Home ইসলাম অবসর ভাতার সব টাকায় সমৃদ্ধ ইসলামী গণ-পাঠাগার!

অবসর ভাতার সব টাকায় সমৃদ্ধ ইসলামী গণ-পাঠাগার!

পেনশনের সব টাকায় ইসলামী গণ-পাঠাগার করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ডা. কায়াম উদ্দিন। বাড়ি-গাড়ি, ঘোরাঘোরি কিংবা সঞ্চয় কোনোটি করেননি তিনি। সুন্দর জীবন ও আলোকিত সমাজ গড়ার প্রশংসনীয় ও ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এটি।

‘ডাক্তার সাহেব’ নামে ব্যাপক পরিচিত ডা. কায়াম উদ্দিন। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর বাজারের নিজ বাড়িতে তার বাবার নামে গড়ে তোলেন ‘মৌলনা আব্দুস সুবহান ইসলামী গণ-পাঠাগার’। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সমৃদ্ধ এ ইসলামী গণ-পাঠাগার সব মহলে ব্যাপক প্রশংসনীয় হয়ে ওঠে।

বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে বিখ্যাত আদমপুর বাজার। এখানে সবাই যখন বৈষয়িক ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত; ঠিক সেই সময়টিতে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে বসেন ৬৭ বছর বয়সী ডা. কায়াম উদ্দিন। নিজ বাড়ির দোতালায় নতুন-পুরাতন অসংখ্য ইসলামী বইয়ে সমৃদ্ধ গণ-পাঠগার পরিচালনায় ব্যস্ত তিনি।

আরও পড়তে পারেন-

ডাক্তার সাহাবের বাড়ির গেইট সংলগ্ন গ্যারেজের উপরের তলায় তাকালেই দেখা যায় বড় ব্যানারে লেখা- মৌলনা আব্দুস সুবহান ইসলামী গণ-পাঠাগার। ইসলামী বইয়ের পাশাপাশি জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা বইয়ে সাজানো পুরো পাঠাগার। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেক বই এ পাঠাগারকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা।

সামাজিক ও সেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ডা. কায়াম উদ্দিন সব সময় অন্যদের বই পড়ার প্রতি নিরলসভাবে উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন। যে কারও সহযোগিতার প্রয়োজনে তিনি এগিয়ে যান সবার আগে। বিশেষ কোনো তথ্যের প্রয়োজন হলেও তিনি সহযোগিতা করেন। সবার জন্য তার এ পাঠাগার উন্মুক্ত।

ডা. কায়াম উদ্দিন মণিপুরি মুসলিম সমাজের প্রথম এমবিবিএস ডাক্তার। ২০১১ সালে সরকারি চাকুরি থেকে অবসর নেন। অবসর নেয়ার আগে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছিলেন। চাকরি অবসরের পর নিজ বাসায় পাঠাগার গড়ে তোলার পরও তিনি প্রতিদিন নিজ বাসায় রোগী দেখেন। রোগীরা চিকিৎসা নিতে ডাক্তার সাহেবের বাড়িতে চলে আসেন।

মাওলানা আব্দুস সুবহান ইসলামী গণ-পাঠাগারে বই পড়তে আসা ব্যক্তিদের জন্য নিজ উদ্যোগে ডা. কায়াম উদ্দিন হালকা চা-নাস্তার ব্যবস্থাও রেখেছেন। যাতে কারও চা-নাস্তার প্রয়োজন হলে নিজেরা বানিয়ে তা খেতে পারেন।

jagonews24

ইসলামী গণ-পাঠাগারে বসে বই পড়া, চা-নাস্তা ও ইসলামকে জানায় কিছুটা হলেও মানুষ উপকৃত হয়। জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ে সমাজের সর্বত্র। ডা. কায়াম উদ্দিনের প্রত্যাশাও তাই।

অবসর ভাতার পুরো টাকায় গড়ে তোলা এ ইসলামী গণ-পাঠাগারের প্রতিষ্ঠতা ডা. কায়াম উদ্দিনের আহ্বান-
‘পুরোনো ধর্মীয় বই কারও সংগ্রহে থাকেলে (চাইলে) গণ পাঠাগারে দান করতে পারেন৷ বরাবরই আমি ভাবতাম, সমাজের জন্য কিছু করব। প্রত্যন্ত এলাকায় পাঠাগার না থাকায় বইপড়ার সুযোগ নেই। আবার এমন অনেকেই আছেন, যাদের বই কিনে পড়ার সামর্থ্যও নেই। তাই মানুষকে অবসরে বিনামূল্যে বই পড়ানোর পরিকল্পনা করি।’

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, ‘শরীর সুস্থ রাখতেও বই পড়ার অভ্যাস দারুণভাবে মানুষকে সাহায্য করে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, বই পড়ার সঙ্গে শরীর এবং মনোজগতের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ফলে বই পড়লে অবশ্যই শারীরিক ও মানসিক সুফল পাওয়া যায়।

চাকরি জীবনের শেষ সম্বল দিয়ে ডা. কায়াম উদ্দিন গড়ে তুলেছেন ইসলামী গণ-পাঠাগার। সমাজের জন্য এটি এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ডা. কায়াম উদ্দিনের এ পাঠাগার যতদিন থাকবে ততদিনই মানুষের মাঝে বিলিয়ে যাবে জ্ঞানের আলো।

জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হোক আদমপুর, কমলগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের মানুষ। গড়ে তুলুক সুন্দর সমাজ। আলোকবির্তকা হয়ে প্রতিষ্ঠিত থাকুক মৌলনা আব্দুস সুবহান ইসলামী গণ-পাঠাগার।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।