বেলায়েত হুসাইন: চীনের সাংহাইয়ে হাজার বছরেরও বেশি সময়ের প্রাচীন হাতেলেখা একটি কুরআনের প্রতিলিপির খোঁজ পাওয়া গেছে। প্রতিলিপিটি সংরক্ষিত আছে সাংহাইয়ের ছিনহুয়ার একটি মসজিদে। চীনে পাওয়া এটিই সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিলিপি বলে দাবি করেছে সেখানকার গণমাধ্যম। একইসাথে এটি পৃথিবীর মধ্যেও অন্যতম প্রাচীন প্রতিলিপিগুলোর একটি।
শুক্রবার দেশটির শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের সূত্রে ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম আলকুদস জানায়, পবিত্র কুরআনের এই প্রতিলিপিটি খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের। চীনের সালার সম্প্রদায়ের পূর্বপুরুষরা মধ্য এশিয়া থেকে দেশটিতে বসতি স্থাপন করার সময় প্রতিলিপিটি সাথে করে নিয়ে এসেছিল। সালাররা আজ থেকে অন্তত ৮০০ বছর আগে ছিনহুয়ায় স্থানান্তরিত হয়।
ছিনহুয়ার ওই মসজিদের পরিচালক জানান, প্রাচীন এ প্রতিলিপিটি শুধুমাত্র সালারদের রেখে যাওয়া একটি দুর্লভ বস্তুই নয়; বরং এটি চীনের সাথে মধ্য এশিয়ার সংস্কৃতির আদান-প্রদানের সাক্ষী।
আরও পড়তে পারেন-
- কাবলাল জুমা: কিছু নিবেদন
- দারিদ্র বিমোচনে এনজিওদের থেকে কওমি মাদ্রাসার সফলতা বেশি!
- হজ্ব-ওমরায় গেলে আমরা সেখান থেকে কী নিয়ে ফিরব?
- সমাজে পিতা-মাতারা অবহেলিত কেন
- সংঘাতবিক্ষুব্ধ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের সুমহান আদর্শ
৩০ পারার পবিত্র কুরআনের এই প্রতিলিপির পৃষ্ঠা সংখ্যা ৮৬৭। এটি তৈরি গণ্ডারের চামড়া দিয়ে। আর প্রতিটি পারার শুরুর গিলাফ বানানো হয়েছে নীল রেশমের ব্যবহারে। ২০০৭ সালে চীন বেশ কিছু ঐতিহাসিক বস্তু নির্দিষ্ট করে এবং তা সংরক্ষণে গঠন করে একটি বিশেষজ্ঞ টিম। ওই প্রকল্পের আওতায় কুরআনের এ কপিটি নতুন করে বাঁধাই করা হয় এবং দেশটির সরকার এটিকে জাতীয় দুর্লভ বস্তুর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
আলকুদস জানায়, ২০০৭ সালের ওই প্রকল্পের অধীন মসজিদে একটি জাদুঘর স্থাপিত হয় এবং সেখানেই কুরআনের প্রতিলিপিটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। পরে ওই জাদুঘরে একটি কাচপাত্রে প্রতিলিপিটি রাখা হয়।
সূত্র জানায়, এই মসজিদে আরো বেশ কিছু হাতেলেখা ও ছাপা কুরআনের প্রতিলিপি রয়েছে। যেগুলোতে চীনের প্রাচীন লিপির ছোঁয়া বিদ্যমান।
উল্লেখ্য, ছিনহুয়া জেলার ৬০ শতাংশ অধিবাসী সালার জাতিভুক্ত। তাদের বেশরভাগ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম দীর্ঘ সময়ের বসবাসে তারা এ এলাকা স্বতন্ত্র সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়েছে। বিভিন্ন সময় মুসলিম দেশের প্রতিনিধিরা এ এলাকায় সফর করেছেন এবং এই মসজিদও পরিদর্শন করেছেন তাদের অনেকে।
সূত্র : আলকুদস।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ