Home ইসলাম সন্ত্রাস দমনে রাসূলুল্লাহ (সা.)এর তাৎপর্যময় ভূমিকা (২)

সন্ত্রাস দমনে রাসূলুল্লাহ (সা.)এর তাৎপর্যময় ভূমিকা (২)

।। মাওলানা আবদুল কুদ্দুস ।।

[পূর্ব প্রকাশিতের পর]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন অনুপম চরিত্রের অধিকারী। শত্রুর প্রতি ছিলেন অত্যন্ত দয়াবান। দুষ্ট দুরাচার ইসলামের চরম শত্রু আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামীল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চলা চলের রাস্তায় কাঁটা ছড়িয়ে রাখতো। পথ চলার সময় যাতে কাঁটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পায়ে বিদ্ধ হয় এবং তিনি কষ্ট পান এ উদ্দেশ্যে। পথ চলাচলের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত কাঁটা সরিয়ে ফেলে পথ চলতেন।

কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহসা দেখতে পান পথে কোন কাঁটা নেই। তিনি বিচলিত হলেন এবং উক্ত মহিলার খোঁজে তার বাড়ী গেলেন। সেখানে গিয়ে দেখতে পান তার অসুখ হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কুশলাদী জিজ্ঞাসাবাদ করলেন এবং সেবা শুশ্রুষা করলেন।

মক্কা বিজয় হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখতে পান এক বৃদ্ধা তার আসবাবপত্রের একটি বড় পোটলা নিয়ে মক্কা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার জন্য খুবই দ্রুত পদে ছুটে চলছেন এবং বারবার হোঁচট খেয়ে পড়ছেন। এ দৃশ্য দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিকটে গেলেন এবং সমাচার জানতে চাইলেন। উত্তরে বুড়ী বললেন, শুনতে পেলাম আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ মক্কা দখল করে নিয়েছেন, সেই ভয়ে মক্কা ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অভয় দিলেন এবং তাকে তার গন্তব্য স্থলে পৌঁছিয়ে দিলেন। এমনিভাবে আলোচনা করলে শত্রুর প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহানুভবতার আরও শত শত দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করা যাবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়্যাত প্রাপ্তির পর দাওয়াতের প্রথম পর্যায়ে তৎকালীন আরবের প্রচারণার রীতি অনুযায়ী সাফা পর্বতের চুড়ায় দাড়িয়ে হে প্রভাতকালের বিপদ বলে লোকদেরকে ডাকলেন। তারপর লোকেরা উপস্থিত হলে তিনি তাদেরকে একটি উদাহরণ দিয়ে বললেন, “নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ পাকের রাসূল এবং সৎ পথ প্রদর্শনকারী”। তারপর তিনি সকল গোত্রের লোকদেরকে ডেকে বললেন- আচ্ছা আমি যদি বলি পাহাড়ের অপরদিকে একটা বিরাট শত্রু বাহিনী উপস্থিত রয়েছে। তারা এখনই তোমাদেরকে আক্রমণ করবে। তবে তোমরা কি আমার কথা বিশ্বাস করবে না? তখন সমবেত লোকেরা উত্তর দিল, আমরা কখনও আপনার নিকট থেকে মিথ্যা কথা শুনিনি। তিনি বললেন- তবে শোন, আমি তোমাদেরকে এক আল্লাহর দিকে আহ্বান করছি এবং মূর্তি পূজার পঙ্কিলতা থেকে তোমাদেরকে মুক্ত করতে চাচ্ছি। তোমরা সেই দিনের ভয় কর, যখন আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হয়ে তোমাদের অপকর্মের হিসাব দিতে হবে। (তারীখে ইবনে কাসীর)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা শুনে লোকেরা অবাক হয়ে গেল। বাপ-দাদার ধর্ম ও প্রচলিত কুসংস্কার পরিত্যাগ করার কথা শুনে তাদের মধ্যে আগুন ধরে গেল; তারা তাঁর প্রতি পাথর নিক্ষেপ করে তাঁকে আহত করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বভাবতঃ এতে মনোকষ্ট পেলেন। তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ এল- “হে সত্যের আহ্বায়ক! বংশ পরিবারে প্রতিরোধ ও প্রত্যাখানে প্রভাবিত হওয়া বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়া ঠিক হবে না। নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে অবিচল থাক। কেননা, সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের ব্যাপারটি তোমার করায়ত্বে নয়, তোমার কাজ শুধু আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেয়া”।

প্রথম কিস্তি পড়ুন- ‘সন্ত্রাস দমনে রাসূলুল্লাহ (সা.)এর তাৎপর্যময় ভূমিকা’

এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার গন্ডি ছেড়ে তায়েফ গেলেন দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে। তায়েফ বাসীরাও তার সাথে অমানুষিক অত্যাচার করল। তারা বাজারী বখাটে ছেলেদেরকে তাঁর পিছনে লেলিয়ে দিয়ে নির্দেশ দিল, তাঁকে পাথর মারতে ও ঠাট্টা করে উত্যক্ত করতে। এ বর্বরের দলেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এত অধিক পাথর বর্ষণ করলো যে, তিনি রক্তাক্ত হয়ে গেলেন। ক্ষতের জ্বালায় যখন তিনি অস্থির হয়ে বসে পড়তেন, তখন তারা তাঁর বাহুদ্বয় ধরে আবার দাঁড় করিয়ে দিত, যাতে তারা আবার পাথর বর্ষণ করতে পারে; আর ঠাট্টা বিদ্রুপ করতে পারে।

তায়েফ সফরের সঙ্গী হযরত যায়েদ ইবনে হারিছা (রাযি.) যথাসাধ্য পাথর থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হিফাযত করতেন এবং যে পাথর তাঁর প্রতি নিক্ষেপ করা হত, তা যেন যায়েদের দেহে পড়ে সর্বদা (যায়েদ) এ চেষ্টাই করতেন। এরূপ করতে করতে হযরত যায়েদ ইবনে হারিছার সমস্ত মাথা ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমস্ত অঙ্গ রক্তাপ্লুত হয়ে গেল, এমনকি পা’ মুবারক পর্যন্ত ক্ষত বিক্ষত হয়ে শোণিত ধারা প্রবাহিত হচ্ছিল।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফ হতে এমনই করুণ অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করলেন যে, তাঁর পবিত্র হাটু মুবারক ছিল রক্তে রঞ্জিত। কিন্তু সে মুহূর্তেও তাঁর পবিত্র মুখে বদদোয়া বা অভিশাপের একটি শব্দও উচ্চারিত হয়নি। তায়েফ থেকে ফেরার পথে ওতবা ইবনে রাবীয়া ও শায়বা ইবনে রাবীয়া নামক দু’ ব্যক্তির বাগিচা অবস্থিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত বাগিচার এক বৃক্ষের ছায়াতলে বিশ্রাম করার জন্য বসে পড়লেন। আর নিম্নোক্ত দোয়া পড়লেন- “হে আল্লাহ! আমি স্বীয় দুর্বলতা, দ্বীনের দিকে মানুষকে আহ্বান করার উপযুক্ত কৌশল গ্রহণ করতে অপারগতার ও মানুষকে উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করতে অক্ষমতার স্বীয় দোষ স্বীকার করছি। হে পরম দয়ালু! আপনিতো দুর্বলের অভিভাবক ও সাহায্যকারী”।

আরও পড়তে পারেন-

তারিক ইবনে আব্দুল্লাহ মাহাবেরী থেকে বর্ণিত- “আমি যিলমাজার বাজারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি। তিনি বলছেন, হে মানুষ! তোমরা বল, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই- তাহলে তোমরা সফলতা লাভ করবে। আর এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছন দিক থেকে পাথর মারছিল। ফলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র দেহখানা রক্তাপ্লুত হয়ে গিয়েছিল। আর সে লোকটি পিছন থেকে বলছিল, হে মানুষ! ওর কথা শোন না। কারণ সে মিথ্যাবাদী”। (কানযুল উম্মাল)।

এহেন অত্যাচার নির্যাতনের পরও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের প্রতি বদদোয়া বা অভিসম্পাত করেন নি। বরং তিনি তাদেরকে সাম্য মৈত্রী এবং ভ্রাতৃত্বের সর্বোচ্চ শিক্ষা দিয়েছেন।

সন্ত্রাস নির্মূলকরণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে একক শ্রেষ্ঠ অধিনায়ক ছিলেন, তার প্রমাণ ঐতিহাসিক বিদায় হজ্বের ঐতিহাসিক ভাষণের প্রতি লক্ষ্য করলেও আমরা দেখতে পাই। তিনি বলেছিলেন- সমবেত লোক সকল! আমার মনে হয় এরপর আমি তোমাদের সাথে এভাবে একত্রিত হওয়ার সুযোগ আর পাবনা। সুতরাং আজকের প্রতিটি কথা ঠিকমত অনুধাবন করতে চেষ্টা কর।

লোক সকল! তোমাদের রক্ত তোমাদের ধন-সম্পত্তি এবং মান-সম্মান পরস্পরের নিকট ততটুকু পবিত্র, যতটুকু পবিত্র আজকের এই দিন, এই পবিত্র স্থান এবং এই পবিত্র হজ্বের মাস।

লোক সকল! খুব শীঘ্রই তোমাদেরকে আল্লাহর নিকট হাযির হতে হবে। সাবধান! আমার তিরোধানের পর যেন তোমরা পথ হারা হয়ে যেয়োনা। একে অপরের রক্তপাত ঘটাতে শুরু করোনা।

লোক সকল! জাহিলিয়াত যুগের সকল বিধি-বিধান আজ আমি দু’পায়ে দলিত করে দিলাম। আজ থেকে বংশ, বর্ণ ও গোত্রের সকল পার্থক্য তিরোহিত হল। আজ থেকে সাদার উপর কালোর, কালোর উপর সাদার কোন প্রাধান্য থাকবেনা। সেই বেশী সম্মানী রূপে বিবেচিত হবে, যে বেশী খোদা ভীরু। জাহিলিয়্যাত যুগের সকল বিবাদ, সকল হত্যা প্রতিশোধ আজ থেকে আমি বাতিল করে দিলাম। আমার বংশের রবীয়া ইবনে হারেস নামক যে শিশুটি বনী সা’আদের দুগ্ধ পানরত অবস্থায় অন্যায়ভাবে নিহত হয়েছিল, তার রক্তের দাবী রহিত করে দিলাম।

জাহিলিয়্যাত যুগের সকল সুদের দাবি আমি আজ থেকে বাতিল ঘোষণা করছি। আমার বংশের আব্বাস ইবনে আব্দুল মোত্তালিবের প্রাপ্য সকল সুদ আজ থেকে মাফ করে দেয়া হল।

লোক সকল! দাস-দাসী এবং অধীনস্তদের ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। যা তোমরা নিজেরা খাবে, তাই তাদেরকেও খাওয়াবে। যে মানের পোশাক নিজেরা পরিধান করবে, তাদেরকেও সে মানের পোশাকই পরিধান করতে দেবে।

উপস্থিত লোক সকল! তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। স্ত্রীদের উপর তোমাদের হক্ব হচ্ছে, তারা তোমাদের বিছানায় অন্য কোন পুরুষকে স্থান দিয়ে দাম্পত্য বিশ্বাস ভঙ্গ করবে না। তোমাদের উপর স্ত্রীদের হক্ব হচ্ছে, তাদের সর্বোত্তম ভরণ পোষণ করবে।

স্মরণ রেখ! সমগ্র সৃষ্ট জীবই আল্লাহ তায়ালার পরিবার তুল্য। সে মতে আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয় সেই ব্যক্তি যে সৃষ্ট জীবের সাথে উত্তম ব্যবহার করে।

মানবতার মুক্তির দিশারী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপরোক্ত বিষয়গুলো শুধু ভাষণের মধ্যই সীমাবদ্ধ রাখেননি; বরং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে দেখিয়ে গেছেন।

মক্কার কাফিরদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় সহচরবৃন্দসহ মক্কা ছেড়ে যখন মদীনায় আসলেন তখন তিনি সেখানে সর্বপ্রথম যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, তাতেও আমরা সন্ত্রাস দমনের কার্যকরী ব্যবস্থা দেখতে পাই। মদীনায় যে ঐতিহাসিক সনদ সম্পাদিত হয়েছিল তাতে উল্লেখ ছিল মদীনা শহরকে পবিত্র বলে ঘোষণা করা হলো এবং রক্তপাত হত্যা, সন্ত্রাস, অপরাপর অপরাধমূলক কার্যকলাপ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হল। অপরাধীকে উপযুক্ত শাস্তি ভোগ করতে হবে। সব প্রকার পাপী ও অপরাধীকে ঘৃণার চোখে দেখতে হবে। দুর্বল ও অসহায়কে সর্বোতভাবে সাহায্য ও রক্ষা করতে হবে।

এমনিভাবে ঐতিহাসিক হুদাইবিয়ার সম্পাদিত সন্ধির শর্তাবলীর মাঝেও অমরা তাঁর (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) সন্ত্রাস বিরোধী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাই।

সুদীর্ঘ চৌদ্দশত বছর পূর্বে মানবতার দিশারী মযলুমের বন্ধু, অসহায়ের সহায়, এতীমের অভিভাবক, পথ ভোলা মানবতার কান্ডারী, বাতিলের আতংক,আশ্রয় প্রার্থীর অতন্দ্র প্রহরী জনাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক প্রণীত ঐতিহাসিক এ সনদগুলো তথা সংবিধানে মনবাধিকারের সবকটি দিকই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

আজকে আমরা চৌদ্দশত বছর পাড়ি দিয়ে বিজ্ঞানের যুগে এসে আমরা সন্ত্রাস দমনের যে আইন প্রণয়ন করছি, মূলতঃ এগুলো তাঁরই (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) প্রণীত সংবিধানের উপর ভিত্তি করে রচিত হচ্ছে। উল্লেখ করা যেতে পারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রণীত বিধানগুলো আমরা সরাসরি ও সম্পূর্ণ না মেনে আংশিক মানার কারণে আমাদের উপর নেমে আসছে শান্তির পরিবর্তে বিপর্যয়। অতএব আমরা সঙ্গত কারণেই রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সন্ত্রাস নির্মলের এক ঐতিহাসিক দিশারী হিসেবে আখ্যায়িত করতে পারি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোটা জীবন চরিত পর্যালোচনা করলে পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, তিনি ছিলেন একজন নিস্কলুষ নির্মল চরিত্রের অধিকারী। যিনি অতুলনীয় অদ্বিতীয় অনুপম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন, কি করে তিনি সন্ত্রাসী হতে পারেন? তবে অনেক ইসলাম বিদ্বেষী কিংবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদ্বেষী অছে যারা বিদ্বেষ পোষণ করার বশবর্তী হয়ে আল্লাহ প্রদত্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবর্তিত ইসলামের অপরিবর্তনীয় নিরংকুশ নির্ভেজাল শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিক্ষীত আইন-রজম, হদ্দ, ক্বিসাস ইত্যাদিকে বর্বারোচিত আইন (নাউজুবিল্লাহ) বলে আখ্যা দিতে দুঃসাহস দেখাতে পারেন।

উক্ত বদ নসীব, কমবখতদের জেনে রাখা উচিত, গোটা মানব সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার স্বার্থে অর্থাৎ বৃহৎ স্বার্থে এসব আইন প্রবর্তিত হয়েছে। যাতে করে দু’ একজন উদ্ধত প্রকৃতির অপরাধীকে তার কৃত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করলে গোটা জাতি সতর্ক হয়ে যায় এবং অনুরূপ অপরাধে লিপ্ত হওয়ার তিলসম কল্পনাও না করতে পারে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা করার তাওফীক দান করুন। আমীন॥ [সমাপ্ত]

– মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, প্রিন্সিপাল- জামিয়া ইসলামিয়া ইমদাদুল উলূম নলজুরী, গোয়াইনঘাট, সিলেট, চেয়ারম্যান – জাফলং ভিউ রেষ্টুরেন্ট, প্রোপাইটার- আব্দুল মজিদ এন্ড সন্স, সভাপতি- বৃহত্তর জাফলং পর্যটন ব্যবসায়ী সমিতি।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।