আর কয়েকদিন পর ১ সেপ্টেম্বর, ৪৮ এ পা দেবে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এর মধ্যে দলটি চার দফায় দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছে। কিন্তু বয়স অনুযায়ী দলটির কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল ১৬ বার হয়েছে ষষ্ঠবার। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলটির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে তৃতীয়বারের মতো খালেদা জিয়া চেয়ারপারসন এবং ভারপ্রাপ্ত থেকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব হন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিন বছর মেয়াদি এই কমিটির বয়স ইতোমধ্যে ৯ বছর পার হয়ে গেছে। ২০১৮ সালে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান।
২৪ এর জুলাই ছাত্রজনতার আন্দোলনে ৫ আগস্টে বিজয়ের পরের দিন ৬ আগস্ট নির্বাহী আদেশে মুক্ত হন দলটির চেয়ারপারসন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে মুক্ত পরিবেশে ফিরে এলেও দীর্ঘ গ্যাপে দলটির জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে কোনো ভাবনা বা কার্যক্রম দেখা যায়নি।
জানা গেছে, গঠনতন্ত্রে তিন বছর পর পর সম্মেলন করার কথা বলা হয়েছে। সেটি করতে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিল হওয়ার পর ৮ বছর পেরিয়ে গেছে। তবে ২৪ এর জুলাই আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতন হওয়ায় পরে খুব দ্রুত সময়ে একটা জাতীয় কাউন্সিল প্রত্যাশা করেছিল দলটির নেতারা। কিন্তু খুব সহসা আর কোনো কাউন্সিল হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না দলটির নেতারা। এমন প্রেক্ষাপটে তাদের মধ্যে এক প্রকারের হতাশার ছাপও দেখা যাচ্ছে।
ধারাবাহিক কাউন্সিল নিয়ে টক শো এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল গুলোর কাছে ছোড়া প্রশ্নে বিব্রত বিএনপির তরুণ নেতারাও। দেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক উত্তরণের মুক্ত সময়েও কেন বিএনপি জাতীয় কাউন্সিল হচ্ছে না? এমন প্রশ্ন রেখেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ‘ তিন বছর পর পর কাউন্সিল হওয়ার দলটির গঠনতন্ত্রে থাকলে এখন ৯ বছর যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে দলটি সাংগঠনিক শক্তি এবং নেতৃত্বের বিচক্ষণতার সংকটে পড়তে পারে। কারণ নিয়মিত কাউন্সিল হচ্ছে একটি সুস্থ দেহের রক্ত সঞ্চালনের মতো, রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হলে যেমন অঙ্গের কার্যক্রম ব্যাহত হয় তেমনি নিয়মিত কাউন্সিল না হলে দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
বিএনপি নেতারা বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির পক্ষে কাউন্সিল করা সম্ভব নয়। আগামীতে কবে বিএনপির সম্মেলন হবে তাও এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। তবে দায়িত্বশীল অনেকে বলছেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকে বলছেন, জেলা, মহানগর এবং থানা পর্যায়ে বেশ কয়েকটিতে কাউন্সিল হয়েছে , হচ্ছে। কার্যক্রম থেমে নেই। শূন্য পদে নতুন নেতৃত্ব আনছে দলটি।
১৯৭৮ সালে ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কাউন্সিল হয়। রাজধানী ঢাকার রমনা বটমূলের খোলা চত্বরে ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’ নামের এই নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।
দলটির দীর্ঘ পথ চলার ইতিহাস বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংঘাত, বিক্ষোভ, জনপ্রিয়তা আর চড়াই-উতরাইয়ের পেড়িয়ে আজ বিএনপি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। কয়েক দফায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা এই দলটির সাংগঠনিকভাবে শক্তি অর্জনের চেয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার কৌশলকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।
উন্নয়ন-উৎপাদনের রাজনীতিকে মূল প্রতিপাদ্য ঘোষণা করে ১৯ দফা কর্মসূচির আলোকে প্রতিষ্ঠার পাঁচ মাসের মাথায় ১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ২০০টি আসন লাভ করে। ১৯৮১ সালের ৩০ মে ভোরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যদের হাতে নিহত হন জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।। এরপর তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই দলের হাল ধরেন।
নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বিজয়ের মাধ্যমে ৯১-তে ক্ষমতায় আসে বিএনপি, প্রধানমন্ত্রী হন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো ফের প্রধানমন্ত্রী হন। বিরোধী দলের আন্দোলনের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বাস্তবায়ন করে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর ২০০১ সালের ১ অক্টোবর জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে। তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
১/১১-এর রাজনৈতিক পালাবদলের পর বিএনপিকে প্রচ- প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয় দলটির প্রধান খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানকে। পরে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেয়া নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপির ভরাডুবি হয়। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর অবস্থার কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাংগঠনিকভাবে আরো নাজুক অবস্থা তৈরি হয়। যে কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে কয়েক দফা আন্দোলনের ডাক দিয়ে ব্যর্থ হয় বিএনপি।
আরও পড়তে পারেন-
- প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের বিবাহ্ সম্পর্কে শরয়ী বিধান
- ইসলামের আলোকে নারীর কর্মপরিধি
- সালাম: উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন
- বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ: বাস্তবতা ও অপপ্রচার
- সকালের ঘুম যেভাবে জীবনের বরকত নষ্ট করে
বিএনপির ৬ কাউন্সিল
কাউন্সিলের ইতিহাস পর্যলোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৭৮ সালে ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কাউন্সিল হয়। ঢাকার রমনা বটমূলের খোলা চত্বরে ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’ নামের এই নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট জিয়া। ডা. বদরুদ্দেজা চৌধুরী হন প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব।
দ্বিতীয় কাউন্সিল হয় ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সেই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি আব্দুস সাত্তার চেয়ারম্যান এবং ডা. বদরুদ্দেজা চৌধুরী মহাসচিব হন।
আট বছর পর ১৯৮৯ সালের ৮ ও ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় দলটির তৃতীয় কাউন্সিল। সেই কাউন্সিলে খালেদা জিয়া চেয়ারপারসন এবং সালাম তালুকদার হন মহাসচিব।
১৯৯৩ সালের ১, ২ ও ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপি চতুর্থ কাউন্সিল করে। সেই কাউন্সিলে খালেদা জিয়া চেয়ারপারসন এবং আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া মহাসচিব হন।
সর্বশেষ ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর পঞ্চম কাউন্সিলে খালেদা জিয়া চেয়ারপরসন এবং খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন হন বিএনপির মহাসচিব।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলটির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে তৃতীয়বারের মতো খালেদা জিয়া চেয়ারপারসন এবং ভারপ্রাপ্ত থেকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব হন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিন বছর মেয়াদি এই কমিটির বয়স ইতোমধ্যে ৮ বছর পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান। তার নেতৃত্বে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি ৭টি আসন লাভ করে। আর সর্বশেষ ২৪ এর ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি।
দলের জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে যা ভাবছেন দলের নেতারা
গেলো ৯ আগস্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ড্যাব এর সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, একটি কথা প্রচলিত আছে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আলোচনা সভায় একটি কথা আসে। যে রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু নিজেদের ভিতরেই প্র্যাকটিস করে না। তারা কেমন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবে? কথাটি ঠিক- বেঠিক দুটোর মাঝামাঝি। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে হয়তো সম্পূর্ণভাবে একটি দলের ভেতরে সেই প্রক্রিয়াটি এখনো চালু হয়ে ওঠেনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। তবে অবশ্যই ড্যাবের কাউন্সিল প্রমাণ করবে, তাদের কথাটি সম্পূর্ণভাবে ঠিক নয়।
বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল ভাবনা নিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নির্যাতনে ঘরে থাকতে পারিনি, কাউন্সিল কোথায় থেকে হবে? এখন আমাদের সব এলাকা ভিত্তিক কাউন্সিলগুলো হচ্ছে, এগুলো শেষ হলে তারপরে জাতীয় কাউন্সিল হবে। এলাকাভিত্তিক শেষ হতে হবে তো, কাউন্সিলের প্রতিনিধি লাগবে না। নির্বাচিত প্রতিনিধি আসতে হবে। জেলা মহানগর বা বিভাগীয় পর্যায়গুলো শেষ হলে হবে জাতীয় কাউন্সিল। তবে জাতীয় নির্বাচনের পরে না আগে, সেটা জানি না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, যেকোনো সময় জাতীয় কাউন্সিলের বিষয়ে আলোচনা হবে। আলোচনা হলে তারপর সিদ্ধান্ত হবে। এটা নীতিনির্ধারকদের বিষয়। তারা যখনই মনে করবে তখনই সম্ভব এখন। একসময় তো খুব কঠিন অবস্থা ছিল। আমাদের কোনো কর্মসূচি বা এমনকি সিস্টেমেটিক সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতেই তো শেখ হাসিনা নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করতো। হল দিত না। জায়গা দিত না। এখন তো আর বাধা নেই। ইনশাআল্লাহ, একটা উপযুক্ত সময়ই জাতীয় কাউন্সিল হবে।
তিন বছর পর পর জাতীয় কাউন্সিলের বিষয়টা বিএনপির গঠনতন্ত্রে উল্লেখ আছে, কাউন্সিলের আগে গঠনতন্ত্রে কোনো পরির্বতন, পরিমার্জন হবে কি? জবাবে তিনি বলেন, এ নিয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। এটা নিয়ে এখনো কোনো কথা উঠেনি।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, দলের জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে তো আমরা অবশ্যই ভাবছি। কারণ নেতৃত্বের অনেকগুলো ধাপ থেকে বেরানোর সময় হয়ে গেছে অনেক আগেই। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
এখন ফ্যাসিবাদ মুক্ত দেশে সকলের যেহেতু গণতান্ত্রিক অধিকার পালনের সুযোগটা সৃষ্টি হয়েছে। এটাও তো আমাদের কাউন্সিল করার জন্য আরেকটি নতুন প্রেরণা। সুতরাং কাউন্সিল হবে এবং আমরা আশা করছি কাউন্সিল হবে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মহোদয়ের উপস্থিতিতে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশীর্বাদ নিয়ে। সেই কাউন্সিলের জন্য যে প্রস্তুতিতে খুব বেশি সময় লাগবে না। কারণ আমরা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, উপজেলা, থানা, জেলা, বিভাগ সব পর্যায়ে কিন্তু আমরা কর্মসূচি পালন করেছি। এবং বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়মিতই চলছে। এর মধ্যে থেকে ডেলিগেট বাছাই করে এনে একটা কাউন্সিল করা এটা খুব কষ্টসাধ্য হবে না।
তিনি বলেন, কাউন্সিল নির্বাচনের আগে হবে মনে হয় না। হওয়াটা একটা খুব বেশি পরিশ্রমের কাজ হয়ে যাবে। নির্বাচনের মাঠের প্রস্তুতি এবং কাউন্সিল দু’টিই তো সমান কঠিন কাজ। আর গঠনতন্ত্রের বিষয়টি পরিবেশ পরিস্থিতি সেটা বলে দিবে। একটা সময় তো ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমরা পারি নাই। বিএনপি, আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য দলগুলো একই নির্যাতনের স্টিমরোলার গেছে। সুতরাং অনেকেই সঠিক সময় বা তাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিল করতে পারেনি। বিএনপিও বাধার সম্মুখীন হয়ে করতে পারেনি। তবে পরবর্তী কাউন্সিলে আগের ভুলটাকে সংশোধন করে নেয়ার একটা সুযোগ আছে । বিলম্ব হয়েছে, সেটার জন্য একটা রেজ্যুলেশন দেয়া।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম বলেন, আওয়ামী লীগের সময়ও কিন্তু আমাদের সর্বশেষ ১৬ সালে কাউন্সিল হয়েছিল। তারপরে আর হয়নি বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে , সেটা এক জিনিস । কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তীতে অর্থাৎ ২৪ এর জুলাই ছাত্রজনতার আন্দোলনে বিজয়ের পর মূলত বাংলাদেশের জনগণের এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের একটা প্রত্যাশা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে আসবেন। উনি উনার ব্যক্তিগত ইচ্ছায় হোক বা যে কোন কারণে হোক, উনি উনার স্ট্রাটেজিক এনালাইসিস সেটার কারণে তিনি এখনো পর্যন্ত আসেননি। মনে হচ্ছে, দলের নীতি নির্ধারকরা বা স্থায়ী কমিটি হয়তোবা এ ধরনের কিছু একটা ভেবেছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে আসলেই দলের সম্মেলনটা উনার উপস্থিতিতে করতে চান।
তিনি বলেন, গঠনতন্ত্র তো কখনো এক জায়গায় স্থির থাকে না। এটাকে যুগোপযোগী করা দরকার। যুগোপযোগী বলতে, সময়ে সময়ে, পরিবেশ, রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে। সংগঠনের অবস্থা বিবেচনা করে গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন হওয়াটাই স্বাভাবিক। যতবার কাউন্সিল হয়েছে গঠনতন্ত্র ততবার সংশোধন হয়েছে। গণতন্ত্র উত্তরণেরপথে দেশের বিভিন্ন কমিটিগুলোতে সম্মেলন হচ্ছে।
দলের গঠনতন্ত্র শুধু নেতাকর্মী নয়, জনগণের সামনে তুলে ধরা উচিত মনে করেন তিনি। বলেন, তফসিল ঘোষণার পরপরই সম্ভবত আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসবেন। তফসিল ঘোষণার যদি একবার হয়ে যায় তখন তো সবাই নির্বাচনী যাত্রার। মধ্য দিয়েই শুরু অর্থাৎ নির্বাচনের আগে সম্মেলন হবার মত কোনো কারণ পাচ্ছি না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ূন কবীর বলেন, আগে কাউন্সিলের পরিবেশ তো ছিল না। স্পেসই তো দেয় নাই। এটা খুব ডিফিকাল্ট ছিল কন্টাক্ট করা। কিন্তু দলের ক্ষেত্রে তারেক রহমান দায়িত্বের অনেক রদবদল করেছে। যতটুকু সম্ভব হইছে কিন্তু সবসময় মানে অর্গানাইজ- রিঅর্গানাইজ উনি করছেন। আগামী ইলেকশনের পরে ইনশাআল্লাহ একটা কাউন্সিল হবে, ইনশাল্লাহ।
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ