Home স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা রেড মিট বা লাল মাংস: মানব দেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর?

রেড মিট বা লাল মাংস: মানব দেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর?

-ফাইল ছবি।

উম্মাহ অনলাইন: নতুন এই গবেষণা বলছে, স্বাভাবিক পরিমাণে লাল মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও  খাওয়া কমিয়ে দিলেই স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে যাবে- এই দাবির পেছনের প্রমাণ অত্যন্ত দুর্বল। জনসাধারণকে এটি বলে লাল মাংস কম খাওয়ার পরামর্শ দেয়ার পেছনেও খুব শক্তিশালী কোন প্রমাণ নেই। তবে এটি কতটা বিশ্বাসযোগ্য তা তথ্য যোগাড় ও বিশ্লেষণের পদ্ধতির উপর নির্ভর করবে।

অ্যানালস অফ ইন্টারন্যাশনাল মেডিসিন জার্নালে রেডমিট বা লালমাংস সম্পর্কিত একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে পুষ্টিবিজ্ঞানের জগতে চরম বিতর্ক শুরু হয়েছে। 

গবেষণাটি করা বিজ্ঞানীদল তাদের বিশ্লেষণকে এবিষয়ে এযাবত কালের বৃহত্তম ও যথাযথ বিশ্লেষণ বলছেন। তাদের বিশ্লেষণ বলছে, স্বাভাবিক পরিমাণে লাল মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও  খাওয়া কমিয়ে দিলেই স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে যাবে- এই দাবির পেছনের প্রমাণ অত্যন্ত দুর্বল। জনসাধারণকে এটি বলে লাল মাংস কম খাওয়ার পরামর্শ দেয়ার পেছনেও খুব শক্তিশালী কোন প্রমাণ নেই।

স্বাভাবিকভাবেই অনেক প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষজ্ঞরা এই প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলছেন, লাল মাংস যে মানব দেহের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এটি অনেক আগে থেকেই প্রমাণিত। নতুন এই গবেষণা প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ ও পুষ্টিবিজ্ঞান ও গবেষণায় জনসাধারণের আস্থা ভঙ্গ করবে। 

আরও পড়তে পারেন-

হিজরত ও হিজরী সন: ত্যাগের মহিমা ও উজ্জীবিত হওয়ার প্রেরণা যোগায়

বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি রোধ করা না গেলে ক্রমবর্ধমান অপরাধ প্রবণতার রাশ টেনে ধরা যাবে না

দাম্পত্য কলহের আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি: ঘণ্টায় ঘন্টায় সংসার ভাঙছে

ইসলামের মত একটি সমৃদ্ধ ও যুক্তিভিত্তিক ধর্ম আর কোনোটি নেই: রাণী এলিজাবেথ

ট্রাম্প মার্কিন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি: ওবামা

এই পর্যায়ে এসে, বিতর্কটি চলছে গবেষণার পদ্ধতি নিয়ে- কিভাবে তথ্য যোগাড় ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে, এবং তার ভিত্তিতে কিরূপ পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

পুষ্টি গবেষণার জটিলতা 

পুষ্টি গবেষণা পরিচালনা করা ও ফলাফল নির্ধারণ করা অত্যন্ত জটিল বিষয়। স্বাস্থ্যের উপর খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব বের করা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ একটি ব্যাপার। উদাহরণস্বরূপ, অস্টিওপরোসিস বা হাঁড়ক্ষয় নামক রোগের সঙ্গে সরাসরি কৈশোরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির সম্পর্ক আছে। ডায়েটের পরিবর্তন কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে বা বাড়াতে পারে কিন্তু এটি বুঝতেও ১৫ বছরের মতো সময় লাগতে পারে। এছাড়াও কিছু জেনেটিক ও এপিজেনেটিক বৈশিষ্ট্যের কারণে একই খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব বিভিন্ন মানুষের ওপর আলাদা।

এই সকল বিষয়ের কারণে কার্যকর ফলাফল পেতে বিশাল সময় ধরে বহু মানুষের ওপর গবেষণা করতে হয়। ফলস্বরূপ, খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কিত বেশিরভাগ গবেষণার ক্ষেত্রেই অংশগ্রহণকারীর মনে রাখার ক্ষমতা ও তথ্য প্রদানের উপর নির্ভর করে তাদের বিগত দিন, মাস বা বছরের খাদ্যাভ্যাসের তথ্য নেয়া হয়। এটি তথ্য সংগ্রহের নিখুঁত পদ্ধতি নয়।

এছাড়াও এসব ক্ষেত্রে অসংখ্য চলক বা পরিবর্তনশীল ব্যাপারও কাজ করে। আমরা সাধারণত একদিনে ৩/৪ বার খেয়ে থাকি। এছাড়াও আমরা এক সপ্তাহ সময়কালে এক ডজন ও এক বছর সময়কালে ১০০টির মতো বিভিন্ন ধরনের খাদ্য গ্রহণ করে থাকি। এছাড়াও বিভিন্ন মানুষ আলাদা পদ্ধতিতে এসব খাদ্য তৈরি করে, বিভিন্ন খাদ্যের মিশ্রণও ব্যক্তিভেদে আলাদা।

এগুলো ছাড়াও ব্যক্তির ঘুম, স্ট্রেস, কাজের পরিমাণ, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়। গবেষণার ক্ষেত্রে এসবকিছুর প্রভাব পরিমাপের ব্যাপারেও প্রশ্ন থেকে যায়। 

সব তথ্য যোগাড় করার পর স্বাস্থ্যের উপর কোনটির প্রভাবে কী সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে সেটি নির্ধারণ করার মতো জটিল ব্যাপারও কাজ করে। এছাড়াও দুটি ভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করে চালানো গবেষণার ফলাফলের মধ্যে তুলনা করার উপায় নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। সূত্র- টিবিএস।

উম্মাহ২৪ডটকম:এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।