Home সোশ্যাল মিডিয়া ডায়রি’র ছেঁড়া পাতা…

ডায়রি’র ছেঁড়া পাতা…

।। মালেকা ফেরদৌস ।।

গান হচ্ছিল নারীদের এক অনুষ্ঠানে। স্থান ও অনুষ্ঠানের নাম বললাম না। খাবার দাবার চলছে । তবলার বোলের সাথে কেউ কেউ নাচের ভঙ্গি করে পা ঠুকছে ফ্লোরে। কেউ সুরের সাথে গলা মেলাচ্ছে। দারুণ এক গানের অনুষ্ঠান।

আমিও খাবার টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে গান শুনছিলাম, আর প্রিয় খাবারগুলো একে একে প্লেটে তুলছিলাম।

হঠাৎ সম্মিলিত কণ্ঠে গগনবিদারী আতংকের চিৎকার। ভয়ে কারো কারো হাতের প্লেট ততক্ষণে মেঝেতে পড়ে খান খান। কিছু বুঝে উঠার আগেই দেয়ালের ঘড়ি, টানানো ছবি শব্দ করে নীচে পড়ল। হুড়োহুড়ি করে সবাই একযোগে বাইরে বেরুতে চাইছে। ভয়ার্ত কণ্ঠে চিৎকার সবার- ভূমিকম্প !

এর মধ্যে কে একজন বলল থেমে গেছে থেমে….গেছে ।

আবার দৃশ্যপট পাল্টে গেল মুহূর্তেই। মোটামুটি সকলে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে ডায়াসে দাঁড়িয়ে এক আপা পবিত্র কুরানের আয়াত পাঠ করে ধর্মীয় জীবন যাপনে সবাইকে আগ্রহী হতে উপদেশ দিলেন। বালামুসিবত সম্পর্কে ওয়াজ করে মুনাজাতও ধরলেন । সবাই ঘোমটা মাথায় মুনাজাতে সামিল। আমিও দুই হাত তুললাম সবার সাথে।

কোন ধর্ম মানেন না- সব সময় গৌরবের সাথে এই বলে বেড়ান যিনি এবং কিছুক্ষন আগেও যিনি ধর্ম সম্পর্কে খুবই আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন, ক্ষনিকের ছোট্ট এক ভূমিকম্পে তিনি আমূল বদলে গেলেন যেন। পুরোপুরি ধার্মিক, মু’মিনাহ এখন ।

আমাকে দেখলেই যার আধার্মিক আলাপের মাত্রা বেড়ে যায়, নানা কায়দায় আমাকে ধর্মভীরু বলে উপহাসের চেষ্টা করে। আমি অবাক হলাম, এখন মহান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভক্তি ও আবেগ নিয়ে তার মুনাজাত পরিচালনা দেখে! কেন জানি অস্ফুটে মুখ থেকে বেরিয়ে গেল- ‘হায়রে ভজনালয়, তোমার মিনারে চড়িয়া ভন্ড গাহে/ স্বার্থের জয়।’

যদিও এটা ভজনালয় ছিল না। পাশের সিনিয়র আপা জানতে চাইলেন- কি বলেছি আমি।

বললাম- ‘আমিন’ বলছি আপা। পরের দিন সিনিয়র আপা আমাকে ফোন করে বললেন – কাল যে কবিতার লাইনটি আমিনে বললে, সে কবিতাটি আমার ইনবক্সে পাঠাও প্লিজ…….

আরও পড়ুন- কবিতা: ‘শিরোনামহীন’