হতাশ হয়ে না পড়ি। কুরআনে কারিমে আল্লাহ তায়ালা হতাশ হতে নিষেধ করেছেন। বরং কৃত পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে আল্লাহ তায়ালা নবী সা:কে সম্বোধন করে বলছেন, ‘বলুন, হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না; আল্লাহ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দেবেন।

তিনি তো ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’ (সূরা যুুমার-৫৩) আরেক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে তাহলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো; তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ (সূরা হামিম সেজদা-৩৬)

কিভাবে ডাকলে তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দেবেন সেই পদ্ধতিও শিখিয়ে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘বলো, হে আমার রব! ক্ষমা করুন ও দয়া করুন, আর আপনিই তো দয়ালুদের মাঝে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’

তাই আমাদের উচিত কখনো যদি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে পদস্খলিত হই, তাহলে হতাশায় না ডুবে সরাসরি আল্লাহর শরণাপন্ন হওয়া এবং নিজ পাপের জন্য ক্ষমা চেয়ে তাওবা করা।

লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া আরাবিয়া মাখযানুল উলুম, ময়মনসিংহ সদর

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।