গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যারা অবৈধ ক্ষমতা হারিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়, তারা কখনোই গণতান্ত্রিক পন্থায় রাষ্ট্রক্ষমতায় ফিরে আসতে পারে না—এমন মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
শনিবার (২ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত “রক্তঝরা জুলাই-আগস্ট: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
সভায় মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “ইতিহাস বলে, গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো শক্তিগুলোর সামনে দুটি পথ খোলা থাকে—একটি হলো আত্মসমালোচনার মাধ্যমে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসা, আর অন্যটি হলো গোপন রাজনীতি ও সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় গ্রহণ করা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আওয়ামী লীগ এখনো প্রথম পথটি বেছে নেয়নি বরং দ্বিতীয় পথে পা বাড়ানোর লক্ষণ তাদের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে।”
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে কখনো গুপ্ত রাজনীতি বা সন্ত্রাসবাদ সফল হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। কিন্তু মানবতাবাদী গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো যদি নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয় কিংবা ভুল করে, তাহলে সেই সুযোগে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন ইস্পাত-কঠিন জাতীয় ঐক্য।”
১৯৮০ ও ’৯০ দশকের দমন-পীড়নের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের সময়ে অনেক বিরোধী দলীয় নেতা টিকতে না পেরে ঢাকায় এসে রিকশা চালিয়েছেন, হকার হয়েছেন। সেই সময়ের ত্যাগ ও সংগ্রামের কথা আজ বিস্মৃতপ্রায়। এখন অনেকেই নিজেদের ‘মাস্টারমাইন্ড’ দাবি করছেন—যারা এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের দাবিদার, ব্যর্থতার দায়ভারও তাদের নিতে হবে।”
রাজনৈতিক ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দুঃখজনকভাবে, প্রয়োজনের সময় বিএনপি-জামায়াত খুব দ্রুত ঐক্যবদ্ধ হয়, একই প্রতীকে নির্বাচনও করে। কিন্তু স্বার্থের দ্বন্দ্বে মুহূর্তেই একে অপরকে রাজাকার বা চাঁদাবাজ বলতেও তারা দ্বিধা করে না। এই দ্বিচারিতার ফলেই বাংলাদেশে ভবিষ্যতে সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির আশঙ্কা জেগে উঠছে।”
বক্তব্যের শেষাংশে মঞ্জু বলেন, “আমাদের আদর্শ, পথ আলাদা হতে পারে। কিন্তু আধিপত্যবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ