Home ইসলাম ইসলামে আয়-ব্যয় নীতি

ইসলামে আয়-ব্যয় নীতি

।। জাওয়াদ তাহের ।।

পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য অর্থের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। সুন্দরভাবে জীবন পরিচালনার জন্য অর্থের জোগান দিতে হবে। সে জন্য আল্লাহ তাআলাও রিজিক অনুসন্ধানের জন্য আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর নামাজ শেষ হয়ে গেলে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো এবং বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সুরা : জুমুআহ, আয়াত : ১০)

জীবিকা অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ইসলাম কাউকে লাগামহীন স্বাধীনতা প্রদান করেনি। সম্পদ উপার্জন এবং তার ব্যয় করা বিভিন্ন নীতিমালার ছাঁচে আবদ্ধ করে দিয়েছেন। মানুষ যখন এসব নীতিমালা মেনে জীবনযাপন করবে তখনই মানবজীবনে আসবে ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা ও সচ্ছলতা। আর যদি তা না মেনে যাচ্ছে-তাই করা হয়, তাহলে নানা বিপর্যয় ও অর্থনৈতিক ধ্বংস নেমে আসবে।

হালাল উপার্জন : উপার্জনের জন্য প্রধান শর্ত হচ্ছে তা বৈধ পন্থায় উপার্জন করা। সুতরাং অবৈধ পন্থায় কোনো ধরনের সম্পদ কামানোর অনুমতি নেই। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা পরস্পর একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না, তবে পারস্পরিক সন্তুষ্টিক্রমে কোনো ব্যবসায় করা হলে (তা জায়েজ)…। ’ (সুরা : আন নিসা , আয়াত : ২৯)

আরও পড়তে পারেন-

সুতরাং উপার্জনের প্রথম স্তরই হবে বৈধ পন্থা। চাই তা ব্যবসা, চাকরি, কৃষিকাজ বা অন্য যেকোনো পেশায় হোক না কেন।

পরিবারের জন্য খরচ করা : সম্পদ উপার্জনের পর তার নিজের প্রয়োজন ও পরিবারের সদস্যদের মাঝে ব্যয় করার প্রথম নির্দেশ এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তি নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী খরচা দেবে আর যার জীবিকা সংকীর্ণ করে দেওয়া হয়েছে (অর্থাৎ যে গরিব) সে, আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তা থেকে খরচা দেবে। আল্লাহ যাকে যতটুকু দিয়েছেন তার বেশি ভার তার ওপর অর্পণ করেন না। আল্লাহ সংকটের পর স্বাচ্ছন্দ্য সৃষ্টি করে দেবেন। ’ (সুরা : আত-তালাক, আয়াত : ৭)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুলাহ (সা.) বলেছেন, ‘একটি দিনার তুমি আল্লাহর পথে ব্যয় করলে, একটি দিনার গোলাম আজাদ করার জন্য এবং একটি দিনার মিসকিনদের দান করলে এবং আর একটি তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করলে। এর মধ্যে (সওয়াবের দিক থেকে) ওই দিনারটিই উত্তম, যা তুমি পরিবারের লোকদের জন্য ব্যয় করলে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২২০১)

অপচয় না করা : খরচ করার ক্ষেত্রে ভারসাম্যনীতিতে চলার জন্য আদেশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অনেকেই বাড়াবাড়ি করে থাকেন। এ জন্য সম্পদ যত বেশিই থাকুক না কেন, কোনোক্রমেই অপচয়, অপব্যয় করা যাবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং যারা ব্যয় করার সময় অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্য করে না; বরং তা হয় উভয়ের মাঝখানে ভারসাম্যমান। ’ (সুরা : আল-ফুরকান, আয়াত : ৬৭)

কৃপণতা নিষিদ্ধ : কৃপণতা একটি মারাত্মক ব্যাধি। ব্যক্তি সমাজ ও পরিবার সবাই এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপচয় ও কৃপণতা কোনোটাই কাম্য নয়; বরং মধ্যপন্থা অবলম্বন করা চাই। কোরআনে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘এবং যারা ব্যয় করার সময় অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্য করে না; বরং তা হয় উভয়ের মাঝখানে ভারসাম্যমান। ’ (সুরা : আল-ফোরকান : ৬৭)

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।