Home ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন আজকে আল্লাহর রহম ছাড়া পরিত্রাণের কোন উপায় নেই!

আজকে আল্লাহর রহম ছাড়া পরিত্রাণের কোন উপায় নেই!

- উম্মাহ গ্রাফিক্স।

।। মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমূদী ।।

قَالَ لَا عَاصِمَ الْيَوْمَ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ إِلَّا مَن رَّحِمَ অর্থাৎ- আজকের দিনে আল্লাহর হুকুম থেকে কোন রক্ষাকারী নেই। একমাত্র আল্লাহ যাকে দয়া করবেন। (সুরা রাআদ- ৪৩ আয়াত)।

হযরত নূহ (আ.)এর বিপথগামী জাতি মহাপ্লাবনে ধ্বংস হওয়ার ইতিহাস পবিত্র কুরআনের যেসব আয়াতে বিস্তারিত বর্ণনা করেছে, এই আয়াত তার একটি অংশের উদ্ধৃতি। হযরত নূহ (আ.)কে আল্লাহ তাআলা প্রায় এক হাজার বছরের দ্বীর্ঘ হায়াত দান করেছিলেন। কিন্তু শতাব্দীর পর শতাব্দী প্রানপণ চেষ্টা করা সত্ত্বেও তাঁর স্বজাতি ঈমান গ্রহণ করলো না। তখন তিনি আল্লাহ তাআলার দরবারে তাদের সম্পর্কে ফরিয়াদ জানিয়েছিলেন-

وَقَالَ نُوحٌ رَبِّ لا تَذَرْ عَلَى الأرْضِ مِنَ الْكَافِرِينَ دَيَّارًا * إِنَّكَ إِن تَذَرْهُمْ يُضِلُّوا عِبَادَكَ وَلَا يَلِدُوا إِلَّا فَاجِرًا كَفَّا

অর্থাৎ- নূহ আরও বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আপনি পৃথিবীতে কোন কাফির গৃহবাসীকে রেহাই দিবেন না। যদি আপনি তাদেরকে রেহাই দেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দিতে থাকবে কেবল পাপাচারী, কাফির। (সূরা নূহ, আয়াত- ২৬ ও ২৭)।

হযরত নূহ (আ.)এর এই বদদোয়া আল্লাহ কবূল করলেন। যার ফলে সমস্ত নূহ জাতিকে আল্লাহ পাক মহাপ্লাবন দিয়ে ডুবিয়ে মারলেন। হযরত নূহ (আ.)এর পুত্র কিনআন’ও ঈমানের দাওয়াত অগ্রাহ্য করে অবাধ্যদের দলভূক্ত হয়েছিল। মহাপ্লাবন ঘনিয়ে আসল। তীব্র জলোচ্ছ্বাস শুরু হচ্ছে। ঈমানদারগণ আল্লাহ্‌র হুকুমে তৈরী করা জলযানে আরোহণ করলেন। হযরত নূহ (আ.) পিতৃসূলভ স্নেহ বশতঃ পুত্র কিনআন’কে ডেকে বললেন, কাফেরদের সাথে থেকো না ডুবে মরবে। কিনআন প্লাবনের ভয়াবহতা অগ্রাহ্য করে আস্ফালন করে তখন বলেছিল, ডোন্টওয়ারী, আপনি চিন্তিত হবেন না, আমি পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করে জলোচ্ছ্বাস থেকে আত্মরক্ষা করতে করব।

আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- لَا عَاصِمَ الْيَوْمَ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ إِلَّا مَن رَّحِمَ আজকে কোন উঁচু পর্বত বা সুউচ্চ অট্টালিকা আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে পারবে না এবং আল্লাহর খাছ রহমাত ছাড়া কারো বাঁচার কোন উপায় নেই।

আরও পড়তে পারেন-

‘ইবাদুর রাহমান’ বা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের বিশেষ ১২টি গুণ

কোভিড-১৯ মহামারী এবং ইসলামের শিক্ষা: ফরহাদ মজহার

আদর্শবানরূপে নিজেকে গড়তে চাইলে চার গুণাবলী অর্জন করতে হবে

‘হিজাব’ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করে: মার্কিন গবেষক!

বিশ্বকে প্রবলভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে করোনাভাইরাস

লেখার শিরোনামের পটভূমি সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরলাম। আশাকরি আমাদের বোধগম্য হবে যে, নভেল করোনা ভাইরাস বা কোভিট-১৯ মহামারীর আযাব থেকে রক্ষা করতে একমাত্র দয়াময় আল্লাহ ব্যতীত অন্যকোন উপায় নেই। শুধু তিনিই যদি রহম করেন। হোম কোয়ারেন্টিন, লকডাউন, আইসোলেশন, মাস্ক, পিপিই, হাসপাতালের ডাক্তার, আইসিও, ভেন্টিলেটর, মেডিসিন, সোস্যাল ডিস্টান্স, অত্যাধুনিক সব হাসপাতাল, বিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞান, সব মুখ থুবড়ে পড়েছে। শক্তিশালী দেশের শক্তিশালী লিডারগণের শির নত হয়ে দু’হাঁটুর মাঝে ঝুলে পড়েছে। কেউবা আসমানের দিকে তাকিয়ে আছে, হয়তো বুঝতে শুরু করেছে, আজকের দিনে একমাত্র আল্লাহর খাছ রহমত ছাড়া বাঁচার কোন উপায় নেই। হায়, যদি তারা ফিরে আসতো মেহেরবান, দয়াবান আল্লাহ কাছে!!

আল্লাহ এমন কারীম জাত, পথভোলা এ মানুষগুলোকে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর রহমাতের ছায়ায় আশ্রয় দিতেন।

সৃষ্টিজগতের প্রতিটি অণু-পরমাণু সৃষ্টিকর্তার নিয়ন্ত্রণে। স্থুল দৃষ্টিতে মানুষ হয়তো এই বলে আস্ফালন করতে পারে যে, আমরা বস্তুজগতের সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের জ্ঞান বিজ্ঞানের জোরে অনেক কিছু আবিষ্কার করেছে, অনেক কিছু আবিষ্কার করেছিল। কিন্তু বিজ্ঞানের এ চরম উন্নতি ও বিস্ময়কর আবিষ্কারের যুগেও আজকের মানুষ একেবারে অক্ষম অসহায়। আত্মভোলা মানুষ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের গৌরব ও অহংকারের নেশায় এমন মাতাল হয়েছে যে, মৌলিক সত্যটি তাদের চোখে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। তারা ভুলে গেছে যে, বস্তজগত ও সৃষ্টিজগতের গতি ও স্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষা করা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার কুদরতের অধীন।

এই ঈমানী শক্তির দূর্বলতার কারণে বস্তুজগতের নেশায় ভাবজগতের কথা, আধ্যাত্মিক জগতের কথা এবং পরকালের চেতনাশূন্য মস্তিষ্ক তা উপলব্ধি করার ন্যুনতম শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের পূজারী ও নানা তন্ত্রমন্ত্রের অন্ধ অনুসারীদের উপলব্ধি করা উচিৎ যে, বিজ্ঞানের বিস্ময়কর উন্নতির ফলে তারা হয়তো মহাশূন্যে আরোহণ করতে, গ্রহ হতে গ্রহান্তরে ভেসে বেড়াতে এবং  সাগর মহাসাগর পাড়ি দিতে পারবে। কিন্তু  জ্ঞান বিজ্ঞানের মাধ্যমে সমস্ত চেষ্টা ও পরিশ্রমের পরও উদ্ভাবিত ও আবিষ্কৃত শীল্প ও বৈষয়িক উপায় উপকরণের মূখ্য উদ্দেশ্য সুখ-শান্তি এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা তা কষ্মিনকালেও দিতে পারবে না তারা। বরং তা দিতে পারবে একমাত্র রাসূলে কারীম (সা.)এর পয়গাম ও শিক্ষার মাধ্যে, খোদাভীতি, আখেরাতর ভয় এবং প্রভুর স্মরণের মধ্যে।

الا بذكر الله تطمئن القلوب মনে রেখ, একমাত্র আল্লাহর জিকিরের মধ্যেই অন্তর সমূহের প্রশান্তি নিহিত।

বিস্ময়কর আবিষ্কার সমূহ বস্তুতঃ পক্ষে আল্লাহ তায়ালার অফূরন্ত কুদরত ও কল্পনাতীত সৃষ্টি বৈচিত্রকে ভাস্বর করে চলেছে। যার সামনে মানুষ তার অক্ষমতা ও অযোগ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য। কিন্তু অনভূতিশীল অন্তর ও অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন না হলে কিছুই লাভ হবে না।

করোনা ভাইরাসের মহামারীতে আতঙ্কিত ও বিপর্যস্ত বর্তমান বিশ্ব সমস্ত বৈষায়িক জৌলুস কে ফিকে করে দিয়েছে। আজ আরব, আজম, কালো, সাদা, মুসলিম, অমুসলিম সবাই মূক্তি চায়। আজকে যেন আর ভেদাভেদ নেই। কি অবাক করা এক বিশ্ব দেখাচ্ছে আল্লাহর কুদরতী ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র এক অদৃশ্য সৈনিক। খাঁটি ঈমানদারগণ পৃথিবীর পরিবর্তনশীল সকল অবস্থায় বিস্ময়কর জীবন যাপন করে।

হাদীসের বর্ণনায়- ঈমানদারগণ বিপদে মূছিবতে ধৈর্য্য ধারণ করে, নেয়ামতপ্রাপ্ত হলে শোকর আদায় করে। এ বিস্ময়কর ঈমান একমাত্র খাঁটি মুমিনদের বৈশিষ্ট্য, আর কারো নয়। কেননা মুনাফিকের চরিত্র অর্থাৎ যারা আকিদাগত মুনাফিক হোক কিংবা চরিত্রগত মুনাফিক হোক, তাদের হা হুতাশ অস্থিরতা কাফেরদের চেয়েও জঘন্য হয় বিপদ আপদের সময়।

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করতেই হয় যে, মুসলমানদের ক্ষতিগ্রস্ততার জন্য অতীত থেকে অদ্যাবধি মুসলমান নামধারী মুনাফিকদের ভূমিকাই যে সবচেয়ে জঘন্য, তা সর্বজন স্বীকৃত। আরব বিশ্ব, মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশেষ করে আরব উপসাগরের দেশগুলোর শাসকদের মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার চেয়ে নিজেদের পরিবারতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চিরস্থায়ী করার জন্য বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর তোষামুদিতে বেহিসাব পেট্রো ডলার ব্যয় করেছে। তপ্ত মরুভূমির খাইমাতে বসবাস করা নগ্নপদের মেষ রাখালেরা লূ হাওয়ার সাথে জীবন যাপন করা আরবরা যখন রাসূলে কারীম (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের পদচারনায় ধন্য মরুভূমি এবং মরুর বুকে পূন্যভূমির বরকতে তপ্ত বালুর তলদেশে তরল ব্লাক ডায়মন্ড কালো মানিকের মালিকানা প্রাপ্ত হল, অতি অল্প সময়ে বিশ্বের আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক এবং উন্নত দেশের প্রথম সারিতে পৌঁছে গেল।

নিঃসন্দেহে মূল বেদুইন আরব অধিবাসীরা এবং তখনকার শাসকগণ মহান আল্লাহর শোকর আদায় করতেন। ইসলামী বিশ্ব ও মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষায় বিশ্বের প্রতিটি ফোরামে সাহসী ভূমিকা পালন করতেন। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্ম যখন পাশ্চাত্য সভ্যতার আধুনিকতার অন্ধ অনুসরণে অভ্যস্ত হয়ে ভোগ বিলাসের নেশায় মত্ত হয়ে পড়ল। আরব্য তথা মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিক্ষা-সাংস্কৃতি, তাহযীব-তামাদ্দুনকে অপমান করে কিছু সংখ্যক শাসকগোষ্ঠী বিজাতীয় সাংস্কৃতি পুণ্যভূমিতে আমদানী করে। নিজেদেরকে ইসলাম এবং মুসলমানদের চির দুশমনদের অন্ধ পূজারী বানিয়ে আত্মমর্যাদা বৃদ্ধির বিভিন্ন নির্লজ্জ কর্মকান্ড শুরু করল।

এদের বিষয়ে পবিত্র কুরআনের সূরা নিসায় সুস্পষ্টভাবে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন- بَشِّرِ الْمُنَافِقِينَ بِأَنَّ لَهُمْ عَذَاباً أَلِيماً * الَّذِينَ يَتَّخِذُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَآءَ مِن دُونِ الْمُؤْمِنِينَ أَيَبْتَغُونَ عِندَهُمُ الْعِزَّةَ فَإِنَّ العِزَّةَ للَّهِ جَمِيعاً

মুনাফিকদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়ে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- “সেসব মুনাফিকদের শুনিয়ে দিন যে, তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। যারা মুসলমানদের বর্জন করে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধু বানিয়ে নেয় এবং তাদেরই কাছে সম্মান প্রত্যাশা করে; অথচ যাবতীয় সম্মান শুধু আল্লাহরই জন্য। (সূরা নিসা, আয়াত- ১৩৮ ও ১৩৯)।

আল্লাহ তাআলা সূরা আলে ইমরানে সুস্পষ্ট করে বলেছেন, “বলে দিন! আমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। আমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য রাজত্ব দান করি, যার কাছ থেকে চাই রাজত্ব ছিনিয়ে নেই এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করি, আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত করি। আর যাবতীয় কল্যাণ রয়েছে আল্লাহরই হাতে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাশালী। (সূরা আলে ইমরান, ২৬ আয়াত)।

এ জগতের বৈপ্লবিক ঘটনাবলী সম্পর্কে অজ্ঞ, জাতিসমূহের উত্থান পতনের ইতিহাস সম্পর্কে অনভিজ্ঞ এবং নূহ জাতি, আদ জাতি, সামুদ জাতি প্রভৃতি অবাধ্য জাতিগুলোর ধ্বংস কাহিনী সম্পর্কে উদাসীন ও মূর্খদের বার বার পবিত্র কুরআনে হুঁশিয়ার করা হয়েছে যে, বাহ্যিক শান-শওকত, চাকচিক্য, উন্নত প্রযুক্তি আর প্রভাব প্রতিপত্তি মহান আল্লাহর কাছে মশার একটা ডানার সমতুল্য মূল্যও নেই। আর আবিষ্কৃত সকল শক্তি আল্লাহর কাছে মাকড়সার জালের চেয়েও দুর্বল। জগতের সমস্ত শক্তি ও রাষ্ট্রক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর করায়ত্ত। সম্মান, অপমান তাঁরই নিয়ন্ত্রণাধীন। তিনি পথের ভিখারীকে রাজ সিংহাসন ও মুকুটের অধীকারি করতে পারেন এবং প্রবল প্রতাপান্বিত সম্রাটদের হাত থেকে রাষ্ট্র ও ঐশ্বর্য ছিনিয়ে নিতে পারেন।

আরও পড়তে পারেন- ‘গুনাহর ক্ষতি এবং বেঁচে থাকার উপায়’

লেখাটা যে শিরোনাম নিয়ে শুরু করেছিলাম যে, আজকে আল্লাহর রহম ছাড়া পরিত্রাণের কোন উপায় নেই। করোনা ভাইরাসের মহামারীতে বিশ্বের সকল চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা প্রতিষেধক আবিষ্কারে গলদঘর্ম। লকডাউন, হোম কোয়ারেন্টিনে মানুষ অতিষ্ঠ। আল্লাহর ঘরে গিয়ে সিজদা দিবে তাও নিয়ন্ত্রিত। বাংলাদেশের আঠারো কোটি জনবহুল দেশে করোনা টেষ্টের কিট যেখানে মাত্র এক লাখের কিছু বেশী। মোটকথা, উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তলানিতে যেই দেশ, সেই দেশে কে রক্ষা পাবে এই রোগ থেকে? আর কি চিকিৎসা সেবাই বা দিতে পারবে আমাদের দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা?

ডাক্তার রাশিদুল ইসলাম সাহেব স্যোশাল মিডিয়ায় আশাবাদ শুনিয়েছেন একটি ভিডিও পোষ্ট দিয়ে। তিনি বলেছেন, করোনা ভাইরাস আসছে। কিন্তু এটা এমন নয় যে তিন মাসের লকডাউনের পর এটা উড়ে চলে যাবে! এটা থাকবে এবং এর সাথেই আমাদের দ্বীর্ঘদিন বসবাস করতে হবে; যতদিন না ভ্যাকসিন তৈরী হবে।

তিনি আরো বলেছেন, আমরা ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া প্রভৃতি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছি এবং সুস্থও হয়েছি। করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা আল্লাহর মেহেরবানীতে আমাদের দেশের স্বল্প মেডিসিন সেবন এবং ঘরে বিশ্রাম অর্থাৎ দুসপ্তাহ ঘরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজেদেরকে সুরক্ষা করতে হবে। তাহলে আল্লাহর মেহেরবানীতে আমরা আস্তে আস্তে মুক্ত হতে পারব।

এটাই আমার লেখার উপসংহার যে, একমাত্র আল্লাহর মেহেরবানীতে আমরা সুস্থ থাকতে পারব। বাংলাদেশের মুসলমান যে কোন বিপদে মুছিবতে আল্লাহকে ডাকে, চোখের পানিতে গাল, দাড়ি ভিজিয়ে কাঁদে। গুনাহের জন্য তাওবা করে। আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ থেকে শুরু করে একজন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, নারী, শিশু সকলেই আল্লাহর রহমতের দুয়ারে শেষ রজনীতে সিজদা করছে, কান্নাকাটি করছে…। ঘরে ঘরে আজ মসজিদ। ইসলামী অনুশাসন তথা কুরআন ও সুন্নাহর শিক্ষায় জীবন-যাপন করার চেষ্টা করছে। গুনাহ থেকে বাচাঁর চেষ্টা করছে। একমাত্র আল্লাহই এই মহামারী থেকে বাংলাদেশকে এবং বিশ্বকে নাজাত দিতে পারবেন।

এই বিশ্বাস এবং ভরসা যত বেশী বৃদ্ধি পাবে এবং যত বেশী আমরা আল্লাহর সাথে গভীর নিবীড় সম্পর্ক অন্তরে সুদৃঢ় করতে পারব। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য আল্লাহকে খুশী করার জন্য সব রকম বিপদ-আপদ কষ্ট-ক্লেশের মধ্যেও মনে-মুখে আল্লাহর প্রতি কোন অসন্তোষ বা অভিযোগ না তুলে, সর্বাবস্থায় আল্লাহর ফায়সালার উপর যেন খুশী থাকতে পারি, এই রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের পবিত্র মাহে রমজানে আমরা সেই চেষ্টা করি, তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের উপর রহম, দয়া ও করুণা করবেন। আল্লাহুম্মা আমিন।

– মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমূদী, প্রখ্যাত আলেমে-দ্বীন, মুহাদ্দিস ও সহকারী মহাসচিব- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।

উম্মাহ২৪ডটকম: আরএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

এ সম্পর্কিত লেখা পড়তে পারেন- ‘আজকের রাজত্ব কার?,