Home শিক্ষা ও সাহিত্য মহিলা মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে হাফেয আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমীর বিশেষ সাক্ষাৎকার

মহিলা মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে হাফেয আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমীর বিশেষ সাক্ষাৎকার

[হাদীসের দরস , দাওয়াত ও তাবলীগ, ইসলামী রাজনীতি ও সমাজ সংগঠক হিসেবে অত্যন্ত সফল ও প্রিয়মুখ আল্লামা হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী। তিনি একাধারে রাজধানীর অন্যতম বিখ্যাত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, উত্তরা জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, উলামায়ে কেরামের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল ‘জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, উত্তরা রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদ্রাসা‘র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং  উত্তরা ১২নং সেক্টর বায়তুন নূর জামে মসজিদের খতীব। হাদীসের মাসনাদ, মসজিদের মিম্বার, মাহফিলের স্টেজ, রাজনৈতিক মঞ্চ এবং ঐক্যবদ্ধ সমাজ গড়ার ময়দানে হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান অত্যন্ত সফল ও উঁচুমাপের একজন ব্যক্তিত্ব।

গত এক-দেড় যুগে বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষায় নারীদের অগ্রগতি হয়েছে নানাক্ষেত্রে। দেশব্যাপী প্রচুর সংখ্যক মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি মহিলা হেফজখানা এবং মহিলা ক্বেরাতখানাও প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু অনেক অভিভাবক তাদের কন্যা সন্তানকে শরয়ী পর্দা রক্ষা করে নিরাপদ পরিবেশে দ্বীনি শিক্ষায় গড়ে তোলার বাসনা লালন করলেও মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষা পদ্ধতি ও পরিবেশ সম্পর্কে অনবগত থাকার কারণে স্বপ্ন পুরণ করতে পারেন না।

ঢাকা উত্তরা ১১নং সেক্টরে অবস্থিত রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদ্রাসা ভবন ও অফিস কক্ষের বহির্দৃশ্য। ছবি- উম্মাহ।

আজকে আমরা উম্মাহ ২৪ডটকম এর পক্ষ থেকে কথা বলব উত্তরা ‘রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদ্রাসা‘র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আল্লামা হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমীর সাথে। তাঁর কাছ থেকে আমরা শুনব, ধারাবাহিক সফলতায় সুনাম অর্জনকারী একটি মহিলা মাদ্রাসার পরিবেশ, নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা কেমন হয়ে থাকে এবং শিক্ষা পরিচালনা কোন পদ্ধতিতে পরিচালনা করেন ইত্যাদি। আশা করছি, যে সকল অভিভাবক নিজেদের প্রিয় কন্যা সন্তানকে সুন্দর দ্বীনি ও নিরাপদ পরিবেশে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান, তারা উপকৃত হবেন। -সম্পাদক]

উম্মাহঃ মুহতারাম! আমরা জানি, আপনি উত্তরাতে অবস্থিত ‘রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদ্রাসা’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। প্রতিষ্ঠানটি মাত্র কয়েক বছরেরই ছাত্রীদেরকে আদর্শ শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। আমরা আরো জানি, আপনার প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীরা বোর্ড পরীক্ষায় পর পর তিন বছর শতভাগ জিপিএ-৫ পেয়ে বেশ সাড়া জাগিয়ে দিয়েছে। আজকে আমরা আপনার সাথে মহিলা মাদ্রাসার পরিবেশ ও শিক্ষাদান প্রসঙ্গে কথা বলব এবং আপনার সফল প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষাদান ও পরিবেশ সম্পর্কেও কথা বলব।

অনুগ্রহ করে তার আগে উম্মাহ পাঠকদের উদ্দেশ্যে ইসলামী শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সংক্ষেপে একটু বলবেন?

হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসানঃ ইলমে-দ্বীন বা ইসলামী শিক্ষা অর্জন প্রত্যেক মুসলমান নার-নারীর উপর ফরয, যাতে করে কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক জীবন যাপন করে ইহকালের কল্যাণ ও পরকালের নাজাত হাসিল করা যায়। একমাত্র সহীহ দ্বীন শিক্ষার দ্বারাই হালাল-হারাম, ন্যায়-অন্যায় এর পার্থক্য নির্ণয় করতঃ সকল প্রকার ভ্রান্তি পরিহার করে সঠিক পদ্ধতিতে ঈমান ও আমলের পথে জীবন পরিচালনা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জন করা যায়। এ জন্যই কুরআন ও হাদীসে দ্বীনি শিক্ষার গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা বুঝাতে অসংখ্য বাণী বিদ্যমান রয়েছে। একজন মুসলমানের জন্য আদর্শ ও শান্তিপূর্ণ ব্যক্তিজীবন, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি পরকালীন চিরস্থায়ী জীবনের সফলতার জন্য ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সেই মতে জীবন পরিচালনার বিকল্প কিছু নেই।

উম্মাহঃ এই শিক্ষার্জনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সমান বলে মনে করেন কি?

মাওলানা নাজমুল হাসানঃ নিশ্চয়ই। পুরুষের মতো একজন নারীর জন্যও ইসলামী শিক্ষা সমান গুরুত্ববহ। জীবন চলার পথে প্রয়োজনীয় দ্বীনি ইলম শিক্ষা করা একজন পুরুষের জন্য যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ, একজন নারীর জন্যও ঠিক ততটুকুই অপরিহার্য। যাতে করে মুসলমানদের প্রতিটি ঘর হয় এক একটি দ্বীন শিক্ষার বিদ্যাপীঠ। প্রতিটি মায়ের কোল হয় শিশুর দ্বীন শিক্ষার সুতিকাগার। আর মাতৃকোল থেকেই শিশুরা সুশিক্ষায় হাতে খড়ি পেয়ে তিলে তিলে সমৃদ্ধির পথে অগ্রসর হয় এবং মানবীয় গুণের বিকাশের মাধ্যমে উন্নত সমাজ গঠনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়।

উম্মাহঃ কিন্তু অনেক ধর্মভীরু মুসলিম পরিবারেও দেখা যায়, অভিভাবকরা সেভাবে তাদের কন্যা সন্তানদেরকে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করছেন না। এক্ষেত্রে কি প্রতিবন্ধকতা আছে বলে আপনি মনে করেন?

মাওলানা নাজমুল হাসানঃ আমার ধারণায়, ধর্মভীরু পরিবারের অভিভাবকরা নিজ কন্যা সন্তানকে ইসলামী শিক্ষাত শিক্ষিত করতে সবার আগে নিরাপদ পরিবেশ ও শরয়ী পর্দার বিষয় নিয়ে সংশয়ে থাকেন বেশী। ধর্মীয় অনুশাসন সমৃদ্ধ পর্দা ঘেরা নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন আবাসন ব্যবস্থা, আধুনিক শিক্ষা ও দ্বীনি শিক্ষার সমন্বয়ে বাস্তবমুখী সিলেবাসে উন্নত মানের শিক্ষা ব্যবস্থা সংবলিত বহুমুখী একটি প্রতিষ্ঠানে নিজের সন্তানদেরকে পড়ানোর প্রত্যাশা লালন করেন প্রায় সকল অভিভাবকই।

আলহামদুলিল্লাহ, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচুর সংখ্যক নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল দ্বীনি পরিবেশের মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসব মাদ্রাসায় প্রচুর ছাত্রী ভর্তি হয়ে দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করে আলেম, হাফেজ ও ক্বারী হচ্ছেন।

আমি মনে করি, অভিভাবকরা একটু খোঁজখবর নিলে তাদের কন্যা সন্তানদের জন্য কাঙ্খিত মানের মহিলা মাদ্রাসা বাংলাদেশের যে কোন জেলাতেই পেয়ে যাবেন।

উম্মাহঃ আপনার প্রতিষ্ঠিত ‘রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদ্রাসা’- পরিবেশ ও পড়ালেখার ঈর্ষনীয় সফলতার কথা আমরা বিভিন্নজনের কাছে শুনে থাকি। আপনার প্রতিষ্ঠানটির পরিবেশ সম্পর্কে যদি একটু বলতেন?

মাওলানা নাজমুল হাসানঃ দ্বীনদার, স্বাবলম্বী ও রুচিশীল ব্যক্তিবর্গের প্রত্যাশা ও চাহিদাকে সামনে রেখেই “রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদরাসা”-এর প্রতিষ্ঠা। প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউনের ১১নং সেক্টর শাহ মাখদুম এভিনিউ-এর ১২ নং বাড়ী। সম্পূর্ণ একটি বহুতল ভবনে এই মাদ্রাসাটি পরিচালিত হয়।

একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে গড়া প্রতিষ্ঠানটির অগ্রযাত্রায় আমরা সকল দ্বীনদার মুসলমানের সার্বিক সহযোগিতা নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। আমরা সম্পূর্ণ দ্বীনি পরিবেশে ছাত্রীদের শতভাগ শরয়ী পর্দা মেনে স্বাচ্ছন্দময়, নিরাপদ, স্বাস্থসম্মত ও ঘরোয়া পরিবেশে মনোযোগের সাথে পড়ালেখার পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়টাকে খুব যত্নের সাথে গুরুত্ব দিয়ে আসছি।

উম্মাহঃ ‘রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদ্রাসা’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে যদি একটু বলতেন?

মাওলানা নাজমুল হাসান”: একটি আদর্শ জাতি গঠনে একজন আদর্শ নারীর অপরিসীম গুরুত্বের বিষয়টিকে সামনে রেখে কুরআন, সুন্নাহ ও সাধারণ জ্ঞান-বিজ্ঞানের এক অনুপম সংমিশ্রণের দ্বারা শিশুকালেই তাদের মাঝে উন্নত চারিত্রিক, বুদ্ধিভিত্তিক, মানসিক ও আধ্যঅত্মিক গুণাবলীর ভিত রচনা করতঃ ধর্মীয়ভাবে সমৃদ্ধশালী একটি সমাজ ও দেশ গঠনের নিখাদ প্রচেষ্টার মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনই এই ব্যতিক্রমধর্মী মাদরাসা প্রতিষ্ঠার একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

উম্মাহঃ আপনি যেহেতু কর্মজীবনের প্রায় সকল স্তরেই একজন সফল ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ও প্রশংসিত। আমাদের পাঠকদের মধ্যে অনেক অভিভাবক তাদের কন্যা সন্তানদেরকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করার বিষয়ে আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রতি আগ্রহী হতে পারেন। তাছাড়া আরো অনেক প্রতিষ্ঠানের জন্যও অনুকরণীয় হতে পারে। সুতরাং আমাদেরকে বলুন, আপনার প্রতিষ্ঠানে কী কী বৈশিষ্ট রয়েছে?

মাওলানা নাজমুল হাসানঃ আমাদের ‘রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদ্রাসা’র শিক্ষাক্রমে কওমি সিলেবাস ও আধুনিক শিক্ষার অপরূপ সমন্বয়ের চেষ্টা করা হয়েছে। সিকিউরিটি গার্ডের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা তদারকিতে প্রতিষ্ঠানটিতে শতভাগ শরয়ী পর্দা মেনে চলতে হয় শিক্ষিকা-ছাত্রী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলকেই। শিক্ষাক্রম পরিচালনায় বিষয়ভিত্তিক দক্ষ ও অভিজ্ঞ সুযোগ্য আলেমা ও জেনারেল শিক্ষিকাবৃন্দের মাধ্যমে পাঠদানের ব্যবস্থা করেছি। পাশাপাশি ছাত্রীদের জন্য সরকারী বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণেরও সু-ব্যবস্থা আছে। সাধারণ পাঠ্য শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্রীদের আদব, আখলাক ও চরিত্র গঠনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়। ছাত্রীদের মন মানসিকতা ও বহুমুখী বিকাশের জন্য সমৃদ্ধ লাইব্রেরী, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা ও প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার ব্যবস্থা আছে।

প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের জন্য মাতৃস্নেহে ও সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে তা’লিম ও আমলের এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। ছাত্রীদের জন্য অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার সু-ব্যবস্থা আছে। আবাসিক ছাত্রীদেরকে স্বাস্থ্যসম্মত ও রুচিশীল খাবার ও নাস্তা পরিবেশন হয়।

প্লে থেকে বাংলা ও ইংরেজি উভয় মাধ্যমে পাঠদানসহ বিশুদ্ধ কুরআন শিক্ষা ও দ্বীনের আবশ্যকীয় বিষয়াদী শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে ছাত্রীদের যে কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য দক্ষ ও উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হয়। তাছাড়া প্রবাসী অভিভাবকগণের সন্তানদের অভিভাবকত্ব গ্রহণও করে থাকি আমরা।

উম্মাহঃ আপনার পরিচালিত ‘রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদ্রাসা’য় কোন কোন বিভাগে পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে?

মাওলানা নাজমুল হাসানঃ  আমরা প্রাথমিক, হিফজ, কিতাব বিভাগে পাঠদান করে থাকি। তাছাড়া বয়স্ক, গৃহিনী ও পেশাজীবি নারীদের জন্য খন্ডকালীন কুরআন শিক্ষা বিভাগ রয়েচে। এতে ইসলামের প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়েল, জরুরী ধর্মীয় জ্ঞান ও সহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত শেখার ব্যবস্থা রেখেছি। যেমন-

প্রাথমিক বিভাগঃ ছোটদের জন্য পাঁচ বছরের প্রাথমিক কোর্স, কুরআন শরীফ বিশুদ্ধ তিলাওয়াত, নির্বাচিত সূরা ও হাদীস মুখস্তকরণ, আরবি, উর্দু, বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান, মাসআলা-মাসায়েল, আদব-আখলাক ও অন্যান্য বিষয়ের সমন্বয়ে গঠিত ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা কোর্স সম্পন্নকরণ।

হিফজ বিভাগঃ সম্পূর্ণ ভিন্ন ও নিরিবিলি পরিবেশে সীমিত সংখ্যক আসনে সুদক্ষ হাফেজা দ্বারা পরিচালিত আধুনিক হিফজ বিভাগ।

কিতাব বিভাগঃ আরবি ভাষায় দক্ষ শিক্ষিকা দ্বারা পরিচালিত। বাংলা, ইংরেজী ভাষার গুরুত্বসহ বেফাক সিলেবাসের সমন্বয়ে ৮ বছরে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত শিক্ষার সু-ব্যবস্থা আছে।

খন্ডকালীন কুরআন শিক্ষাঃ বয়স্কা মহিলাদের জন্য বিশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াত, প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়েল ও নির্বাচিত সূরা মুখস্ত করার ব্যবস্থা। তাছাড়া এই বিভাগে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের জন্য বিশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াত, হাতে কলমে নামাযের তালিম ও প্রয়োজনীয় মাসআলাসমূহের শিক্ষাদান করা হয়।

উম্মাহঃ আপনার অনেক সময় নিয়েছি। মুহতারাম, সর্বশেষ আপনার কাছে জানতে চাইব, আপনার প্রতিষ্ঠানে কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে পাঠদান করা হয়?

মাওলানা হাফেজ নাজমুল হাসানঃ আমাদের ‘রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদরাসা’য় আরবী ও বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষায় পারদর্শিতার প্রতিও সমান গুরুত্বারোপ করা হয়। নিয়মিত ক্লাস টেস্ট, মাসিক পরীক্ষা, ইয়ার ফাইনাল, প্রি টেস্ট এবং মডেল টেস্ট-এর মাধ্যমে ছাত্রীদের মেধার পূর্ণ মূল্যায়ন করা হয়। ছাত্রীদেরকে শ্রেণী কক্ষেই পাঠদান এবং সযত্ন তদারকীর মাধ্যমে পাঠ আদায় করা হয়। আমরা সেমিস্টার পদ্ধতি ও একাডেমিক ক্যালেণ্ডার অনুসরণ করে থাকি। অনাবাসিক ছাত্রীদের নিয়মিত ডায়রি মতে বাড়ির পাঠ ও কার্যসূচী পর্যবেক্ষণ এবং রিপোর্ট সংরক্ষণ করা হয়। মেধার বিচারে ক্লাসের অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছাত্রীদেরকে নিয়মিত বিশেষ তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে দৈনন্দিন পাঠ আত্মস্থ করতে বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়। তাছাড়া ছাত্রীদের সার্বিক অগ্রগতি বিষয়ক সাপ্তাহিক ও মাসিক সেমিনারের আয়োজন করি আমরা এবং প্রতি সেমিস্টারের জন্য বিষয়ভিত্তিক পাঠ পরিকল্পনা প্রণয়ন।

এছাড়াও প্রতি শনিবার বাদ মাগরীব প্রতিষ্ঠানের সকল ছাত্রীসহ সর্বস্তরের মা-বোনদের জন্য তাফসীর শোনার ব্যবস্থা এবং সপ্তাহে দুই দিন নির্দিষ্ট সময়ে আন্তর্জাতিক শীর্ষ পুরষ্কারপ্রাপ্ত হাফেজ নাজমুস সাকিব এর মশক ও তামরীন।

উম্মাহঃ আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য আপনার অশেষ শোকরিয়া আদায় করছি।

মাওলানা হাফেজ নাজমুল হাসানঃ উম্মাহ পরিবারকেও অনেক ধন্যবাদ।

————————————

সুপ্রিয় পাঠক, আপনাদের কেউ মুসলিম নারীদের উচ্চতর দ্বীনি শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার অপূর্ব সমন্বয়ে গড়া রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদরাসা’য় ভর্তিসংক্রান্ত বিষয়সহ সার্বিক কাজে যোগাযোগ করতে চাইলে নিচের ঠিকানাটি নোট রাখুন।

বাড়ী- ১২, শাহ মাখদুম এভিনিউ, সেক্টর- ১১, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা- ১২৩০
মোবাইল ফোন- ০১৭২০-২৩৬০৬১ (পরিচালক)।