Home রাজনীতি অধিকার প্রতিষ্ঠা ও দেশকে রাহুমুক্ত করতে হলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই: মুফতি...

অধিকার প্রতিষ্ঠা ও দেশকে রাহুমুক্ত করতে হলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই: মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী

উম্মাহ প্রতিবেদক: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বলেছেন, দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশকে রাহুমুক্ত করতে হলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, স্বাধীকার রক্ষার লক্ষ্যে এই দেশকে রাহুমুক্ত করার জন্য যারা নিজের জানবাজি রেখে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়াই করে দেশকে স্বাধীন করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে এখনো জীবিত আছেন। তাদের চোখের সামনেই এখন আবার এই দেশের মানুষের ভোটের অধিকার শেষ হয়ে গেছে, দেশের ও দেশের মানুষের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে।

তিনি বলেন, একটি শক্তি চুপচাপ দেশের স্বাধীনতা নিয়ে গেল, ভোটের অধিকার নিয়ে গেল, বাক স্বাধীনতা নিয়ে গেল। অথচ আমাদের সম্মানিত মুক্তিযুদ্ধাদের মধ্যে যারা ৭১ এ লড়াই করে এই দেশকে অর্জন করেছেন, তাদের অনেকে এখনো জীবিত আছেন। তাঁদের জীবদ্দতাশের আমাদের স্বাধীনতা হরণ হয়ে যাচ্ছে, অথচ আমরা হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো বাশি বাজিয়েই যাচ্ছি। নামকে ওয়াস্তে প্রোগ্রামের পর প্রোগ্রাম দিয়ে যাচ্ছি, বড় বড় ব্যানার লাগাচ্ছি, বক্তব্য ছাড়ছি। অথচ সবই অনুষ্ঠান সর্বস্ব ও লোক দেখানো ছাড়া কিছু নয়।

এ পর্যায়ে মুফতি মনির বলেন, এই নামকে ওয়াস্তে প্রোগ্রামের বিষয়ে আমি করজোড়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এই নামকে ওয়াস্তে প্রোগ্রাম দিয়ে দেশকে রাহু মুক্ত করা যাবে না। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, বাক স্বাধীনতার অধিকার, ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার, সম্পদের সুষম বণ্টনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।

তিনি বলেন, যদি দেশকে রাহুমুক্ত করতে হয়, তাহলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং একসাথে জোটবদ্ধ হয়ে অধিকার আন্দোলনের লক্ষ্যে ময়দানে নামতে হবে। এখানে কোন অজুহাত খাটবে না। ছোটখাটো মতপার্থক্য দিয়ে বিভেদ তৈরি করা যাবে না। বড় দল হিসেবে বিএনপির এখানে দায়দায়িত্ব অনেক। তাদের বর্তমান যে সমন্বয়হীনতা ও অনেকটা একলা চলো নীতির পরিস্থিতি, এই যদি হয় বাস্তবতা, তাতে দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। দেশকে রক্ষা করা যাবে না। এটা পরীক্ষা হয়ে গেছে।

জমিয়ত নেতা মুফতি মনির বলেন, যদি দেশকে রক্ষা করতে হয়, দেশকে রাহুমুক্ত করতে হয়, তাহলে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে এবং ২০ দলীয় জোটের বাইরে আরো যদি কোন ছোটখাটো দল থাকে, তাদেরকেও কাছে টেনে এনে এখনই অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আর না হয়, খালেদা জিয়া যেমন অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে জেলের ভেতরে থাকছেন। আপনি আমি স্বাধীনভাবে ইফতার করতে পারছি তিনি পারছেন না। আপনি আমি অসুস্থ হলে নিজেদের পছন্দের ডাক্তার ও হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারছি তিনি পারছেন না। আপনি আমি যদি মনে করি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রণাঙ্গণে জানবাজি রখে লড়াই করে দেশের স্বাধীনতায় ভূমিকা রেখেছেন, তাঁর স্ত্রী তিন তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রীকে যদি  মুক্ত করতে হয়, তাহলে মেহেরবাণী করে রমজানের পর পর প্রোগ্রাম দেন। যে প্রোগ্রাম ডু আর ডাই।জেলের তালা ভাঙবো, খালেদা জিয়াকে আনবো। এই স্লোগান নিয়েই আমরা মাঠে নামবো। যদি আমরা এমন প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামতে পারি, তাহলে ইনশাআল্লাহ আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারব, দেশকে রাহুমুক্ত করতে পারব, দেশের মানুষের ভোটের, কথা বলার ও অন্যান্য ন্যায্য অধিকার আদায় করতে পারব। সর্বোপরি দেশকে রাহুমুক্ত করতে পারব।

ন্যাশনাল ডেমেক্র্যাটিক পার্টি-এনডিপির উদ্যোগে কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিলে গত ৩০ মে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এনডিপির চেয়ারম্যান আলহাজ কারি মো: আবু তাহেরের সভাপতিত্বে রাজধানীর শান্তিনগরের একটি হোটেলে আয়োজিত এই দোয়া ও ইফতার মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা: মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, ন্যাপ ভাসানীর সভাপতি অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এনডিপির মহাসচিব শাহনেওয়াজ খান, জাগপার মহাসচিব বজলুর রহমান, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আমাদের এক হাজার থেকে ১২০০ লোক গুম এবং হাজার হাজার নেতাকর্মী জেল -জুলুমের শিকার হলেও আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আমরা কেউ রাজপথে জীবন উৎসর্গ করিনি, আন্দোলন গড়ে তুলতে পারিনি, কেউ জেলে যাইনি। আমাদের আত্মসমালোচনা করে দলীয় ও ২০ দলীয় ঐক্যকে জোরদার করতে হবে। বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। বেগম জিয়াকে মুক্ত করার মধ্য দিয়েই দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব সুরক্ষা হবে এবং সুশাসন আসবে।

শপথ নেওয়ার পেছনে সরকারের চাপের চেয়েও তাঁদের লোভ বেশি ছিল: গয়েশ্বর রায়