Home লাইফ স্টাইল শাপলার যত পুষ্টিগুণ

শাপলার যত পুষ্টিগুণ

শাপলা ফুলের নাম মনে হতেই একরাশ ভালোবাসা ছুঁয়ে যায় অন্তরজুড়ে। গর্বিত মনে হয় নিজেকে। আমার ধারণা আমাদের দেশের সবারই কম-বেশি এমন হয়। কারণ শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এ কারণে শাপলা পৃথিবীর সেরা ফুল বলে মনে হয়। শাপলা ফুলের প্রতি আমাদের ভালোবাসা অপরিসীম।

শাপলা Nymphaeaceae পরিবারের সদস্য। এটা একটি গ্রীক শব্দের অনুবাদ। প্রাচীনকালে গ্রীসে জলদেবীদের এই ফুল উৎসর্গ করে উপাসনা করার নিয়ম ছিল। প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ নীল শাপলা, শাদা শাপলা ফুলের অনুরাগী। মানুষ এই ফুল রান্না করে এবং কাঁচা সালাদেও খেত এক সময়। তাছাড়া শাপলা অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন জাতির প্রার্থনার সময় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর মধ্যে মিশর, চীন, জাপান ও এশিয়ার বিভিন্ন এলাকা উল্লেখযোগ্য। এটি এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ।

বৈজ্ঞানিক নাম: Nymphaea. শাপলার প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি প্রজাতি আছে পৃথিবীতে। এদের বিভিন্ন দেশে ভিন্ন নামে ডাকা হয়। বাংলা ভাষায় এদের শাপলা, শালুক বলা হয়। ইংরেজিতে Water Lily বলা হয়, তামিল ভাষায় ভেলাম্বাল, সংস্কৃততে কুমুদ, অসমিয়া ভাষায় নাল বলা হয়। এমন আরো অনেক নাম আছে এদের বিশ্বের অন্যান্য দেশে। শাপলা ফুল নানা রঙের হয়। যেমন শাদা, লাল, গোলাপি, নীল, বেগুনী, হলুদ ইত্যাদি।

আরও পড়তে পারেন-

বর্ষার মৌসুমে অনেকের পছন্দের একটি তরকারি শাপলা। গ্রামের মতো শহরেও এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র, খাল, বিল, পুকুর, ডোবায় শাপলা পাওয়া যায়। সহজলভ্য শাপলা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এর পুষ্টিগুণ অনেক। চলুন শাপলায় কী কী পুষ্টিগুণ রয়েছে তা জেনে নিই-

শাপলা খুব পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি। সাধারণত শাক-সবজির চেয়ে এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। শাপলার রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। শাপলায় ক্যালসিয়ামের পরিমাণ আলুর চেয়ে সাত গুণ বেশি। শাপলা চর্ম ও রক্ত আমাশয়ের জন্য বেশ উপকারী।

প্রতি ১০০ গ্রাম শাপলার লতায় রয়েছে খনিজ পদার্থ ১.৩ গ্রাম, আঁশ ১.১ গ্রাম, খাদ্যপ্রাণ ১৪২ কিলো, ক্যালোরি-প্রোটিন ৩.১ গ্রাম, শর্করা ৩১.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৭৬ মিলিগ্রাম।

শাপলাতে থাকা গ্যালিক এসিড এনজাইম ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। শাপলাতে থাকা ফ্লেভনল গ্লাইকোসাইড মাথায় রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে মাথা ঠাণ্ডা রাখে। শাপলা ফুল ইনসুলিনের স্তর স্থিতিশীল রেখে রক্তে শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

শাপলা শরীরকে শীতল রাখে, হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায় ও পিপাসা দূর করে। প্রস্রাবের জ্বালা পোড়া, আমাশয় ও পেট ফাঁপায় শাপলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

আয়ুর্বেদিক ওষুধ বানাতে শাপলার ব্যবহার রয়েছে। এই ওষুধ অপরিপাকজনিত রোগের পথ্য হিসেবে কাজ করে। সাম্প্রতিক গবেষণায় পাওয়া গেছে, শাপলায় ডায়াবেটিস রোগের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে।

হৃদ রোগের দুর্বলতা কমাতে শাপলা ফুলের উপকারিতা অপরিহার্য। পাঁচ গ্রাম গোলাপ ফুল এবং দশ গ্রাম শাপলা ফুলের সঙ্গে দুই কাপ জল মিশিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে পরিমাণমতো চিনি মিশিয়ে নিন । দিনে দুবার করে নিয়মিত ১ মাস খেলে ভালো ফল পাবেন। শাপলা ফুল যকৃতের ক্ষতি প্রতিরোধ করে লিভার নিরাময় করতে সহায়তা করে।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।