Home ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন কুরআন-হাদিসে ইতিকাফ প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে

কুরআন-হাদিসে ইতিকাফ প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে

।। মাওলানা শহিদ উল্লাহ ।।

বিশেষ নিয়তে বিশেষ অবস্থায় আল্লাহ তাআলার আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে। ইতিকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্য সব কিছু থেকে আলাদা করে নেয়। ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়।

ইতিকাফের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভি (রহ.) বলেন, ‘মসজিদে ইতিকাফ হচ্ছে হৃদয়ের প্রশান্তি, আত্মার পবিত্রতা ও চিত্তের নিষ্কলুষতা; চিন্তার পরিচ্ছন্নতা ও বিশুদ্ধতা।

ফেরেশতাকুলের গুণাবলি অর্জন এবং লাইলাতুল কদরের সৌভাগ্য ও কল্যাণ লাভসহ সব ধরনের ইবাদতের সুযোগ লাভের সর্বোত্তম উপায়। এ জন্য রাসুল (সা.) নিজে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইতিকাফ পালন করেছেন এবং তার বিবিরাসহ সাহাবায়ে কেরামের অনেকেই এই সুন্নতের ওপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমল করেছেন।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা- ২/৪২ পৃষ্ঠা)।

পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইতিকাফ প্রসঙ্গ

পবিত্র কুরআনে হযরত ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর কথা উল্লেখ করে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো’। (সূরা বাকারা, আয়াত- ১২৫)।

ইতিকাফ অবস্থায় স্ত্রীদের সঙ্গে কী আচরণ হবে, এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফকালে স্ত্রীদের সঙ্গে মেলামেশা করো না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত- ১৮৭)।

আরও পড়তে পারেন-

হাদিস শরীফে ইতিকাফ প্রসঙ্গ

আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর অসংখ্য হাদিস ইতিকাফ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে। কয়েকটি হাদিস এখানে উল্লেখ করা হলো— ইবনে উমার (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন’। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নম্বর- ১১৭১)।

মদিনায় অবস্থানকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিবছরই ইতিকাফ পালন করেছেন। শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও রমজানে তিনি ইতিকাফ ছাড়েননি। আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফে কাটান।’ (বুখারি, হাদিস- ১৯০৩)।

ইতিকাফ একটি মহৎ ইবাদত। এ ইবাদত স্বেচ্ছায় পালনীয়। ইসলামী শরিয়তে বিনিময় দিয়ে ভাড়া করে ইবাদত করানোর সুযোগ নেই। টাকার বিনিময়ে ইতিকাফ করা ও করানো সম্পূর্ণ নাজায়েয। এভাবে ইতিকাফ করানোর মাধ্যমে মহল্লাবাসী দায়মুক্ত হয় না। (রদ্দুল মুহতার- ২/৫৯৫, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া- ১৭/১৭১)।

লেখক: ফাযেলে দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।