Home ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন শীতকাল মুমিন জীবনের বসন্ত

শীতকাল মুমিন জীবনের বসন্ত

।। মুফতি ইসহাক ওমর কাসেমী ।।

ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যময় আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। অবশ্য এখন জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে কার্যত আমরা তিনটি ঋতুই অনুভব করি। গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শীত। প্রতিটি ঋতু আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য অনেক বড় নেয়ামত ও শিক্ষণীয় বিষয়।

একজন মুসলমানের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি ঋতু ও বসন্ত আল্লাহ তাআলার ইবাদত-বন্দেগীতেই কাটে। বছরের সময়গুলোর মধ্যে আল্লাহ তাআলা কিছু সময় এমন রেখেছেন, যে সময় ইবাদত করলে তার বিনিময় ও সম্মান অনেক বেড়ে যায়। বান্দার জন্য সৌভাগ্যের আলামত হচ্ছে, সময়ের এই পরিবর্তন সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং ইবাদতের মাধ্যমে সুযোগসমূহ লুফে নেয়া। বিভিন্ন ঋতু ও সময়ে আল্লাহ তাআলার বিশেষ যে সকল ইবাদত আছে তা আদায় করে নেয়া। কারণ, আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতিটি মুহূর্ত এজন্যই সৃষ্টি করেছেন, যাতে করে বান্দা তাঁর নিয়ামতসমূহ উপভোগ করে, সময়কে তাঁর ইবাদত-বন্দেগীতেই অতিবাহিত করে।

শীতকাল মুমিনের বসন্তকাল

ইবাদত-বন্দেগীর জন্য সুন্দর ও সহজতম একটি সময় হলো শীতকাল। শীতকালকে বলা হয় মুমিন বান্দার ইবাদতের বসন্তকাল। কারণ শীতকালে রাত দীর্ঘ হয়। যে কারণে বান্দা যথেষ্ট পরিমাণে বিশ্রামের পর শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ ও রোনাজারি করতে পারে। পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের সুযোগ পায়। দিনের বেলায় সময় ছোট হওয়াতে কোনো প্রকারের কষ্ট ও ক্লান্তি অনুভব করা ছাড়াই রোযা রাখতে পারে। যা অনেক বড় ফযীলতপূর্ণ একটি আমল। এ ছাড়া আরো অনেক আমল আছে, যা বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় শীতকালে আদায় করা সহজ হয়। আলোচ্য নিবন্ধে এমন কিছু আমল সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।

শীতকালে রোযা

হাদিসের ভাষায় শীতকালকে গনিমতে বারিদাহ তথা ঠান্ডা গনিমত বলা হয়েছে। অর্থাৎ শীতকালে রোযা রাখাকে হাদিসে বিনা পরিশ্রমে অর্জিত গনিমত বলা হয়েছে। হযরত আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

الصوم في الشتاء الغنيمة الباردة

অর্থ- শীতকালে রোযা রাখা ঠান্ডা গনিমত। (মুসনাদে আহমদ- ১৮৯৭৯)।

হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.) তাঁর ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি কি তোমাদেরকে গনিমতে বারিদার দিকে পথ দেখাবো না? তাঁরা বললেন, কেন নয়! তিনি বললেন, শীতকালে রোযা রাখা হচ্ছে গনিমতে বারিদাহ তথা বিনা পরিশ্রমে যুদ্ধলব্ধ সম্পদের মতো।

অর্থাৎ, শীতকালে রোযা রাখলে অল্প সময়ে তা পূর্ণ হয়ে যায়। পরিবেশ ঠান্ডা থাকার কারণে পিপাসা এবং ক্লান্তি অনেক কম অনুভব হয়। রোযার ফযীলত বর্ণনায় নবীজী (সা.) ইরশাদ করেন-

الصيام جنة من النار، كجنة أحدكم من القتال.

রোযা হচ্ছে জাহান্নামের ঢাল স্বরূপ। যুদ্ধের ঢালের মতো। (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস- ১৩৩৬)।

অন্য এক হাদীসে নবীজি (সা.) ইরশাদ করেন- الصيام جنة وحصن حصين من النار.

“রোযা হচ্ছে ঢাল এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার সুরক্ষিত কেল্লা”। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস- ৯২১৪)।

অন্য এক হাদীসে নবীজি (সা.) ইরশাদ করেন-

كل عمل ابن آدم له الحسنة بعشر أمثالها إلى سبع مائة ضعف، قال الله عز وجل: إلا الصيام فإنه لي، وأنا أجزي به، إنه ترك شهوته وطعامه وشرابه من أجلي.

“আল্লাহ তাআলা আদম সন্তানের প্রত্যেক ভালো কাজের বিনিময় দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দিবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, কিন্তু রোযা আমার জন্যই। এর প্রতিদান আমিই দেবো। কেননা, বান্দা আমার জন্যই তার প্রবৃত্তি ত্যাগ করেছে এবং পানাহার থেকে বিরত থেকেছে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস- ১১৫১)।

এছাড়া রোযার ফযীলত সম্পর্কে তাঁর অসংখ্য হাদীস বর্ণিত আছে।

শীতকালের এই সুবর্ণ সুযোগকে রোযা রাখার মাধ্যমে আমরা লুফে নিতে পারি। অলসতায় সুযোগ নষ্ট করা বুদ্ধিমান মুমিনের কাজ হতে পারে না। এ সময়ে আমরা বিশেষভাবে সপ্তাহে দু’দিন সোম ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতে পারি। কারণ, এ দু’দিন নবীজি (সা.) রোযা রাখতেন।

إنّ نبيّ الله – صلّى الله عليه وسلّم – كان يصوم يوم الإثنين ويوم الخميس، وسُئل عن ذلك؟ فقال: إنّ أعمال العباد تُعرضُ يوم الإثنين والخميس.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার এবং বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন। এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, নিশ্চয় বান্দার আমলসমূহ সোমবার এবং বৃহস্পতিবার উপস্থাপন করা হয়। (সুনান আবু দাউদ, হাদীস- ২৪৩৬)।

এছাড়া প্রতি মাসের তিন দিনের রোযাও রাখতে পারি, যেগুলোকে আইয়্যামে বীযের রোযা বলা হয়।

عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : أوصاني خليلي بثلاث لا أدعهن حتى أموت صوم ثلاثة أيام من كل شهر وصلاة الضحى ونوم على وتر .

হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে আমার বন্ধু (মুহাম্মাদ সা.) তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন, এগুলো যেন আমি মৃত্যু পর্যন্ত না ছাড়ি। এক. প্রতি মাসে তিনটি রোযা। দুই. চাশতের সালাত। তিন. বিতির আদায় করে ঘুমানো। (সহীহ বুখারি, হাদীস- ১১৭৮)।

وعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما قال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم : وإن بحسبك أن تصوم كل شهر ثلاثة أيام ؛ فإن لك بكل حسنة عشر أمثالها فإن ذلك صيام الدهر كله

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোযা রাখবে। কেননা, তোমার জন্য রয়েছে প্রত্যেক নেক আমলের বিনিময়ে তার দশগুণ নেকি। এভাবে সারা বছরের রোযা হয়ে যায়। (সহীহ বুখারি- ১৮৭৪)।

وعن أبي ذر قال : قال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم : إذا صمت شيئاً من الشهر فصم ثلاث عشرة وأربع عشرة وخمس عشرة

হযরত আবু যর (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তুমি যদি কোনো মাসে রোযা রাখো, তাহলে তেরো, চৌদ্দ এবং পনেরো তারিখে রোযা রাখো। (তিরমিযী, হাদিস- ৭৬১)।

কিয়ামুল্লাইল- তাহাজ্জুদ

সালাতুত তাহাজ্জুদের গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে আমরা সকলেই কমবেশ অবগত আছি। কুরআন-হাদিসে তাহাজ্জুদের প্রতি অনেক গুরুত্ব ও উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। অসংখ্য ফযীলত এই সালাতের ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

أَمَّنْ هُوَ قَانِتٌ آنَاءَ اللَّيْلِ سَاجِدًا وَقَائِمًا يَحْذَرُ الْآخِرَةَ وَيَرْجُو رَحْمَةَ رَبِّهِ ۗ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ ۗ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الْأَلْبَابِ

“তবে কি (এরূপ ব্যক্তি সেই ব্যক্তির সমতুল্য হতে পারে) যে রাতের মুহূর্তগুলোর ইবাদত করে, কখনও সিজদাবস্থায়, কখনও দাঁড়িয়ে। যে আখেরাতকে ভয় করে এবং নিজ প্রতিপালকের রহমতের আশা করে? বল, যে ব্যক্তি জানে আর যে জানে না, উভয়ে কি সমান?  (কিন্তু) উপদেশ গ্রহণ তো কেবল বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরাই করে”। (আয-যুমার- ৯)।

আরো ইরশাদ করেন-

وَمِنَ الَّیۡلِ فَتَہَجَّدۡ بِہٖ نَافِلَۃً لَّکَ ٭ۖ عَسٰۤی اَنۡ یَّبۡعَثَکَ رَبُّکَ مَقَامًا مَّحۡمُوۡدًا

“রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়বে, যা তোমার জন্য এক অতিরিক্ত ‘ইবাদত’। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে মাকামে মাহমুদে পৌঁছাবেন”। (সূরা বনী-ইসরাঈল- ৭৯)।

রাসূলুল্লাহ (সা.) হিজরত করে মদীনায় আসার পর মুসলমানদেরকে কিয়ামুল্লাইল তথা তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য বেশি বেশি উৎসাহ দিতেন। তাহাজ্জুদ জান্নাতে প্রবেশের সহজ একটি পথ। তাহাজ্জুদ কবরের আলো। এর মাধ্যমে বান্দা মাকামে মাহমুদে (প্রশংসিত স্থানে) পৌঁছতে পারে।

বিখ্যাত সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবীজি (সা.) সর্বপ্রথম মদীনায় আসার পর যে বিষয়ে কথা বলেছেন তা হচ্ছে- হে লোক সকল! সালামের প্রসার করো। মানুষকে খাবার খাওয়াও। রাত্রে নামায আদায় করো, যখন মানুষ ঘুমে বিভোর থাকে। তাহলে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে শান্তির সাথে। (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস- ১৩৩৪)।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.) বলেন, শীতকে স্বাগতম। শীতকালে বরকত অবতীর্ণ হয়। এ সময় সালাত আদায়ের জন্য রাত দীর্ঘ হয়। রোযা রাখার জন্য দিন ছোট হয়।

আরও পড়তে পারেন-

হযরত হাসান বাসরী (রহ.) বলেন, মুমিন বান্দার জন্য উত্তম সময় হচ্ছে শীতকাল। কারণ, এ সময় রাত দীর্ঘ হয়, ফলে মুমিন সালাত আদায় করতে পারে। দিন ছোট হয়, ফলে রোযা রাখতে পারে।

তিনি আরো বলেন, “উত্তম ইবাদত হচ্ছে গভীর রাতে সালাত আদায় করা”।

শীতকালে সাধারণত রাত অনেক দীর্ঘ হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণের বিশ্রাম হয়ে সময় আরো অনেক বেঁচে যায়। এ সময় মুমিন বান্দাদের জন্য শেষ রাত্রে উঠে তাহাজ্জুদ আদায় করার সুবর্ণ সুযোগ হয়। মহান রবের দরবারে রোনাজারি করে গুনাহ মাফ করার এবং দুনিয়া আখেরাতে সফলতা ও সম্মান অর্জন করার এক সুন্দর সুযোগ থাকে। তাহাজ্জুদের সময় দুআ কবুল হওয়ার বরকতময় এক মুহূর্ত। হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

سَمِعْتُ النبيَّ صَلّى اللَّهُ عليه وَسَلَّمَ يقولُ: إنَّ في اللَّيْلِ لَساعَةً لا يُوافِقُها رَجُلٌ مُسْلِمٌ، يَسْأَلُ اللَّهَ خَيْرًا مِن أَمْرِ الدُّنْيا والآخِرَةِ، إلّا أَعْطاهُ إيّاهُ، وَذلكَ كُلَّ لَيْلَةٍ.

আমি নবী কারীম (সা.)এর কাছ থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন, নিশ্চয় রাত্রে এমন একটি বিশেষ সময় আছে, যখন কোন মুসলিম বান্দা আল্লাহ তাআলার কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করে দুআ করলে আল্লাহ তাআলা তা দান করবেন। আর এই সময়টি প্রত্যেক রাত্রেই থাকে। (সহীহ মুসলিম, হাদিস- ৭৫৭)।

সৌভাগ্যবান মুমিন তো সেই, যে রাত্রের মূল্যবান সময়কে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে নষ্ট করে না।

কুরআন তিলাওয়াত

কুরআন তিলাওয়াতের ফযীলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত আছি। কুরআনের প্রতিটি হরফে দশ নেকি। কুরআন তিলাওয়াত করলেও নেকি শুনলেও নেকি। কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে ঈমান দৃঢ় ও মজবুত হয়। কুরআন নিয়ে তাদাব্বুর (গবেষণা) করলে তাকওয়া অর্জিত হয়। কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অন্তরে প্রশান্তি আসে।

শীতের দীর্ঘ রাতে বিশেষভাবে শেষরাত্রের নির্জনতায় আমরা কুরআন তিলাওয়াত করতে পারি। কুরআনের সান্নিধ্যে থেকে নিজের ঈমানকে শানিত করতে পারি। শীত আসলে হযরত উবাইদ বিন উমায়ের (রহ.) বলতেন, হে কুরআনের লোকেরা! তিলাওয়াতের জন্য তোমাদের রাত দীর্ঘ হয়েছে, সুতরাং কুরআন তিলাওয়াত করো। রোযার জন্য তোমাদের দ্বীন ছোট হয়েছে, সুতরাং রোযা রাখো।

ঠান্ডায় অযু করা

শীতের সময় পানি বেশ ঠান্ডা থাকে। অযু করতে কষ্ট হয়। কিন্তু এমন কষ্টকর পরিস্থিতিতে কেউ যদি পরিপূর্ণরূপে অযু করে, তাহলে তার জন্য হাদীসে রয়েছে বিশেষ পুরস্কারের সুসংবাদ। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন-

ألا أدلكم على ما يمحو الله به الخطايا ويرفع به الدرجات: قالوا: بلى يا رسول الله قال: إسباغ الوضوء على المكاره

“আমি কি তোমাদেরকে এমন বস্তুর প্রতি পথ দেখাবো না, যার দ্বারা আল্লাহ তাআলা গুনাহ মাফ করবেন এবং সম্মান বৃদ্ধি করবেন! (সাহাবায়ে কেরাম) বললেন, কেন নয় ইয়া রাসূলাল্লাহ! নবীজী (সা.) বললেন, কষ্ট সত্ত্বেও পরিপূর্ণরূপে অযু করা। (সহীহ মুসলিম, হাদিস- ৪৭৫)।

এই হাদীস দ্বারা বুঝা যায়, কেউ যদি ঠান্ডা পানি দিয়ে অযু করে তার গুনাহ মাফ হবে এবং সম্মান বৃদ্ধি পাবে।

অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো

শীত গরিব-দুঃখিদের জন্য এক কঠিন পরীক্ষার কাল। গরম তো কোনোরকম সহ্য করা যায়, কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডায় অনেক সময় মানুষ মারা যায়। অনেক গরিব অসহায় মানুষ ঠান্ডার কারণে কষ্ট পায়। সেই মুহূর্তে শীতবস্ত্র দিয়ে গরিব-দুঃখিদের পাশে দাঁড়ানো অনেক বড় পুণ্যের কাজ। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও মানবসেবার অনেক ফযীলত ও সম্মান হাদীসে বর্ণিত আছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন-

الله فی عون العبد ما كان العبد فی عون أخيه

বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত তার ভাইয়ের সাহায্যে থাকবে আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত তার সাহায্য করবেন। (সহীহ মুসলিম- ২৬৯৯)।

শেষ নিবেদন

শীতের এই সময়গুলো সহ আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে মূল্যায়ন করা উচিত। নিজের ঈমান-আকীদা পরিশুদ্ধ করতে হবে। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত সহ ওয়াজিব ও সুন্নাত আমলসমূহ আদায় করতে হবে। পাশাপাশি নফল ইবাদত করে আখেরাতকে সমৃদ্ধ করতে হবে। হেলায় ফেলায় সময় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শীতকালের এই সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অধিক পরিমাণে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

লেখক: উস্তাদ- দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম এবং সহকারী সম্পাদক- মাসিক মুঈনুল ইসলাম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।