Home সোশ্যাল মিডিয়া তরুণ আলেমরা বিভেদ নয়, ঐক্যের কথা শুনতে চায়

তরুণ আলেমরা বিভেদ নয়, ঐক্যের কথা শুনতে চায়

সহজ কথা, ঐক্যের পথে প্রতিবন্ধক হলো- চিন্তার বিভ্রান্তি ও আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা। অসচেতনতা, অজ্ঞতা ও অন্ধবিদ্বেষের কারণে ইসলাম যুগে যুগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেখা গেছে, চিন্তা ও কর্ম তৎপরতার মতপার্থক্যের কারণে এক আলেম অন্য আলেমকে মুনাফেক, উলামায়ে ছু, জাহেল, বিভিন্ন দল কিংবা মতের এজেন্ট, বাতেলপন্থী এমনকি কাফের বলেও আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। বিচ্ছিন্নভাবে সবাই নিজেদেরকে একমাত্র সত্যপন্থী হিসেবে দাবি করছেন। এ আচরণ কতটুকু ঠিক, তা বিবেচনার দাবি রাখে।

ইসলাম যেখানে মৌলিক বিষয় ঠিক রেখে ছোটখাটো কিছু বিষয়ে ভিন্নতার অবকাশ দিয়ে আমল করার পথকে সুগম করে দিয়েছে, সেখানে এই সুযোগকে কাজে না লাগিয়ে ভিন্নপথে চলা, মতবিরোধ জিইয়ে রাখা, লাগামহীন বিরোধীতা, নিজেদের ইচ্ছেমতো ভিন্নমত পোষণকারীদের দাবিয়ে রাখতে মিথ্যাচার, ভিন্ন ব্যাখ্যা, কান কথা শোনা- কোনোভাবেই কাম্য নয়।

বাংলাদেশের মুসলমানরা এখন বহুমুখী সংকটের সম্মুখীন। দেশে ইসলামি শিক্ষা-সংস্কৃতিকেই শুধু অবজ্ঞা করা হচ্ছে না, উপহাসও করা হচ্ছে। কষ্টের সঙ্গে বলতে হয়, ইসলামি অনুশাসনের অনুসরণ এখন অনেকের দৃষ্টিতে অপরাধ। এ অবস্থা আমাদের ঈমান-আকিদার জন্য ক্ষতিকর। এ থেকে উত্তরণের অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে ইসলামি দল এবং আলেম-উলামাদের ঐক্য।

নতুন প্রজন্মের তরুণ আলেমরা অনৈক্য ও বিভেদের পরিবর্তে ঐক্যের কথা শুনতে চায়, তারা মুসলিম মিল্লাতের কাণ্ডারি আলেম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ দেখতে চায়।

বলা ঠিক হবে কিনা জানি না, তবুও বলি, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানদের মধ্যে আন্তঃধর্ম ঐক্য যদি সম্ভব হয়, তাহলে মুসলমানদের বিভিন্ন দলের মধ্যে ইস্যুভিত্তিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা অবশ্যই কঠিন কিছু নয়। ঐক্যের বিষয়ে এসব নীতিমালা সামনে রাখা যেতে পারে-

  • কুরআন-সুন্নাহকে প্রধান ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এবং এ দৃষ্টিকোণ থেকে সব কিছু দেখতে হবে। সাহাবায়ে কেরাম আমাদের পথ প্রদর্শক। তাদের বিরুদ্ধে কটূ কথা বলা যাবে না
  • সর্বাবস্থায় হকের পাশে থাকতে হবে, শক্তির পাশে নয়। ইসলামের চেয়ে আর কোনো কিছুকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা যাবে না। দ্বীনের পরিপন্থী কোনো কিছুই গ্রহণ করা যাবে না।
  • চিন্তা এবং কাজে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে হবে। সুস্পষ্ট দলিল-প্রমাণ ছাড়া কোনো মুসলমানকে কাফের বলা যাবে না। গোনাহগার হলেও ঘৃণা করা যাবে না (তার সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে)।
  • শয়তান, নফস, কাফের-মুশরেক, মুনাফেক (বিশ্বাস ও আকিদায়) ও জালেম- এই পাঁচ শ্রেণির বাইরে মুসলমানদের সঙ্গে আর কারও দুশমনি নেই।
  • উপরোক্ত মূলনীতিগুলোকে সামনে রেখে উলামায়ে কেরাম এবং ইসলামি দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন বলে মনে করি।

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুর সাক্ষ্য দেয়, আমাদের কেবলাকে কেবলা বানায়, আমাদের মতো নামাজ আদায় করে, আমাদের জবাই খায়- সে মুসলিম। মুসলিমের সকল সুযোগ ও অধিকার তার জন্য প্রযোজ্য। আবার মুসলিমের সকল দায়-দায়িত্বও তার ওপর বর্তায়।’ [ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২০]

– মুফতি এনায়েতুল্লাহ
বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম, বার্তা২৪.কম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।