Home ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন ‘ভালবাসা দিবস’ পালনের নামে বেহায়াপনা থেকে দূরে থাকুন: জুমার বয়ানে মাও. মুহাম্মদ...

‘ভালবাসা দিবস’ পালনের নামে বেহায়াপনা থেকে দূরে থাকুন: জুমার বয়ানে মাও. মুহাম্মদ উল্লাহ কাসেমী

[দেশের অন্যতম বিখ্যাত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজধানী ঢাকার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার শিক্ষক ও খতীব এবং বিশ্ববিখ্যাত দারুল উলূম দেওবন্দের ফারেগ মাওলানা মুহাম্মদ উল্লাহ কাসেমী শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারী) জুমার খুতবার পূর্বে উপস্থিত উলামায়ে কেরাম, তালেবে ইলম ও মুসল্লিয়ানে কেরামের উদ্দেশ্যে যে বয়ান পেশ করেন, তার চুম্বকাংশ সুপ্রিয় পাঠক সমীপে নিম্নে উপস্থাপন করা হল। – বিভাগীয় সম্পাদক]

জুমার বয়ানে মাওলানা মুহাম্মদ উল্লাহ কাসেমী বলেন- “মুহতারাম হাজেরীন! আলোচনা চলছিল সন্তানের সঠিক দিক্ষা বিষয়ে। দিক্ষার অন্য সব বিষয়ের মাঝে এটিও একটি অন্যতম বিষয় যে, আমরা আমাদের সন্তান-সন্তুতির ব্যাপারে এ বিষয় খেয়াল রাখবো যে, তারা কখন কোথায় যায় ও কীভাবে দিন-রাত অতিবাহিত করে। কোথাও আমাদের সন্তানরা বিজাতীয় কালচারে মত্ত হয়ে নিজেদের মহামূল্যবান ঈমান হারিয়ে ফেলছে না তো?

মুহতারাম মুসল্লিয়ানে কেরাম, আসছে ১৪ই ফেব্রুয়ারী পশ্চিমা সংস্কৃতির ভ্যালেন্টাইনস ডে, তথা বিশ্ব ভালবাসা দিবস নামে বিশ্ব বেহায়াপনা দিবস। এ দিনে বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কের অনেক যুবক যুবতী অবাধে মেলামেশা করে এবং ভালোবাসার নামে অশ্লীলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে জাহান্নামের দিকে ছুটে চলে। এটা কি করে আমাদের জন্য পালনীয় হতে পারে? অথচ আমরা জানি যে, আল্লাহ তাআলা কিছু দিনকে অন্য সব দিনের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। সেখানে তো এই দিবসটির আলোচনা নেই। তাহলে এটি কি করে আমাদের জন্য পালনীয় হতে পারে?

আরও পড়তে পারেন-

১৪ই ফেব্রুয়ারীকে কেন্দ্র করে ৭ই ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু করে ২১শে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত যে ভালোবাসা দিবস পালন করা হয়, মুসলমানের ভালবাসার জন্য তো কোনো দিবসের প্রয়োজন নেই। মুসলমানের ভালবাসা তো প্রত্যেক দিন। তাছাড়া যে মুসলিম উম্মাহকে চলায় বলায় শয়নে জাগরণে সর্বদা ভালবাসারই শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘হাদিয়া দাও, মুহাব্বত বাড়বে’। বলা হয়েছে, ‘যে তার পিতামাতা ও সকল মানুষ থেকে এবং তার সন্তান সন্তুতি থেকে আমাকে বেশি ভালবাসবে না, সে মু’মিন নয়’। যাকে বলা হয়েছে, সকল মুসলমান এক দেহের মত। যদি তার চক্ষু আক্রান্ত হয় তাহলে মাথায় ব্যথা অনুভূত হয়। আর যদি মাথায় ব্যথা হয়, তাহলে পুরো শরীরে ব্যথা অনুভব করে।

বলা হয়েছে, মুমিন তো সেই যে তার ভাইয়ের জন্য ঐটাই পছন্দ করে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে। অন্যত্র বলা হয়েছে, মুসলমান তো সেই, যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে। মুসলিম উম্মাহ তো সেই জাতি, যারা কনকনে শীতের রজনীতে বিছানা ছেড়ে ঠান্ডা পানিতে ওজু করে, আশা ও ভয় বুকে নিয়ে তাদের প্রতিপালককে ডাকে। এসব কিছুই তো ভালবাসারই বহি:প্রকাশ। যারা মহান রাব্বুল আলামীনের আদেশে তাদের পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করে থাকে।

সুতরাং যাদের জীবনের শুরু, শেষ, মাঝ; পুরোটাই শুধু ভালবাসা আর ভালবাসাতে ভরপুর, তাদের ভালবাসা আদান প্রদানের জন্য বিশেষ কোন দিবসের প্রয়োজন নাই। নেই তাদের জীবনে বিবাহ বার্ষিকী। আর না আছে জন্ম বার্ষিকী পালনের কোন প্রয়োজনীয়তা।

হ্যাঁ, দিবস কেন্দ্রীক ভালবাসা সে জাতিরই হতে পারে, যাদের ভালবাসা সার্বজনীন নয়, বরং শুধুই আনুষ্ঠানিকতা স্বরূপ। তাই পশ্চিমা খ্রীস্টান সংস্কৃতির কথিত ‘ভালবাসা দিবস’ নামের বেহায়াপনা থেকে সকল মুসলমান নর-নারীর দূরে থাকা একান্ত কর্তব্য ও ঈমানের চাহিদা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সঠিকটা বুঝার তাওফীক দান করুন। আমীন।”

– মাওলানা মুহাম্মদ উল্লাহ কাসেমী, শিক্ষক ও খতীব, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা, ঢাকা।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।