প্রশ্ন: ফিকহের সকল কিতাবে উল্লেখ রয়েছে যে, নামাযের নিয়ত তাকবীরের সাথে মুত্তাসিল হতে হবে। হাদিস শরীফে এর কোনো ভিত্তি আছে কি? তাছাড়া জুমআর নামাযের আখেরী ওয়াক্ত হাদিসের আলোকে কোন পর্যন্ত?
– মুহাম্মদ মুসলিম, চরবিভাগদী, কালকিনি, মাদারীপুর।
উত্তর: (১) নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হাদিসসমূহে তাকবীরের সাথে নিয়ত মুত্তাসিল হওয়ার বিষয়টির বর্ণনা সরাসরি পাওয়া না গেলেও রূপক অর্থে তাকবীরের আগে নিয়ত করার বিষয়টি কুরআন ও হাদিস উভয় দ্বারা প্রমাণিত।
তাছাড়া নামাযের নিয়ত তাকবিরের সাথে মুত্তাসিল হওয়ার যে কথা ইলমে ফিকহের নির্ভরযোগ্য কিতাবাদিতে বর্ণিত রয়েছে, তা ফিকহে শাফেয়ীর ভাষ্যমতে আবশ্যক হলেও ফিকহে হানাফির ভাষ্যমতে আবশ্যকীয় নয়, বরং মুস্তাহাব। তাকবিরের আগ মুহূর্তে নিয়ত করার মধ্যেই সতর্কতা বিদ্যমান।
আরও পড়তে পারেন-
- কাবলাল জুমা: কিছু নিবেদন
- দারিদ্র বিমোচনে এনজিওদের থেকে কওমি মাদ্রাসার সফলতা বেশি!
- হজ্ব-ওমরায় গেলে আমরা সেখান থেকে কী নিয়ে ফিরব?
- সমাজে পিতা-মাতারা অবহেলিত কেন
- সংঘাতবিক্ষুব্ধ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের সুমহান আদর্শ
(২) সিহাহ সিত্তাহসহ অন্যান্য হাদিস গ্রন্থে জুমআর আখেরী ওয়াক্ত সংক্রান্ত হাদিস পাওয়া যায় না। কিন্তু যোহরের আখেরী ওয়াক্ত সংক্রান্ত বর্ণনা পাওয়া যায়। তাছাড়া বিশিষ্ট মুহাদ্দিস ও তিরমিযী শরীফের গ্রন্থ প্রণেতা ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (মৃত্যু-২৮৯ হি.)সহ অধিকাংশ আহলে ইলম এ বিষয়ে একমত যে, যোহরের নামাযের ওয়াক্তই হলো জুমআর নামাযের ওয়াক্ত।
যোহরের আখেরী ওয়াক্তের বিষয়ে নির্ভরযোগ্য হাদিসের আলোকে ফিকহে হানাফির ভাষা হলো, মূল ছায়া ব্যতীত প্রত্যেক বস্তুর ছায়া তার দ্বিগুণ হওয়া পর্যন্ত যোহরের ওয়াক্ত অবশিষ্ট থাকে। (সূরা মায়েদা- ৬, সুনানে ইবনে মাযাহ- ৫৮, তাফসীরে কবীর- ৪/২৯৭, সহীহ বুখারী- ১/২, ফাতহুল বারী- ১/১৭, আশবাহ ওয়ান নাযায়ের- ১৪৯, বাহরুর রায়েক- ১/৪৭১, সুনানে তিরমিযী- ১/১১৬, শরহে মাআনিল আছার- ১/১১১, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া- ১/১০৭, জামেউত তিরমিযী- ১/৪০, দরসে তিরমিযী- ১/৩২০)।
উত্তর দিয়েছেন- আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন
মুফতি, মুহাদ্দিস, মুফাসসীর ও সহকারী পরিচালক-
জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ