[রাজধানীর অন্যতম বিখ্যাত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, উত্তরা জামেয়াতুন নূর আল-কাসেমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও উত্তরা ১২নং সেক্টর বায়তুন নূর জামে মসজিদের খতীব, নমুনায়ে কাসেমী আল্লামা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী শুক্রবার (২৬ জানুয়ারী) জুমায় মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি’র উপর যে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করেছেন, বিষয়বস্তুর গুরুত্ব বিবেচনা করে বয়ানের অনুলিপি উম্মাহ পাঠক সমীপে উপস্থাপন করা হল -সম্পাদক]
মুয়াযযাজ মুহতারাম উলামায়ে কেরাম, সম্মানিত মুসুল্লিয়ানে ইযাম! আল্লাহ সুবহানাহু ও তাআলার অশেষ মেহেরবানী, তিনি আমাদেরকে তাঁর মহান হুকুম জুমআর নামায আদায় করার জন্য মসজিদে সমবেত হওয়ার তাওফিক দান করেছেন। সকলে শুকরিয়াতান বলি আলহামদুলিল্লাহ। এর চেয়েও বড় শুকরিয়ার বিষয়, আল্লাহ পাক পরওয়ারদিগারে আলম তাঁর একান্ত ইচ্ছায় তাঁর বিশেষ নির্বাচনে আঠারো হাজার মাখলুখকাত থেকে হযরতে ইনসানকে শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি হওয়ার মর্যাদা দান করেছেন। এটা কত বড় মর্যাদা! এমন মর্যাদা! যে মর্যাদা আল্লাহ তাআলা অন্য কোন মাখলুককে দান করেননি। জীব জন্তুকে দেননি। জিন্নাতকে দেননি। এমনকি ফেরেশতাদেরকেও দেননি। িআমরা পরওয়ারদিগারের শোকরিয়া আদায় করে বলি, আলহামদুলিল্লাহ।
আমি আপনাদের সামনে কুরআনুল কারিমের সূরা বাকারার প্রথম দিকের তৃতীয় রুকুর কয়েকটি আয়াত তিলাওয়াত করেছি। যার সরল তরজমা করে দিলে আপনারা বুঝতে পারবেন। وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ স্মরণ করুন ঐ সময়ের কথা যখন আল্লাহ (আপনার প্রভ) তাঁর ফেরেশতাকুল লক্ষ্য করে বলেছিলেন: إِنِّي جَاعِلٌ فِي الْأَرْضِ خَلِيفَةً আমি আমার প্রতিনিধি পাঠাবো দুনিয়াতে। قَالُوا ফেরেশতারা জবাব দিয়েছিল:أَتَجْعَلُ فِيهَا مَنْ يُفْسِدُ فِيهَا وَيَسْفِكُ الدِّمَاءَ আপনি এমন মাখলুক সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন- যারা যমিনে (পৃথিবীতে) গিয়ে ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টি করবে এবং খুন খারাবি করবে? আপনার তো কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। তবে আপনি প্রশংসাকে ভাল বাসেন। পবিত্রতার বর্ণনা শুনতে আপনি ভাল বসেন। وَنَحْنُ আমরা ফেরেশতাকুল অগণিত অসংখ্য আপনি বানিয়েছেন। আমরাই তো نُسَبِّحُ بِحَمْدِكَ আপনার তাসবীহ আমরা সর্বদা করে থাকি। وَنُقَدِّسُ لَكَ আপনার পবিত্রতাও বর্ণনা করে থাকি। তাহলে আপনার আর কি প্রয়োজন আরেকটা মাখলুক বানানেরা? قَالَ إِنِّي أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُونَ আল্লাহ তাআলা বলেন, ওহে ফেরেশতারা! আমি তোমাদেরকে যা শিখিয়েছি তোমরা তা জান। কিন্তু আমি যা জানি সবকিছু তোমরা তো জান না। إِنِّي أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُون তোমাদের এই ধরাণা অমূলক। শুধুমাত্র খুন-খারাবি করবে, ফিৎনা-ফাসাদ করবে, অকৃতজ্ঞ হয়ে বেঈমান হবে, নাস্তিক হবে, এটাই মানব জাতীর চূড়ান্ত পরিণতি- তোমাদের এই ধারণা ঠিক নয়। إِنِّي أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُون আমি জানি ঐ বিষয়গুলিও, যা তোমরা জান না।
আল্লাহ পাক পরওয়ারদিগারে আলম ফেরেশতাদের আপত্তি সত্ত্বেও فَعَّالٌ لِمَا يُريْدُ আল্লাহ যা চান তাই করেন لَا يُسْئَلُ عَمَّا يَفْعَلُ আল্লাহর কর্ম সম্পর্কে আল্লাহ কারো কাছে জিজ্ঞাসিত নন। وَهُمْ يُسْئَلُوْنَ আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আল্লাহর কাছে জিজ্ঞাসিত হবো। আপনারা সকলে অবশ্যই জানেন যে, প্রত্যেকেই আমরা নিজ নিজ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আল্লাহর কাছে জিজ্ঞাসিত হবো অবশ্যই। আপনারা নামায পড়তে আসছেন। বলুন, কোন দুষ্ট ব্যাক্তি যদি অজু না করে মসজিদে ঢুকে। হতে পারে না? কেও যদি এরকম দুষ্টামি করে যে, অজু করল না। মসজিদে ঢুকল, বসল, বয়ান শুনল, সুন্নাত পড়ল, ফরজ পড়ল, চলে গেল। মনে মনে বলল, দিলাম তো ইমাম সাহেবকে ঠকিয়ে , অজু ছাড়াই নামায পড়ে আসলাম। এতে সে কি ইমাম সাহেবকে ঠকালো, না সে নিজেকেই কার্যত ঠকালো ? তারে কেমনে ঠকাইলো? কখন? সে তো ধরা পড়লো না, আইনে-আদালতে, বিচারে-সালিসীতে, কোর্ট-কাচারীতে, থানায়, বাড়ীতে, কোথাও তো সে ধরা খেলো না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যে, কাল কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহর সামনে এই অজু ছাড়া নামাযের জন্য তাকে অবশ্যই জবাবদেহি হতে হবে। তাহলে প্রমাণ হলো, ইমাম সাহেবকে নয়, সে নিজেকেই নিজে ঠকালো ভয়ানকভাবে।
আল্লাহ পাক বানালেন وَعَلَّمَ آدَمَ الْأَسْمَاءَ كُلَّهَاএর পর হযরতে আদম আ: কে শিখালেন দুনিয়ার সমস্ত প্রয়োজনিয় মাখুলাকাতের নাম, ধর্ম, বৈশিষ্ট। ثُمَّ عَرَضَهُمْ عَلَى الْمَلَائِكَة তারপরে সেই গুলোকে আবার ফেরেশতাদের সামনে রাখলেন। বললেন যে, এই নাও এটা তোমাদের সিলেবাস।
একটু দেখে নাও أَنْبِئُونِي بِأَسْمَاءِ هَؤُلَاءِ তোমরা এইটা দেখে দেখে বল দেখি, এই কোনটা কোন কাজের? ফেরেশতারা বলল سُبْحَانَكَ হে আল্লাহ, তুমি তো পূত পবিত্র। لَا عِلْمَ لَنَا إِلَّا مَا عَلَّمْتَنَا তুমি আমাদেরকে যতটুকু শিখিয়েছ ততটুকু জানি, এর বেশি জানি না। إِنَّكَ أَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوْبِ সমস্ত গায়েবের ব্যাপারে তুমি আল্লাহ জান, আমরা জানি না। তখন আল্লাহ তায়ালা বললেন- قَالَ يَاآدَمُ ফেরেশতাদেরকে দাঁড় করিয়ে রাখলেন সামনে সবক জিজ্ঞেস করলেন আদম আ. কে يَاآدَمُ হে আদম, أَنْبِئْهُمْ بِأَسْمَائِهِمْ এই সব কিছুর নাম বল, ধর্ম বল, বৈশিষ্ট বল গুণাগুণ বল। فَلَمَّا أَنْبَأَهُمْ بِأَسْمَائِهِمْ যখন আদম (আ.) ফেরেশতাদের সামনে সবক শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুনিয়ে দিলেন। তখন আল্লাহ পাক ফেরেশতাদের সম্বোধন করে বললেন- أَلَمْ أَقُلْ لَكُمْ إِنِّي أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ আমি কি তোমাদের বলিনি যে, আমি যা জানি তোমরা তা জান না? إِنِّي أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ এরপর আল্লাহ পাক ফেরেশতাদের বলেন: قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ যেহেতু তোমরা পরাজিত হয়েছ, ইলেমে তার সাথে পারনি, তোমাদের জ্ঞানের পরিধি আদমের ইলেমের পর্যন্ত নই, এই জন্য اسْجُدُوا لِآدَمَ আদমকে সিজদা কর। فَسَجَدُوا সকলেই অবনত মস্তকে আদমকে সম্মান সূচক সিজদা করলেন। হযরতে জিবরিল আ. হযরতে মিকাঈল আ. হযরতে আজরাঈল আ. হযরতে ইসরাফিল আ. এই চার হলেন ফেরেশতাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানি সত্ত্বা। এরাসহ ফেরেস্তাকুল হযরত আদম (আ.) সিজদা করলেন । সুবহানাল্লাহ!
আদম আ. কে আল্লাহ তাআলা জান্নাতে পাঠালেন। কোথায় পাঠলেন? يَاآدَمُ اسْكُنْ أَنْتَ وَزَوْجُكَ الْجَنَّةَ হে আদম! তুমি তোমার বিবিসহ জান্নাতে থাক। وَكُلَا مِنْهَا رَغَدًا حَيْثُ شِئْتُمَا সেখানে তোমরা পানাহার করো যা মন চায়, তার সবকিছু। وَلَا تَقْرَبَا هَذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ الظَّالِمِينَ তবে, খবরদার একটা নিষিদ্ধ বৃক্ষ আছে, তার ফল খাবে না। যদি খাও তাহলে কিন্তু সীমালঙ্ঘনকারী হয়ে যাবে।
আদম-হাওয়া জান্নাতে থাকতে থাকলেন । বানাইলেন إِنِّي جَاعِلٌ فِي الْأَرْضِ خَلِيفَةً দুনিয়ার জন্য প্রতিনিধী। পাঠালেন জান্নাতে। কেন পাঠালেন? মুফাসসিরীনে কেরাম বলেন, যে আল্লাহ পাক আসলে মানব জাতিকে যেহেতু শ্রেষ্ঠ জাতিরূপে বানিয়েছেন এই মানব জাতির আসল ঠিকানা হলো জান্নাত। আমাদের আসল ঠিকানা কোথায়? জান্নাত। সুবহানাল্লাহা! যেতে চাই না আমরা? যেতে চাই ? অবশ্যই আমরা সকলে জান্নাতে যেতে চাই । তো ঈমান নিয়ে না বেঈমানী নিয়ে? বেঈমানী নিয়ে কি জান্নাতে যাওয়া যাবে? কখনো না, বরং ঈমান নিয়েই যাব। এখন জান্নাতের কথা এক লক্ষ বা দুই লক্ষ পয়গাম্বর আমাদেরকে শোনান। আমরা শুনছি, মানছি। কিন্তু দেখি তো নাই । এই জন্য আদম আ.কে আমাদের সর্বপ্রথম পিতা-মাতাকে আল্লাহ পাক বানানের পরে জান্নাতে রাখছেন। যেন তিনি দুনিয়াতে এসে সাক্ষি দিয়ে যান যে আমি প্রথম মানুষ, সর্বপ্রথম সম্মানিত ফেরেশতাদের মাধ্যমে জান্নাতে থেকে আসছি, জান্নাত নিজ চোখে দেখে আসছি, ভোগ করে আসছি। তো সাক্ষি হয়ে গেল।
হযরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) জান্নাতে থাকতে থাকলেন। শয়তানের সইল না এটা। সে ধোঁকা দিতে থাকল। هَلْ أَدُلُّكَ عَلى شَجَرَةِ الْخُلْدِ وَمُلْكٍ لاَّ يَبْلَى আদম ও হাওয়াকে শয়তান বলল যে, একটা গাছ দেখাব নাকি ? যেটা খাইলে আর জীবনেও জান্নাত থেকে বের হতে হবে না। :وَقَاسَمَهُمَا إِنِّي لَكُمَا لَمِنَ النَّاصِحِينَ এবং কসম খেয়ে বলল: আমি তোমাদের ভালো চাই। আমি তোমাদের কল্যাণ চাই। তাহলে সর্বপ্রথম এই জগতের মানুষের সামনে যে কসম খাইছিল, যে আমি তোমাদের ভালো চাই, সে কে ছিলো ? শয়তান। আসলে কি সে তাদের ভালো চেয়েছে? চাইলো খারাপ ও অকল্যাণ, কিন্তু বললো ভালো ও মিথ্যা কসম। চেয়েছে খারাপ, বললো ভালো।
আল্লাহ পাক আদম আ. কে দুনিয়াতে পাঠালেন। এই আছিল করে পাঠাইলেন। মা হাওয়া আ. কে পাঠাইলেন। আরাফার ময়দানে তারা সাড়ে তিন শত বছর ঘুরাফেরা করার পর মিলিত হলেন। এর পরে উনাদের মাধ্যমে আল্লাহর কুদরতের দ্বারা-
আল্লাহ বলেন, আমি যাকে চাই ছেলে দেই। যাকে চাই মেয়ে দেই। যাকে চাই উভয়টা দেই। যাকে চাই বঞ্চিত করি। সব কার হাতে? কার হাতে বলুন? অবশ্যই আল্লাহর হাতে। আদম আ. মা হাওয়া আ. এর পরে আল্লাহ পাক জুড়ায় জুড়ায় সন্তান দিতে থাকলেন। কেমনে কেমনে ?একটা ছেলে একটা মেয়ে। এখনো তো মাঝে মাঝে এরকম জমজ সন্তান হয়। এরকম জমজ সন্তান একটা ছেলে একটা মেয়ে এই বৎসর।পরের বৎসর আবার এখানে একটা ছেলে একটা মেয়ে। এই ছেলে এই মেয়ে।এই ছেলে এই মেয়ে। আল্লাহ পাক কি করলেন?তখনকার জন্য দুনিয়া আবাদের কল্পে এই ভাই বোন এরা। এক পেটের না দুই বারের। এই ভাই বোনের মাঝে বিবাহ বৈধ করে দিলেন। এই ছেলে এই মেয়েকে বিয়ে করবে। এই ছেলে এই মেয়েকে বিয়ে করবে। এইভাবে যখন আস্তে আস্তে আদম সম্প্রদায় বেড়ে গেল। তখন হুরমত লাগিয়ে দিলেন। যে ভাতিজী বিবাহ করতে পারবেনা। ভাগিনী বিবাহ করতে পারবেনা। বোন বিবাহ করতে পারবেনা। চৌদ্দ জন এক লাগিয়ে দিলেন।
এভাবে আমারা দুনিয়াতে আসলাম। প্রথম আদম, প্রথম মানুষ, প্রথম নবী। বলেন সুবহানাল্লাহ। প্রথম আদম, প্রথম মানুষ, প্রথম নবী। এটা কোন যায়গার বক্তব্য বলেন ? বলেন কোন যায়গার কথা? কোরআনের কথা।
শিক্ষা সিলেবাসে যে কাতার ধরে বান্দর এরপর হুনুমান এরপর শিপাঞ্জি, বনমানুষ, এরপর মানুষ। কোন পর্যালোচা ছাড়া এটা দিয়ে দিল। যে দেশের ৯০% মানুষ মুসলমান। সে দেশে এই শিক্ষ সিলেবাস জারি করে দিল। এটা কুরআন বিরোধী হইল কি হলো না? বলেন? হল কি হল না? যদি হয়ে থাকে। আবার বলে দিল যে, সাম্প্রদায়িক লোকেরা মৌলবাদীরা এই আধুনিক শিক্ষা সিলাবাসের বিরুদ্ধে লেগে গেছে। বলেন: এটা কি মৌলবাদীদের লাগা, না কুরআন যারা বিশ্বাস করে তাদের সকলের কথা। যদি কারো কথা না হয়ে থাকে। যে না আমাদের এটা কথা না। আমরা বান্দরের ঘরেই হয়ছি।তাহলে বলেন । হাত তুলেন দেখি? বান্দরের পোলা থাকলে হাত তুলেন। আছেন? অসুবিধা কি? ডারইন তো বলেছে যে আমরা বান্দরের ঘরের থেকে হয়েছি। হাত তুলেন। আমরা তো আদমের সন্তান। আমরা কার সন্তান? আদম আ. এর সন্তান। তাহলে আমরা যদি আদম আ. এর সন্তান হয়ে থাকি। যারা বিভ্রান্ত করে মানুষকে এই শিক্ষা সিলেবাস দিয়ে আমাদের প্রজন্মকে। আমাদের প্রজন্মকে বেইমান বানানোর যারা চক্রান্ত করতেছে তারাই মূলত সড়যন্ত্র করছে। আমরা সড়যন্ত্র করছিনা।
আরও পড়তে পারেন-
- প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের বিবাহ্ সম্পর্কে শরয়ী বিধান
- ইসলামের আলোকে নারীর কর্মপরিধি
- সালাম: উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন
- বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ: বাস্তবতা ও অপপ্রচার
- সকালের ঘুম যেভাবে জীবনের বরকত নষ্ট করে
আপনার সিলেবাসের কারণে আমরা কুরআন ছেড়ে দিব? আপনার সিলেবাসের আমরা সাভাবিক লজিক ছেড়ে দেব? ডারইনতার এই মতবাদের উপর ডারইন নিজেও বিশ্বাসি ছিলেন না।এই মতবাদের উপর ডারইন নিজেও বিশ্বাসি ছিলেন না। বর্তমান বিজ্ঞানও একথা বলেন না। আমাদের যে ডি এন এ এর যে ধারণা। এই ডি এন এ ধারণা একথা বলে না। যে অন্য কোন প্রাণী থেকে মানুষ হওয়া সম্ভব। তাহলে এটা শিক্ষা সিলেবাসে দিলেন কেন? আপনারা বলেন যে শুধ ধর্মান্ধরা চাই কোন অগ্রগতি। শুধু ধর্মান্ধরাই এর বিরোধীতা করছে? আমার কাছে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে সকল ক্লাসের সিলেবাস। ক্লাস তৃতীয় শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত সকল সিলেবাস আমার কাছে আসছে। আমি গত জুমায় ইচ্ছা করেই আলোচনা করিনি। এই জন্য যে আমি অক্ষরে অক্ষরে দেখে দেখে তার পরে আলোচনা করতে পারি। যে কেও একথা বলতে না পারে যে, শুধু ধর্মান্ধারাই লেগেছে। এটা শুধু ধর্ম রিরুধী সিলেবাস নয়। এটাতো সভ্যতা বিরুধী সিলেবাস। এখানে কোন মব-বাবা আছেন? বলেন: বড় সন্ধিক্ষণে আপনার একটা ছেলে আছে একুশ বছরের। আপনার একটা মেয়ে আছে আঠারো বছরের। তাদেরকে সামনে রেখে ষষ্ঠ শ্রেণীর বইয়ে যৌন শুড়শুড়ি মূলক যে কথাবার্ত বলা হয়েছে। এই বয়স সন্ধিক্ষণে ছেলে-মেয়ের বয়স শরীরের যে পরিবর্তন আসে। সে পরিবর্তনের আলোচনা করা হয়েছে। আমি জানি এখানে প্রশাসনের লোকজন আছেন। আমি জানি এখানে সরকারি কর্মকর্তারা আছেন। আমি জানি এখানে সর্বস্তরের লোকজন আছেন। একজন মানুষ দাঁড়ান যে আমি আমার সন্তানের হোমওয়ার্কে একথাগুলো অকপটে বলতে পারব। কে আছেন? দাঁড়ান। দাঁড়ান।একজন মানুষ দাঁড়িয়ে বলেন যে আমি আমার ষষ্ঠ শ্রেণীর পড়ুয়া দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে-মেয়েকে বসে বসে একথাগুলো বলতে পারব যে তোমার যখন বয়স বাড়বে তখন তোমার ধীরে শরীরের গঠন পরিবর্তন হতে থাকবে। তোমার এখানে পশম গজাবে। তোমার ওখানে ফুলে যাবে। এই হবে সেই হবে। ঐটা শক্ত হবে। এটা নরম হবে। কে বলতে পারবেন? বলেন। আছেন কেও? তাহলে আমাদের প্রজন্মকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?
গল্পের ছলে লিখা হচ্ছে। “তুমি একজন স্বাধীন মানুষ যা চাও তাই করতে পারবে। যদি অন্যের ক্ষতি না হয়” বুইঝেন“তুমি যা চাও তাই করতে পারবে। যদি অন্যের ক্ষতি না হয়” কথা বুইঝেন। তাহলে এই পাঠ পড়ে আপনার সন্তান যদি একা একা ঘরে বসে বসে মদ, হিরোয়িন, গাজা সেবন করে। তাহলে কি বাংলাদেশের অন্য কোন মানুষের ক্ষতি হবে? হবে? না। কারো কোন ক্ষতি হবেনা। তাহলে মদপান হালাল করে দেওয়া হলো।
দুইজন ছেলে-মেয়ে যদি যেমনভাবে পশ্চিমা দেশগুলিতে হয়। বুঝাপরার মাধ্যমে নিজেরালিপ্টুগেদারকরে। তাহলে অন্যের ক্ষতি হবে? না কারো কোন ক্ষতি হবেনা। আমাদের দিপু মনি আপা নিজেকে অনেক বড় বিজ্ঞানি মনে করে এই সমস্ত সিলেবাস দিয়ে একটা গলি দিয়ে দিয়েছেন। যে ধর্মান্ধরাই এই সিলেবাস পেছনে লেগে গেছে। ধর্মান্ধরা লাগে নাই। মানবতা বিরোধী এই সিলেবাস বাংলাদেশে চলতে দেয়া যাবে না। তাহলে ইন্ডিপ্রিজিয়াললি২৩মি.আমার ছেলে আপনার ছেলে। আমার মেয়ে আপনার মেয়ে নিজেকে স্বাধীন সত্বা মনে করে মদ খাওয়া শুরু করবে। আমিতো আমার টাকাই আমার ক্ষতি করি অন্যের তো কোন ক্ষতি করি না। এইটা বলে মদ খাওয়া শুরু করবে।
আর স্বরাষ্টমন্ত্রী কী বলেন। দেখেন. আমার কাছে কী আছে ৩০শে অক্টোবর ২০২২ইং দুই মাসও হয়নি। স্বরাষ্ট মন্ত্রী কী বলেন? মাধক নিয়ন্ত্রন না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাচাঁতে পারব না। (বাংলাদেশ স্বরাষ্ট মন্ত্রী) স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন- যে তুমি একা একা খাইলেও এটা যদি নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে। এখন স্বরাষ্ট মন্ত্রীর কথা মানব? না আপা অপনার কথা মানব? আপনার সিলেবাস পড়ে আমরা নিজে নিজে আসক্ত হয়ে যাব মদে। না স্বরাষ্ট মন্ত্রীর বক্তব্য মানব? বলেন কারটা মানব? স্বরাষ্ট মন্ত্রীর বক্তব্য মানব।
আপনাদের মত বিদেশের পদে২৪মি বেশিদিন টিকে না। মনে রাইখেন! আমাদের প্রাইমিনিস্টার অত্যন্ত সচেতন। তিনি লতিফ সিদ্দিকী মাফ নাই। মনে আছে কি না আপনাদের? পঞ্চাশ বছর আওমালীগের জন্মলগ্ন থেকে বঙ্গবন্ধুর সাথে রাজনীতি করা মানুষ। যখন সে ধর্মীয় অনুভূতিতে করেছে। হজ্ব নিয়ে কথা বলেছে। তাও দেশের বাইরে। তার এক কাপড়ে মন্ত্রীত্ব থেকে বের হয়ে যেতে হয়েছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজের দলের শক্তিশালি সদস্য হওয়া সত্ত্বেও যুবদল সভাপতিকে মাফ করেন নাই। আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী টাকলা মুরাদকে মাফ করেন নাই। অসভ্যতা অশ্লীলতার কারণে টাকলা মুরাদকে ক্ষমা করেন নাই। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্রাটকে সহ্য করেন নাই। আপন পর চিনেন নাই। আপনি যদি অন্য কোন ধর্মের অন্য কোন দেশের এজেন্ডা নিয়ে আমাদের দেশের কোমলমতি মানুষের মন মানসিকতাকে ধ্বংস করতে চান। দিপু মনি আপু আপনি জেনে রাইখেন আপনাকেও আমাদের মানানীয় প্রধানমন্ত্রী মাফ করবেন না। আপনাকেও মাফ করবেন না। প্রত্যেকটা পৃষ্ঠা পৃষ্ঠার জবাব দিতে হবে। আপনি বলেন- একটা ভুল হয়ে গেছে। দুইটা ভুল হয়ে গেছে। একটা দুইটা ভুল হই নাই। একটা অসভ্য সিলেবাস আমাদের কোমলমতি মানুষের উপরে চাপিয়ে দিয়েছেন।
বাংলাদেশর একটি ধর্মপরায়ন জাতি। এদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ মহিলারাও আমাদের মত মানুষ দেখলে মাথায় কাপড় দেয়। এই দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ খৃষ্টান তাদেরও পারিবারিক স্টাকচার আছে। আছে কি না বলেন ? এই দেশটা ধর্ম পরায়ন দেশ। ইউরোপ কান্ট্রির মত উলঙ্গ দেশ না। উলঙ্গপনা আর জারজ সন্তানের দেশ না। আমাদের দেশের এখনো ৯৯% সন্তান বৈধ সন্তান জন্ম নেয়। জারজ জন্ম নেয় না। আমাদের দেশে কোন নায়কও যদি গোপনেও কোন বিয়ে করে। আর তার সন্তানের সংবাদ পাওয়া যায়। তখন তাকে লিগেলভাবে জাতির সামনে বলতে হয় যে কোন জারজ সন্তান নই । আমার এই সন্তান ইসলামী শরীয়া মতে আমাদের বৈধ বিবাহের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে।যে দেশ থেকে আপনি এই সিলেবাস আমদানি করতে চাচ্ছেন, সে দেশের শতকরা ৬০% ছেলে-মেয়ে জারজ। আমাদেরকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করাইতে পারবেন না। আমাদের দেশটা ধ্বংস হয়ে যাক। আমাদের দেশের কৃষ্টি কালচার ধ্বংস হয়ে যাক। আমাদের দেশের সভ্যতা সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাক। এদেশের ১৭ কোটি মানুষ কখনো তা হতে দেবে না। হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সকল জাতি ধর্ম নির্বিশেষে। আপনারা ধর্মনিরপেক্ষতার জিকির তুলেন। ঢোল বাঝান। ধর্মনিরপেক্ষতা এইটা নয়, যে একটা ধর্মকে তিলে তিলে শেষ করে দেয়া হবে। ধর্মনিরপেক্ষতার এই জিনিসের নাম যে সকলে সমানভাবে সম্মানের সাথে সব ধর্ম পালনে স্বাধিনতা পাবে। সকল ধর্মকে সম্মান করা হবে। কোন ধর্মকে আঘাত করা হবে না।
বলেন: পর্দা আমাদের ধর্মের বৈশিষ্ট কি না? দাড়ি, টুপি আমাদের ধর্মের বৈশিষ্ট কি না? আপনি সিলেবাসের মধ্যে ঘটনা লিখেন। যে রেল ঘাড়ির নিচে এক মহিলা পড়ে গেছে। এর পরে পর্দা নষ্ট হবে দেখে সে তার ছেলে অন্য কাওকে তাকে ধরতে দেই নাই। পরে সে রেলের চাকার সঙ্গে পিষ্ঠ হয়ে গছে। পর্দাকে ব্যঙ্গ করলেন। বলেন, কোন মাওলানা সাহেব ফতুয়া দিয়েছেন? যে এই অবস্থায় এই মানুষকে উদ্ধার করা উঠাইয়া নেয়া ইসলাম ধর্মে নিষেধ। কোন মাওলানা সাহেব ফতুয়া দিয়েছেন? তাহলে ব্যঙ্গ করেন ধর্মকে। ব্যঙ্গ করেন ধর্মের কর্ণধারদেরকে মুফতিদেরকে। কত বড় সাহস আপনার! আমরা তো বলি : একটা লঞ্চ যদি ডুবে যায়। কোন মা যদি পানিতে হাবুডুবু খেতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে যদি তার গাঁয়ের সব কাপড় সড়ে যায়। তখন যদি পুরুষরা তাকে দেখে। তাহলে ঐ অবস্থায় (উলঙ্গ অবস্থায়) তাকে উদ্ধার করা, তাকে পানি থেকে উঠিয়ে আনা সকলের উপর ফরজ আইন হয়ে যায়। যদি না উদ্ধার করে। তাহলে নদীতে যত মানুষ ছিল সকলে গুনাগার হবে। আমার ধর্ম তো আপনি এটা বলেন। কোথায় পাইলেন? যে পর্দার কারণে পিষ্ঠ হয়ে গেছে, কাওকে ধরতে দেয় নাই। কোথায় পাইলেন?
পিয়ারে দোস্ত আযীযো! অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নাস্তিক মুরতাদদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারের বিশেষ বিশেষ কিছু জায়গায় গাপ্টিমারা কিছু নাস্তিক মুরতাদ বসে গেছে। যারা এই সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে চায়। যারা এদেশের শান্তি শৃঙ্খলাকে বিগ্নিত করতে চায়। আমাদের এদেশের ইতিহাস হাজার বছরের ইতিহাস। পারিবারিক কৃষ্টির ইতিহাস। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, খৃষ্টান একসঙ্গে ভাই ভাই হিসেবে বসবাসের ইতিহাস। একি সংস্কৃতিতে বিশ্বাসীর ইতিহাস। কোন হিন্দু একশত হিন্দু পরিবারের মাঝে বিয়ে ছাড়া কোন দম্পতি পাবেন? খৃষ্টানদের মাধ্যে পাবেন? বৌদ্ধদের মধ্যে পাবেন? মুসলমানের মধ্যেও নাই। তাহলে একটা কৃষ্টি নিয়ে আমরা চলি। একটা আদর্শ নিয়ে চলি। একটা শালিনতা নিয়ে চলি। একটা ভদ্রতা নিয়ে চলি। ঐ ভদ্রতা বিবর্জিত সিলেবাস এটা ধর্ম বিরোধী সিলেবাস নয় শুধু। এটা ভদ্রতা, সভ্যতা রিরোধী সিলেবাস। এই সিলেবাসকে সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে।
আমার প্রশাসনের ভাইয়েরা! আমি খুব খুশি হয়েছি যে উনারা ব্যপকভাবে উপস্থিত আছেন। আপনারা যেমনিভাবে প্রশাসনিক দায়িত্বরত তেমনিভাবে আপনি বাবাও। আপনার স্ত্রী এদেশের কোমলমতি শিশুদের মা। আপনি হলেন বাবা। আপনার কাছে কি ভালো লাগবে? যদি আপনার সন্তান ইউনিবার্সিটি থেকে একটি মেয়ে যেহেতু তার ভালো লেগেছে ধরে এনে আপনার ড্রইনরুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। আর আপনি জিজ্ঞেস করেন বাবা এটা কে? সে বলে বাবা এটা আমার গার্লফ্রেন্ড।
আমি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞেস করতে চাই যে, এটা কি আপনাদের ভালো লাগবে?এরা তো এটাই চাই। এটাই তো চাই। লিঙ্গ বিভেদ ভুলিয়ে দিতে চাই। এরা বলে তুম যখন পনের ষোল বছর হয়ে গেছে। তখন তুমি নিজেকে ছেলে মনে করলে ছেলে। নিজেকে মেয়ে মনে করলে মেয়ে। চাইলে মেয়ের পোশাক পড়তে পার। চাইলে ছেলের পোশাক পড়তে পার। চাইলে বান্দরের লেজ লাগাইতে পার। শিক্ষার পাঠ্য বইয়ে এটা থাকা উচিৎ? নাকি ব্যক্তিত্য থাকা উচিৎ? ব্যক্তিত্য থাকা উচিৎ। তুমি মেয়ে তুমি নারী তোমার একটা দায়িত্ব আছে তোমার একটি ব্যক্তিত্ব আছে। তুমি পুরুষ তোমার একটা সামাজিক দায়িত্ব আছে। তোমার একটি ব্যক্তিত্ব আছে। আল্লাহ পাক পরওয়ারদিগারে আলম দুটি জিনিস নারী-পুরুষ কে আলাদা আলাদা অবয়ব দিয়ে, তাদের মনমানসিকতা, দিয়ে তাদের শরীরের গঠন দিয়ে, সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে বানাইছেন। কেন ভিন্ন করে বানাইছে? কারণ সমাজে তাদের উভয়ের কন্টিমিসন ছাড়া এই সমাজ সুন্দর হতে পারে না। এই সমাজ সুন্দর হতে পারে না।
একটা সাইকেলও যদি আপনি চালান। এইটার মাঝে পেডেল আছে, হেন্ডল আছে, চেইন আছে, সীট আছে। এটার তরতীব (বিন্নাশ) আছে। একটা নিয়ম আছে। পেডল নিচে থাকবে পেডেলে পা রাখার জন্য। হেন্ডল উপরে থাকবে হেন্ডলে হাত রেখে ব্যালেঞ্চ জন্য। এখন আপনি বললেন যে, না আমি সাইকেল বানাবো আমার মত করে। আমি পেডল দিব উপরে হাতে চালানোর জন্য। আর হেন্ডল দিব নিচে পায়ে ব্যালেঞ্চ করার জন্য। তাহলে কি হবে ? না হবে না। এই সাইকেল কি রাস্তায় চলবে ? না চলবে না। কেন চলবে না? কি দেয়া যাবে না? দেয়া তো যাবে। ঘুরিয়ে দিলেই চলল। তাহলে পা দিয়ে যদি ব্যালেঞ্চ করেন আর হাত দিয়ে যদি ঘুরান তাহলে কি চলবে? না চলবে না। তাহলে একটা সাইকেল যদি তারা আপন স্থান থেকে পার্সগুলো বেশকম করলে না চলে। তাহলে মানব জাতিকে পরবর্তি জেনারেশনকে সত্যিকার সুষ্ঠ মানবিক বিকাশে অব্যাহত রাখার জন্য নারীর যেমন প্রয়োজন, পুরুষেরও তেমন প্রয়োজন ব্যতিক্রমধর্মি কাজ। মাকে সন্তান ধারণ করতে হবে। বাবাকে এই মা সন্তান ধারন করা অবস্থায় তার শরীরের যে অবস্থা, তার ফিটনেসের যে পরিবর্তন ছন্দপতন, উইটনেস। তার দিকে পুরা খেয়াল রেখে তাকে এগিয়ে নিতে হবে। তাকে আগ্রহ দিতে হবে, উৎসাহ দিতে হবে শক্তি দিতে হবে, শান্তনা দিতে হবে। যে আরেকটু ধৈর্য্য ধর, একটু কষ্ট সহ্য কর, আমাদের মাঝে নতুন অতীথি আসতেছে। লাগবে না? লাগবে না? লাগবে। এখন সমান অধিকার, যদি মা বলে যে আমি এক সপ্তাহ আমার কাছে রেখেছি, লাথি খেয়েছি। এবার তুমি নিয়ে যাও আগামি এক সপ্তাহ তোমার কাছে রাখ, তুমি লাথি খাও। তাহলে কি হবে ? হবে ? না হবে না। প্রত্যেকটা জিনিসের একটা মাপ আছে।
আপনি যে উভয় লিঙ্গ বানিয়ে ফেলছেন শিক্ষার মাধ্যমে, স্লোপ্লয়জিংয়ের মাধ্যমে, আপনি তো জাতি ধ্বংস করে দিবেন। এটা ইসলাম বিরোধী না শুধু। এটা তো জাতি বিধ্বংসি পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা চলতে দেয়া যায় না। যত তাড়াতাড়ি মাননীয় প্রধান মন্ত্রীসহ সকলে এটা বুঝবেন, তত তাড়াতাড়ি দেশের জন্য মঙ্গল হবে। সেতু মন্ত্রী মাননীয় উবাইদুল কাদের গতকালকে বলছে : পদ পদবি আছে, পিছে পিছে মানুষ ঘুরে, নিজে ধরাকে স্বরা জ্ঞান করেন। পদ চলে গেলে সালাম দেয়ার মানুষ পাবেন না। এটা সেতু মন্ত্রীর বক্তব্য আমি শুনিয়ে দিলাম। কাজেই পদ পদবি পাইছেন এটাকে সুব্যবহার করেন। দেশের জন্য, দেশের মানবতবার জন্য, দেশের আগামি প্রজন্মের জন্য, দেশের কৃষ্টি কালচারের জন্য আক্বিদা বিশ্বাসের জন্য এটাকে কাজে লাগান। অপচেষ্টা করবেন সালাম দেয়ার লোক পাইবেন না। লতীফ সিদ্দিকীকে এখন আর কেও সালাম দেয় না। সম্ম্রাটকে কেও সালাম দেয় না। যুবদলের সভাপতিকে এখন আর কেও সালাম দেয় না। পাপিয়াকে কেও সালাম দেয় না। কাজেই ফাক ফুকর দিয়ে পাপিয়ারা এগিয়ে যায়। দিপুরা এগিয়ে যায়। সতর্ক করে দিচ্ছি এই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ শুধু মুসলমান নয়। তোমরা যেই সিলেবাস দিয়েছ, সভ্যতা বিরোধী সিলেবাস, মানবতা বিরোধী সিলেবাস, অসভ্য সিলেবাস এটা কোন ধর্মের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এটা শুধু ইসলাম ধর্ম বিরোধীই নয়। এটা মানবতা বিরোধী।
কাজেই সবিনয় অনুরুধ আমাদের, এই পাঁচ হাজার মুসুল্লীর পক্ষ থেকে আবেদন। শুধু পাঁচ হাজার মুসুল্লীই নয়, আদম শুমারী লাগাও যদি চাও তাহলে হা না ভোট লাগাও। যদি ৯৯% ভোট এই সিলেবাসের বিরুদ্ধে না পড়ে তাহলে সে সিলেবাস নিয়ে পরে কথা বলবে। এই সিলেবাস আমাদের দেশের কৃষ্টি-কালচার, সভ্যতার সিলেবাস নয়। আমাদের দেশ পারিবারিক স্টাকচারকে রক্ষা করার দেশ। ছোট ছোট ঝুপটিতে বাস করে। মা নিয়ে বাবা নিয়ে বাস করে। রিক্সা চালায়, বাবাকে কাঁদে করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এটা সেই দেশ। এটা আদর্শের দেশ। এটা অশ্লীলতার দেশ নয়। অসভ্যতার দেশ নয়। জীব-জন্তুর দেশ নয়, যে অসুস্থ হইল আর তাকে বৃদ্ধশ্রমে পাঠিয়ে দিল। রিক্সা ওয়ালাও তার মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিতে চাই না। এটা সেই দেশ। কাজেই এদেশের একটা স্টাকচার আছে। সাংস্কৃতিক স্টকচার আছে। এই স্টাকচারের মূলে যে আঘাত করবে। পারত পক্ষে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ শত শত বৎসর ধরে যে কালচারে বিশ্বাসী, সেই কালচারের মূলে কুঠার আঘাত সহ্য করবে না। আমরা অত্যন্ত গুরুত্ত্বের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি। গভীরভাবে অধ্যয়ন করেছি। বর্তমান যে সিলেবাস এই বৎসর দেয়া হয়েছে। এটা মানবতা বিধ্বংসী সিলেবাস। আমাদের জাতীয় কৃষ্টি-কালচার বিধ্বংসী সিলেবাস। এই জন্য এই সিলেবাস বাংলার আপামর শিশুদেরকে পড়তে দেয়া যেতে পারে না।
আল্লাহ তা‘আলা পরওয়ারদিগারে আলম আমাদেরকে এই ব্যপারে শুধু মাত্র আমরা নই, মিম্বর থেকে নই, মুসুল্লিদের থেকে নই, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সর্বস্তরের জনগন, প্রশাসনিক কর্মকতাগণ, সভাই মিলে এই ব্যপারে সুচ্চার হতে হবে। এটা পরবর্তি প্রজন্মের বাঁচানোর ব্যপার। এটা পরবর্তি প্রজন্ম বাঁচবে কি বাঁচবেনা। এরা সভ্য থাকবে না অসভ্য হয়ে যাবে ।নিজে যদি নিজের ব্যপারে উদাসীন হয়ে যায়। নিজের পরিবারের প্রতি উদাসীন হয়ে যায়। সপ্তাহ ব্যাপি চাকরি করে, যা বেতন পায় ভারে গিয়ে শেষ করে দেয়। এই লোক দিয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা যাবে? স্বাধীনতা রক্ষা করা যাবে ? তাহলে স্বাধীনতার হুমকির মুখে দাঁড়াতে হলে সৎ সন্তান হতে হবে। কোন জারজ সন্তান দ্বারা এদেশের স্বকীয়তা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ত রক্ষা করা সম্ভব হবে না। যারা এই সিলেবাস করেছে বিদেশীদের ইঙ্গিতে করেছে। যাতে করে পরবর্তি প্রজন্মের সময় অটোমেটিকলি এদেশ অন্য কোন দেশের পদগ্রাজ্য হয়ে যায়।
আমরা এই সিলেবাসের ভিতরে স্বাধীনতা বিধ্বংসি গন্ধ পাচ্ছি। সুতারাং এই সিলেবাসকে সম্পূর্ণ বাতিল করে এই দেশ, জাতি ও উম্মাহর জন্য উপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন করে বিজ্ঞ ওলামাদের পরামর্শ নিয়ে, বুদ্ধিজিবীদের পরামর্শ নিয়ে, যাদের সঠিক মানবিক বিকাশ আছে তাদের পরামর্শ নিয়ে নতুন সিলেবাস প্রণয়ন করা হোক। আমরা জাফর ইকবালের পরামর্শ মানি না। সে তো নিজের জীবনে এক কাপ চায়ের স্বাধও পায়নি। তার চা তো সব গোঁফে খেয়েছে। কাজেই ওর তো হিতাহিত জ্ঞান থাকার কথা না। সে তো ডালের মজাও বুঝেনি, চায়ের মজাও বুঝেনি। তার এইগুলি সব গোঁফে খেয়েছে। সারা জীবন তো গোঁফধোয়া পানি খেয়েছে তুমি, বুঝবে কীভাবে- এদেশের মানুষের জন্য কোনটা কল্যাণ? একবার বলবে ভুল হয়েছে। আবার বলবে ঠিকই আছে। আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদের ভালোই চাই। কি ভালো চাও? এরা যৌনতায় হাবুডুবু খাক আর সব কিছু ছেড়ে দেক। বেওকুফ হয়ে যাক। মাদকাসক্ত হয়ে যাক। না তুমি চাইলেও এদেশের সর্বস্তরের জনতা তা চায় না। চাইলে তো একজন হলেও হাত উঠা তো। তোমার এই সিলেবাস প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশের এ টু জেড জনতা। কাজেই এই সিলেবাস চলবে না। আল্লাহ পাক পরওয়ারদিগারে আলম আমাদেরকে বুঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
শ্রুতি লিখনে- আজহারুল ইসলাম
জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া, উত্তরা, ঢাকা।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ