Home ইতিহাস ও জীবনী মসজিদে নববী (সা.): মাটির ঘর থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ

মসজিদে নববী (সা.): মাটির ঘর থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ

।। বেলায়েত হুসাইন ।।

সৌদি আরবের মদিনা মুনাওরায় অবস্থিত মসজিদে নববী (সা.) বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর নিকট ধর্মীয় দিক থেকে দ্বিতীয় পবিত্রতম স্থান। মসজিদটি সবশেষ নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) -এর মাদানী জীবনে ইসলামের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হতো। একাধিক হাদিস সূত্রে জানা যায়, মসজিদে নববীতে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার দ্বারা মক্কা মুকাররমার মসজিদুল হারাম ব্যাতিত পৃথিবীর যেকোনো মসজিদে নামাজ আদায়ের তুলনায় হাজার গুণ বেশি সওয়াব অর্জিত হয়।

মহানবী (সা.) মক্কা থেকে তত্কালীন ইয়াসরিব তথা আজকের মদিনা নগরীতে হিজরতের পরে এই মসজিদ নির্মাণ করেন। মদিনায় মসজিদে কুবার পরে নির্মিত দ্বিতীয় মসজিদ মসজিদে নববী। ঐতিহাসিক এই মসজিদের মধ্যে এমন একটি বরকতপূর্ণ স্থান রয়েছে যাকে জান্নাতুল বাকী বা জান্নাতের বাগান আখ্যায়িত করা হয়েছে। হজরত আবু হুরাইরাহ (রা.) এর সূত্রে সহীহ বুখারী শরিফে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, আমার ঘর এবং আমার মসজিদের মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানে জান্নাতের একটি টুকরা রয়েছে।

প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরনো এই মসজিদটি নির্মাণের পর থেকে ধাপেধাপে সংস্কার ও সম্প্রসারণের ফলে মদিনা নগরীর প্রাচীন সীমানা অতিক্রম করে আরো বেশি জায়গাজুড়ে বিস্তৃত হয়ে পড়েছে। এবং ইসলামরে একাধিক স্মৃতিবিজড়িত এলাকা এখন রূপান্তরিত হয়েছে মূল মসজিদের অংশে হিসেবে। এসব এলাকায় ইসলামের প্রাথমিক যুগের অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন ছিল। যেমন- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমের রওজা মোবারক, একই সঙ্গে তাঁর দুই প্রিয় সাহাবা হজরত আবু বকর ও হজরত ওমর (রা.) এর কবর, রাসুলের প্রিয়তমা স্ত্রী হজরত আয়েশার হুজরা (কক্ষ) মুবারক এবং অন্যান্য একাধিক বিবির ঘর- এসবই এখন বিগত কয়েক শতাব্দীর সংস্কার ও বর্ধণের ফলস্বরূপ মসজিদের মূল অংশে প্রবেশ করেছে।

আজ থেকে ১৪৪২ বছর পূর্বে এই মসজিদ আখেরী নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর বাসগৃহের সন্নিকটে ৬৩২ খৃষ্টাব্দে নির্মাণ করা হয় এবং পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে একাধিক বার এর সম্প্রসারণ করা হয়। সুলতান গালিব আল কায়িতী এপ্রসঙ্গে লিখেন, ১৯০৯ সালে আরব উপদ্বীপের একমাত্র ভবন হিসেবে  মসজিদে নববীতে আলোকসজ্জার জন্য বিদ্যুতের ব্যবহার করা হয়।

মসজিদে নববীর সবচেয়ে বড় সম্প্রসারণ কাজটি হয় বাদশাহ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল আজিজের শাসনামলে। বর্তমানের আকৃতিটি এরই পূর্ণরূপ। বলা হয়, এই সম্প্রসারণের পরই প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মুসলমানের গন্তব্যস্থল মসজিদে নববীতে হজের মৌসুমে একসঙ্গে অন্তত ১৮ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

মসজিদের সুযোগ-সুবিধা:

অতি সাম্প্রতিক ইসলামিক একটি মসিক ম্যাগাজিনে ‘মসজিদে নববী ও সবুজ গম্বুজ’ শিরোনামের এক প্রবন্ধে জাফর বাঙ্গাশ লিখেছেন, প্রথম দিকে মসজিদে নববীর ক্ষেত্রফল ছিল- ৯৮ বাই ১১৫ ফুট। পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে মসজিদকে একাধিকবার সম্প্রসারণ করা হয়েছে- যেন, সমাগত মুসল্লি, বিশেষত হজ মৌসুমে আগত হাজী সাহেবগণ সবাই একত্রে একই জামাতে নামাজ আদায় করতে জায়গার সঙ্কটে না পড়েন। স্মরণীয় যে, মসজিদে নববী (সা.) বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর নিকট পবিত্রতম তিনটি স্থান- যেখানে সওয়াব অর্জনের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ সফর করার অনুমতি দেয়া হয়েছে- তার একটি।

ডক্টর শফিক ওমর তার একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, প্রাথমিক সময়ের মসজিদে নববীর চেয়ে বর্তমানের স্থাপনাটি প্রায় শত গুণ বড় এবং আজকের মসজিদটি মহানবী (সা.) এর প্রাচীন মদিনা নগরীকে বেষ্টন করে নিয়েছে। তিনি লিখেছেন, মসজিদের বাইরের প্রাচীর জান্নাতুল বাকিকে স্পর্শ করেছে- যা রাসুলের সময়ে নগরীর উপকন্ঠ হিসেবে বিবেচিত হতো। ডক্টর শফিক ওমর মুহাম্মাদ ওয়াজিদ আখতার রচিত ‘মসজিদে নববী সম্পর্কে অজানা নয় তথ্য’ গ্রন্থের সূত্রে এই কথা বর্ণনা করেছেন।

মসজিদে নববী (সা.) এ একসঙ্গে ১৮ লক্ষ মুসল্লির নামাজ আদায় ২০১২ সালে বাদশাহ আব্দুল্লাহর সম্প্রসারণ প্রকল্পের অসামান্য অবদান। মসজিদের বর্তমান আয়তন সম্পর্কে সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী ইবরাহিম আসাফ জানান, মূল স্থাপনাটি অন্তত ছয় লক্ষ ১৪ হাজার আটশত বর্গ মিটার জায়গাজুড়ে অবস্থিত। আর মসজিদ ও তার আঙ্গিনার একত্রিত আয়তন হলো- দশ লক্ষ বিশ হাজার পাঁচশত বর্গ মিটার। অর্থাৎ মূল মসজিদে একইসঙ্গে ১০ লক্ষ মুসল্লি এবং আঙ্গিনায় ৮ লক্ষ- সর্বমোট ১৮ লক্ষ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

মসজিদের মুখপাত্র শায়খ আব্দুল ওয়াহেদ আল হাত্তাবের সূত্রে আরব নিউজ জানায়, বাদশাহ আব্দুল্লাহর নির্দেশে মসজিদে বিশেষ কাঠামোতে তৈরি ২৫০ টি ছাতা স্থাপন করা হয়। এসব ছাতা অন্তত এক লক্ষ ৩৪ হাজার বর্গমিটার এলাকায় ছায়া দান করতে সক্ষম। দ্বি-স্তরবিশিষ্ট স্বয়ংক্রিয় এই ছাতাগুলো সমাগত মুসল্লিদের বৃষ্টি ও আরব মরুর জ্বলন্ত সূর‌্যালোকের তীব্র উত্তাপ থেকে সুরক্ষিত রাখে।

পরিবেশ:

মসজিদে নববী (সা.) এর পশ্চিম দিকের প্রাচীর ঘেঁষা ঐতিহাসিক জান্নাতুল বাকি কবরস্তান ওইসব ইমারত ও জায়গার অন্তর্ভূক্ত যা তার আশপাশ ঘিরে রেখেছে। এই কবরস্তান মুসলমানদের নিকট অত্যন্ত মর‌্যাদাপূর্ণ। কারণ, এখানে মহানবী (সা.) এর স্ত্রী, কন্যা এবং আরো একাধিক আত্মীয়র কবর রয়েছে।

মসজিদ প্রাঙ্গণের আশপাশে যেসব বিল্ডিং, ইমারত এবং জায়গা রয়েছে- এরমধ্যে সৌদি সরকারের বিভিন্ন কার‌্যালয়, হাসপাতাল, শপিংমল, বিলাসবহুল হোটেল এবং মহাসড়ক উল্লেখযোগ্য।

মদিনা মুনাওয়ারার মসজিদে নববী ও মক্কা মুকাররমার মসজিদুল হারাম- দুটিই একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। আর মসজিদের দেখভালের দায়িত্ব স্বয়ং রাজ পরিবারের উপর। খোদ বাদশাহকে ‘খাদেমুল হারামাইনিশ শারিফিইন’ ( পবিত্র দুই মসজিদের সেবক) বলা হয়।

ইমামতি:

মসজিদে নববীর সর্বপ্রথম ইমাম ছিলেন মহানবী (সা.)। তাঁর ইন্তেকালের পর সাহাবায়ে কেরাম (রা.) ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে মসজিদের প্রধান ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন সৌদি আরবের প্রবীণ আলেম শায়খ আলি আল হুজাইফি। বিগত ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর তাঁর সহযোগী স্বরূপ মসজিদে নববীতে আরো দুইজন ইমাম নিয়োগ দিয়েছে সৌদি সরকার- এদের একজন শায়খ হুজাইফিপুত্র শায়খ আহমাদ হুজাইফি, অপরজন হলেন শায়খ খালেদ আল মিহান্না। এরা ছাড়াও আরো কয়েকজন ইমাম নিযুক্ত আছেন, তারা বিশেষত তাহাজ্জুদ নামজের ইমামতি করেন।

মুয়াজ্জিন:

মোবারকপুরীর মতে, রাসুল (সা.) মসজিদের নববীর জন্য সর্বপ্রথম মুয়াজ্জিন নিয়োগ দেন বিখ্যাত সাহাবি হজরত বেলাল (রা.)-কে। বর্ণনা অনুযায়ী সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে জায়েদ যখন মহানবী (সা.)- কে স্বপ্নে আজান দেখার বিষয়ে জানালেন, তখন তিনি তাকে নির্দেশ দিলেন, সে যেন বেলালকে নামাজে ডাকার জন্য আজান দিতে বলে। কারণ, হজরত বেলালের কন্ঠস্বর উঁচু ছিল।

সৌদি গণমাধ্যম রিয়াদের সূত্রে মসজিদে নববীর প্রধান মুয়াজ্জিন শায়খ আবদুর রহমান খাশোগি জানান, বর্তমানে মসজিদে নববীতে অন্তত ১৭ জন মুয়াজ্জিন আছেন, তারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান দেন। তবে প্রতিদিনের জন্য তিনজন মুয়াজ্জিন নির্ধারিত রয়েছেন, পাঁচ ওয়াক্ত আজান দেয়ার পাশাপাশি তারা মুকাব্বিরের দায়িত্বও পালন করে থাকেন।

মসজিদের সূচনা:

ঐতিহাসিক মুবারকপুরীর সূত্রে জানা যায়, ইসলামের সবশেষ নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) মদিনায় পৌঁছে স্থানীয় দুই এতিম সহোদর সাহিল ও সুহাইলের কাছ থেকে দশ দিনারের বিনিময়ে মসজিদের জায়গাটি ক্রয় করেন। এর আগে জায়গাটিতে খেজুর শোকানো হতো। মসজিদ নির্মাণে স্বয়ং রাসুল (সা.) অংশগ্রহণ করেন। পাথর দ্বারা এর ভিত্তি স্থাপন করা হয়। প্রাচীর তৈরি করা হয় মাটি দিয়ে। ছাদে ব্যবহার করা খেজুর গাছের ডাল ও কান্ড।

শুরুতে মসজিদের দরজা ছিল মাত্র তিনটি। আর মসজিদকে বর্তমান ফিলিস্তিনের মসজিদুল আকসার অভিমুখী করে নির্মাণ করা হয়েছিল। ওই সময়ে মুসলমানদের কিবলা ছিল হজরত সুলাইমান (আ.)- এই মসজিদ। দরিদ্র ও দূরের মুসাফিরদের জন্য একটি বিশেষ বিশ্রামাগারও তৈরি করা হয়েছিল। পরে যখন পবিত্র কাবাগৃহ ফের কিবলা নির্বাচিত হয় তখন মসজিদে নববীর মুখও মক্কা অভিমুখী করে দেয়া হয় এবং একটি দরজা বন্ধ করে বিপরীত্ পাশে আরেকটি দরজা সংযোজন করা হয়। নির্মাণকালে মসজিদের আয়তন ছিল- এক হাজার বর্গমিটার, অত:পর হিজরতের সাত বছর পরে মহানবী (সা.)- এর নির্দেশে তা বৃদ্ধি করে চৌদ্দশো ২৫ বর্গমিটার করা হয়।

মহানবী (সা.)এর বাসগৃহ:

মসজিদের সঙ্গেই মহানবী (সা.)-এর বাসগৃহ নির্মাণ করা হয়। হজরত আয়েশার হুজরা মোবারকও এখানেই অবস্থিত ছিল। ইসলামের সবশেষ নবী মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহর ইন্তেকালও হয় এখানে এবং এখানেই তাঁকে দাফন করা হয়।

ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, প্রিয়নবীর ইন্তেকালের পরে যখন তাঁর সঙ্গীরা তাঁকে সমাহিত করার জন্য একটি সর্বোত্তম জায়গার সন্ধান করছিলেন তখন হজরত আবু বকর (রা.) তাঁদের জানান, রাসুল (সা.) বলেছেন, নবীগণকে সেখানেই দাফন করতে হয়, যেখান থেকে মহান আল্লাহ তাঁদের রূহ কবজ করেন।

অত:পর প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রা.) যখন মৃত্যুশয্যায় শায়িত, তখন তিনি তাঁর কন্যা হজরত আয়েশা (রা.)-এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করলেন যে, আমি রাসুল (সা.)-এর শিয়রে সমাহিত হতে চাই। কন্যার অনুমতি সাপেক্ষে মৃত্যুর পর প্রথম খলিফাকে তাঁর ইচ্ছানুযায়ী স্থানে দাফন করা হয়। অনুরূপ একই ঘটনা ঘটেছে দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)- এর ক্ষেত্রেও; তিনিও শত্রুর হামলায় আহত হবার পরে আয়েশা (রা.)-এর নিকট অনুমতি চান এবং হজরত আয়েশা ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করলে মৃত্যুর পর তাঁকেও মহানবী (সা.)- এর পাশেই সমাহিত করা হয়।

তারপর বিগত বিভিন্ন শতাব্দীতে মসজিদে নববীর সংস্কার ও সম্প্রসারণের ফলে ‘তিন কবর’ বিশিষ্ট হজরত আয়েশার হুজরা মোবারক মূল মসজিদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায়। আর মসজিদে নববী (সা.)-এর প্রসিদ্ধ যে সবুজ গম্বুজটি রয়েছে সেটি এই হুজরা বা কামরার উপরই নির্মাণ করা হয়েছে।

মসজিদে নববীর সৌন্দর্য:

চোখধাঁধানো নির্মাণশৈলী ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত এই মসজিদের প্রতিটি জিনিসই সর্বাধিক সুন্দর ও ‍রুচিকর। একথা বললে অতুক্তি হবেনা যে, বাস্তবিকই মসজিদে নববী সৌন্দর‌্য বিবেচনায় বিশ্বের অন্যতম একটি ধর্মীয় স্থাপনা। কাছ থেকে দেখলে যেমন চোখজুড়ায়, তেমনি দূর থেকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেও মসজিদে নববীর মোহনীয়তায় মন নেচে ওঠে। মসজিদের ভিতর-বাহির সবখানেই আধুনিকতা ও নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর ব্যবহার এবং পরিচালনার দারুণ সব ব্যবস্থা অত্যন্ত সুন্দর উপায়ে সাজানো হয়েছে। এর বিস্তৃত আঙ্গিনা, সজ্জিত ছাদ, সুউচ্চ গম্বুজ ও মিনারা, বাহারি আলোকসজ্জা, সাউন্ড সিস্টেম, দেয়াল, সিঁড়ি এবং কার্পেট- সব জায়গারই নিপুন সৌন্দর‌্য যে কোনো রুচিশীল দর্শকের মন কেড়ে নিবে।

মসজিদে নববীর মুখপাত্র শায়খ আবদুল ওয়াহেদ হাত্তাব জানান, মসজিদের আঙ্গিনায় ২৫০ টি মিনারার উপরে সয়ংক্রিয় বিশেষ ছাতা স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ছাতা মসজিদের অন্তত ১৪৩ বর্গমিটার জায়গায় ছায়া দান করে এবং আগত অন্তত আটশত মুসল্লিকে মৌসুমি রৌদ্রতাপ ও ঠান্ডা থেকে সুরক্ষা দান করে।

দরজা:

আর্কিটেকচারাল ডিজাইন অনুসারে বর্তমানে মসজিদের দরজার সংখ্যা ৪১ টি। প্রতিটি দরজার উপরে একটি শিলালিপি লাগানো রয়েছে- পবিত্র কোরআনের সুরা হিজরের ৪৬ নাম্বার আয়াতের অনুসারে তাতে লেখা, শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে প্রবেশ করুন। তবে শায়খ হাত্তাবি বলেছেন, মসজিদে নববীর দরজা সংখ্যা ৮৫টি। কিছু গেটে দরজা রয়েছে মাত্র একটি, কিছুতে দুইটি- এভাবে একটি গেটে পাঁচটি দরজা পর‌্যন্ত রয়েছে। তা ছাড়া, একাধিক লিফটের ব্যবস্থাও আছে- যা আপনাকে এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোর কিংবা এক তলা থেকে অন্য তলায় নিয়ে যাবে।

আয়তন:

মসজিদের আয়তন সম্পর্কে হারামাইন শরিফাইনের জেনারেল প্রেসিডেন্সি জানিয়েছে, মহানবী (সা.) প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে তাঁর মসজিদের আয়তন এক হাজার ৫০ বর্গমিটার নির্ধারণ করেছিলেন। জেনারেল প্রেসিডেন্সির এক মুখপাত্রের বরাতে ওকাজ জানায়, হিজরতের সাত বছর পর মহানবীর নির্দেশে এটি বাড়িয়ে চৌদ্দশো ২৫ বর্গমিটার করা হয়। এর পাশাপাশি রাসুলের ইন্তেকালের পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে একাধিকবার মসজিদে নববীর সম্প্রসারণ ও পুর্নগঠন করা হয়- যার সূচনা হয় হজরত ওমর (রা.)- এর হাত ধরে এবং একেক করে আব্বাসী,  উমাইয়া ও উসমানী খেলাফত হয়ে বর্তমান সৌদি শাসনামল পর‌্যন্ত চলতে থাকে। কালপরিক্রমায় মদিনায় মুসলিম জনমিতি বৃদ্ধির ফলে মূল মসজিদের কাঠামোও বাড়ানো হয়। কেননা, বিশ্বনবী (সা)  মক্কার মসজিদুল হারামের পরে পৃথিবীর অন্য সব মসজিদের চেয়ে তাঁর মসজিদে নামাজ আদায়ে এক হাজার গুণ বেশি সওয়াবের কথা উল্লেখ করেছেন। সারা বছর ওমরার জন্য এবং হজের মৌসুমে লাখ লাখ মুসল্লি মসজিদে নববীতে হাজির হন।

‘হজরত মুহাম্মদ ও মদিনার নগরায়ণ’ শীর্ষক এক অনুসন্ধ্যানী রিপোর্টে জানানো হয়, মসজিদে নববী (সা.)-এর বর্তমান আয়তন নির্মাণকালীন আয়তনের চেয়ে প্রায় শত গুণ বেশি। ঐতিহাসিকগণ বলেন, মসজিদের বর্তমান পরিধি প্রাচীন মদিনা  নগরীর প্রায় সবটুকু অঞ্চল বেষ্টন করে নিয়েছে। ড. মুহাম্মদ ওয়াজেদ আখতার লিখেছেন, মসজিদে নববীর বহিরাংশ জান্নাতুল বাকিতে গিয়ে মিশেছে, অথচ জান্নাতুল বাকি এক সময় প্রাচীন মদিনা নগরীর বাইরে ছিল। এজন্য একথা বলতে সমস্যা নাই যে, বর্তমানে মসজিদে নববী (সা.) সম্পূর্ণ প্রাচীন মদিনায় বিস্তৃত হয়েছে।

আরও পড়তে পারেন-

রাসুল (সা.)-এর পর সর্বপ্রথম দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) মসজিদের সংস্কারে হাত দেন। ভীড়ের কারণে ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এটির সম্প্রসারণ করেন। মসজিদের চারপাশে জমিন ক্রয় করে তিনি এর আয়তন বৃদ্ধি করেন। তবে যেদিকে উম্মাহাতুল মুমিনিনদের গৃহ ছিল-সেদিকটা অপরিবর্তিত রাখা হয়। এরপর ৬৫০ খৃষ্টাব্দে (২৯ হিজরি) তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমানও মসজিদে নববী সংস্কারের প্রয়োজন অনুভব করেন। সাহাবায়ে কেরামের পরামর্শক্রমে তিনি সর্বপ্রথম খোদাইকৃত পাথর ও প্লাস্টারের দেয়াল তৈরি করেন। এবং খোদাইকৃত পাথর ও লোহার ব্যবহারে পিলার ও স্তম্ভ স্থাপন করেন। আর ছাদ নির্মাণ করেন কাঠ দিয়ে।

৭০৭ সালে (৮৮ হিজরি) তৎকালীন খলিফা উমাইয়া শাসক ওলিদ ইবনে আব্দুল মালিকের নির্দেশে মক্কার গভর্নর ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ মসজিদে নববীর সম্প্রসারণ করেন। এবং তার পরিধি বৃদ্ধি করে ছয় হাজার চারশত চল্লিশ বর্গমিটার করেন। তিনি মসজিদে চারটি মিনারা ও একটি মেহরাব স্থাপন করেন। তা ছাড়া অভ্যন্তরীণ স্তম্ভগুলোকে মরমর পাথর ও সোনার কারুকার্জ করেন। এসময় স্তম্ভের সংখ্যা ছিল ২৩২ টি।

আব্বাসী খলিফা আল মাহদি ১৬১-১৬৫ হিজরিতে মসজিদের কাজ করেন। এরপর মসজিদের আয়তন আট হাজার আটশত নব্বই বর্গমিটারে উন্নিত হয়। আল মাহদি ৬০ টি জানালা ও ২৪ টি দরজা লাগান।

১২৫৭ সালে (৬৫৪ হিজরি) আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হলে খলিফা আল মুতাসিম মসজিদে নববী পুন:নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন কিন্তু ৬৫৬ হিজরিতে তাতারিরা বাগদাদে হামলা করলে খলিফার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

মামলুক শাসনামলেও মসজিদে নববী (সা.)-এর সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়। প্রধান চারটি ফটক ব্যতিত অন্য দরজাগুলোকে পিতল দ্বারা নকশা ও সজ্জিত করা হয়।

উসমানী খলিফা সুলতান সুলেমান গম্বুজ মেরামত করেন এবং তার উপর সোনায় মোড়ানো চাঁদ স্থাপন করেন। কৃত্রিম চাঁদ স্থাপন মূলত শুরু হয় এর আগে মামলুক আমলে। ১২২৮ খৃষ্টাব্দে সুলতান মাহমুদ গম্বুজটি সবুজ রঙে আবৃত করেন, যা এখনো সবুজ রঙেই আচ্ছাদিত রয়েছে।

১২৭৭ হিজরিতে ফাটল দেখা দিলে সুলতান আব্দুল মাজিদ পুনরায় মসজিদের সংস্কার করার প্রতি উদ্যোগী হন এবং কাজ সম্পন্ন করেন। এরপর মসজিদের আয়তন বেড়ে ১০ হাজার তিনশত তিন বর্গমিটার হয়। আল জাজিরার তথ্যানুযায়ী এসময় তিনি পাঁচটি নতুন দরজা সংযুক্ত করেন এবং ১১ মিটার পর‌্যন্ত প্রাচীরের উচ্চতা বৃদ্ধি করেন। তা ছাড়া ১৭০ টি গম্বুজ ও ৬০০ টি তেলপ্রদীপ স্থাপন করা হয়।

ঐতিহাসিক সুলতান গালিব কুয়েতি জানান, আরব উপদ্বীপের একমাত্র ও সর্বপ্রথম স্থাপনা হিসেবে ১৯০৯ সালে (১৩২৭ হিজরি) মসজিদে নববী (সা.)-তে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়।

সৌদি যুগ আরম্ভ হলে বাদশাহ আব্দুল আজিজ আল সৌদ ১৯৫০ সালে মসজিদে নববীর পরিধি ১৬ হাজার তিনশত ২৭ বর্গমিটার পর‌্যন্ত বৃদ্ধি করেন। এসময় মসজিদের স্তম্ভ ছিল ৭০৬ টি ও গম্বুজ ছিল ১৭০ টি। বাদশাহ আব্দুল আজিজের জামানায় বিদ্যুত সরবরাহের ক্ষেত্রে মসজিদে নববীর এক নবযুগের সূচনা হয়; বিশেষ একটি স্টেশন থেকে রাত-দিন চব্বিশ ঘন্টা মসজিদে বিদ্যুত সরবারাহ করা হতো। মসজিদে নববীর মুখপাত্র আল হাত্তাব জানন, এসময় এখানে অন্তত দুই হাজার চারশত সাতাশটি বাতি ছিল।

আরব নিউজ জানায়, ১৯৭৩ সালে বাদশাহ ফয়সাল মসজিদের পশ্চিম দিকে প্রায় সাড়ে পয়ত্রিশ হাজার বর্গমিটার জায়াগার বরাদ্দ দেন এবং সম্গ্র এলাকাজুড়ে বৈদ্যুতিক পাখা, সাউন্ড সিস্টেম ও বিশেষ ছাতা স্থাপন করেন। ১৩৯৮ হিজরি সনে বাদশাহ খালিদ বিন আব্দুল আজিজের সম্প্রসারণের পরে বাদশাহ ফাহাদ ফের ১৪০৫-১৪১৪ হিজরিতে মসজিদে নববীর পুন: সংস্কার করেন। এসময়ই মসজিদের ভিতরের দরজাগুলো প্রশস্ত করা হয় এবং চলন্ত সিঁড়ি স্থাপন করা হয়। এতে মসজিদের সর্বমোট দরজা সংখ্যা ৮৫ টিতে গিয়ে দাঁড়ায়। এরমধ্যে গম্বুজ , চারটি মিনারা ও ১৩ টি দরজাকে বিশেষ সাজে সজ্জিত করা হয়। সবশেষ এবং সবচেয়ে বড় সম্প্রসারণের কাজটি করেন বাদশাহ আব্দুল্লাহ; ২০১২ সালে তাঁর সংস্কারের পরে মসজিদে নববী (সা.) একইসঙ্গে প্রায় বিশ লক্ষ মুসল্লির নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুত হয়।

বাদশাহ আব্দুল্লাহর পরে প্রিন্স সালমান সৌদির শাসনক্ষমতা গ্রহণ করেন। তিনিও পূর্ববর্তীদের পদাঙ্ক অনুসরণে মসজিদে নববীর ‍উন্নয়ন অব্যাহত রাখেন। নির্দেশ দেন- হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করে মসজিদে নববীর যাবতীয় সংস্কারের।

স্মৃতিবিজড়িত মিম্বর:

যে স্থানে দাঁড়িয়ে রাসুল (সা.) সাহাবাদের সামনে খোতবা দিতেন, এটাকে মসজিদে নববীর সবচেয়ে প্রধান ও পবিত্র জায়গাগুলোর মধ্যে শুমার করা হয়। মুবারকপুরী বলেন, মসজিদে নববী (সা.)-এর সর্বপ্রথম মিম্বরটি তৈরি করা হয় খেজুরের তক্তা দিয়ে- এতে তিনটি ধাপ বা স্তর ছিল। রাসুলের ওফাতের পরে পরবর্তী খলিফাগণও এই মিম্বরে দাঁড়িয়ে খোতবা দিতেন। হজরত আবু বকর ও ওমর (রা.)-এর খেলাফতকালে তাঁরা দুজনেই মিম্বরের দ্বিতীয় সিঁড়িতে আরোহন করে খোতবা প্রদান করতেন। হজরত ওসমান শুরুতে প্রথম সিঁড়িতে পরবর্তী সময়ে রাসুলের মতোই তৃতীয় সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে খোতবা দিয়েছেন।

কিন্তু ৮৮৬ হিজরিতে আগুন লাগার ঘটনায় মহানবীর মিম্বরটি পুড়ে যায়। এরপর মদিনাবাসী ইট দিয়ে একটি মিম্বর তৈরি করেন। মামলুক শাসনামলে সুলতান কায়েতবাই মরমর পাথরের একটি সুদৃশ্য মিম্বর প্রেরণ করেন।

মেহরাব:

ইমাম সাহেব যে স্থানে দাঁড়িয়ে নামাজের ইমামতি করেন, ওই জায়গাকে মেহরাব বলা হয়। মসজিদে নববীতে মেহরাব দুইটি। একটি হলো- মসজিদ প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে নির্মিত মেহরাব-যেখানে দাঁড়িয়ে রাসুল (সা.) ইমামতি করতেন। এই মেহরাবটি মিম্বরের নিকটবর্তী- এখান থেকে এখন আজান দেওয়া হয়।

ঐতিহাসিকদের মতে , মূলত মসজিদে নববীর মেহরাব বলা হয় ওই জায়গাটুকুকে যেখানে দাঁড়িয়ে রাসুল (সা.)  নামাজের ইমামতি করেছেন। তবে তিনি ঠিক যে স্থানে পা রাখতেন-সেটি মেহরাব নয়; মসজিদের অংশ।

আল আরাবিয়াকে মসজিদে নববীর এক কর্মকর্তা জানান, দ্বিতীয়টি হলো- ওসমানী শাসনামলে নির্মিত মেহরাব। আর এখন পর‌্যন্ত এই মেহরাবে দাঁড়িয়েই ইমামগণ নামাজের ইমামতি করেন। ওসমানী আমলে মসজিদের উত্তর দিকে সম্প্রসারণকালে এটি তৈরি করা হয়।

কেউকেউ বলেন, মসজিদে নববীতে মোট তিনটি মেহরাব ছিল- এর সর্বশেষটি নির্মাণ করেন ওসমানী খলিফা সুলতান সুলেমান। এটিকে হানাফি মেহরাব বলা হয়। মালেকি ইমাম মসজিদের মেহরাবটি ব্যবহার করলে সুলতান সুলেমান হানাফি ইমামের জন্য তৃতীয় মেহরাবটি নির্মাণ করেন।

রাসুলের রওজা (কবর):

রওজা অবস্থিত জায়গাটি রাসুলের মিম্বর ও গৃহের মধ্যবর্তী স্থান। বুখারী শরিফে হজরত আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত: রাসুল (সা.) বলেছেন, আমার গৃহ ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের একটি বাগান। রাসুলের রওজা সবসময় খোলা থাকে। দর্শনের জন্য পুরুষ ও নারী তীর্থযাত্রীদের আলাদা আলাদা সময় নির্ধারিত রয়েছে। এখানে মুসলিম নারী-পুরুষ নফল নামাজ আদায় করেন এবং রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরূদ ও সালাম নিবেদন করেন। মসজিদের অন্যান্য স্থানের তুলনায় রওজায়ে আতহারকে আলাদা সাজে সজ্জিত করা হয়েছে- এতে ব্যবহার করা হয়েছে মনিমুক্তা ও হিরাজহরত। তা ছাড়া এখানের গালিচা ও অন্যান্য বস্তুও খুবই দামী ও সুন্দর।

হারামাইন শরিফাইনের ব্যবস্থপনা পরিষদ জানিয়েছে, রওজা শরিফের আয়তন তিনশত ত্রিশ বর্গমিটার। দৈর্ঘে বাইশ মিটার এবং প্রস্থে পনেরো মিটার। রওজায় সবসময় সিকিউরিটির জন্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকেন। তাদের কাজ হলো- এটিকে পরিচ্চন্ন রাখা এবং ওইসব মানুষদের ঠেকানো যারা রওজায় এসে অসমর্থিত কাজে লিপ্ত হতে চায়।

সবুজ গম্বুজ:

মসজিদে নববী (সা.)- এর অন্যতম আকর্ষণ হলো- রওজার উপর নির্মিত সবুজ গম্বুজ। এটি রাসুল (সা.) এবং তাঁর দুই সাথী আবু বকর ও ওমর (রা.)-এর সমাধির ওপর ছায়া দান করছে। আলি ইবনে আহমদ আল-সামহুদি তাঁর গ্রন্থ ওয়াফা আল ওয়াফাতে লিখেছেন, রাসুলের রওজার উপরে সর্বপ্রথম গম্বুজ নির্মাণ করা হয় ৬৭৮ হিজরিতে। সুলতান কালাউন এটি কাঠ দিয়ে নির্মাণ করেন।

ঐতিহাসিক ড. আখতার বলেন, আমরা এখন যে সবুজ গম্বুজটি দেখি, এটি মূলত রাসুলের কামরার উপর নির্মিত বাহিরের গম্বজ- এর নিচে ছোট আরেকটি গম্বুজ রয়েছে, তার উপরে যথাক্রমে রাসুল (সা.), আবু বকর ও ওমর (রা.)-এর নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে।

সবুজ গম্বুজটি নিচে বর্গাকৃতি এবং উপরে অষ্টভূজ আকৃতিতে তৈরি করা হয়েছে। আল জাজিরা এনসাইক্লোপিডিয়ার তথ্যমতে, মসজিদে নববীতে আগুন লাগার পর পুন:রায় গম্বুজটি নির্মাণ করা হয়। বলা হয়, ওসমানী খলিফা সুলতান গাজি মাহমুদ এটির পুন:নির্মাণ করেন।

রাফাত পাশার ডায়েরির সূত্রে ড. আখতার আরো বলেন, ১৮৩৭ সালে গম্বুজে সবুজ রঙ করার আগে দীর্ঘকাল তাতে সাদা রঙে আচ্ছাদিত ছিলো, এরপর কিছুদিন বেগুনি-নীল ছিলো। পরে এটিকে সবুজ রঙ দেয়া হয়।

লাইব্রেরি:

মসজিদে নববী (সা.)-এ একটি সুদৃশ্য পাঠাগার রয়েছে। ১৩৫২ হিজরিতে এটি নির্মাণ করেন আওকাফ ডাইরেক্টর আবিদ মাদানি। এখানের অনেকগুলো কিতাব আছে যেগুলো পাঠাগার নির্মাণের আগে থেকেই মসজিদে নববীতে পঠিত হতো। পাঠাগারের পাশাপাশি এই প্রকল্পে অডিও সেকশন রয়েছে-এখানে মসজিদে নববীর ক্লাস, খোতবা এবং ইবাদত সংরক্ষণ করা হয়। টেকনিক্যাল সেকশনে পরিচালনার কাজ করা হয়। এখানে বহু পুরনো দিনের দূর্লভ অনেক বইপুস্তক সংরক্ষিত আছে। অধ্যয়নের জন্য নারী-পুরুষের জন্য আলাদা কক্ষ সহ আধুনিক প্রায় সব ধরনের সুবিধা রয়েছে এই পাঠাগারে। হজের মৌসুমে অসংখ্য দর্শনার্থী এখানে জ্ঞানপিপাসা নিবারণের জন্য আসেন।

সূত্র: বিবিসি উর্দু

অনুবাদ: বেলায়েত হুসাইন, তরুল আলেম, সংবাাদিক এবং শিক্ষক-মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ-ঢাকা। ইমেইল- belayethossain9988@gmail.com

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।