Home শিক্ষা ও সাহিত্য শিশুর পঠন দক্ষতা ও তার প্রয়োজনীয়তা

শিশুর পঠন দক্ষতা ও তার প্রয়োজনীয়তা

।। বিপ্লব গোস্বামী ।।

কোন একটি নিদিষ্ট পাঠ শুদ্ধ উচ্চারণ, দাড়ি, কমা, যতি ইত‍্যাদির যথাযথ ব‍্যবহার করে মুখে বলে অথবা পড়ে যাওয়ার ব‍্যবস্থাকে পঠন বলা হয়। ডঃ মাইকেল বেস্টেরের মতে, ” পঠন হচ্ছে- দৃশ‍্য ধ্বনি উৎপাদন অর্থোপলদ্ধির মিশ্রিত প্রতিক্রিয়া।” শুধু কোন পাঠ পড়ে গেলেই হয় না, তার অর্থ উপলদ্ধি করতে না পারলে পঠন কার্য সফল হয় না। পঠনের সঙ্গে পাঠকের পর্যবেক্ষণ, চিন্তাধারা এবং অভিজ্ঞতা নিহিত থাকতে হবে।

পঠন মূলত: দুই প্রকার। যথা- নীরব পঠন ও সরব পঠন।

নীরব পঠন – নীবর পঠন হচ্ছে পাঠটি সম্পূর্ণ নীরবতার মাধ‍্যমে অধ‍্যয়ন করা। নীরব পঠনের উদ্দেশ‍্য হল কাউকে বিরক্ত না করে পড়া। এর মাধ‍্যমে আগ্ৰহ নিয়ে পঠন কার্য চালিয়ে যাওয়া যায়। তাছাড়া নীরব পঠন পড়ার গতিবেগকে বৃদ্ধি করে এবং একাগ্ৰতা বৃদ্ধি করে। কিন্তু নীরব পঠন শিশুদের জন‍্য কার্যকারি নয়।

সরব পঠন – সরব পঠন হল আয়ত্তীকরণের তুলনায় উচ্চারণের পাশাপাশি দাড়ি, কমা, যতি ইত‍্যাদির সঠিক ব‍্যবহার করে অধ‍্যয়ন করা। সরব পঠনের মাধ‍্যমে বিভিন্ন বর্ণ, শব্দ, সুপষ্টভাবে উচ্চারণ করা যায়। সরব পঠনের সময় ছন্দ, যতি, বিরাম চিহ্ন ইত‍্যাদি বিষয়ে লক্ষ‍্য রাখা হয়। তাছাড়া সরব পঠনে উচ্চারণে গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই সরব পঠন শিশুদের জন‍্য অত‍্যন্ত কার্যকারী ও প্রয়োজনীয়।

মাতৃভাষা ব‍্যবহারে পারদর্শী হয়ে ওঠার জন‍্য কিছু দক্ষতা অর্জত করা প্রয়োজন। তার মধ‍্যে পঠন দক্ষতা অত‍্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্ৰহণের শুরু পঠন দিয়েই। তাই শিশুদের জন‍্য শিক্ষা গ্ৰহণে পঠন দক্ষতা অপরিহার্য। যে কোন জ্ঞান আহরণের জন‍্য পঠন দক্ষতার প্রয়োজন। পঠনের মাধ‍্যমেই জ্ঞানের বৃহত্তর ক্ষেত্রে প্রবেশ সম্ভব।

আরও পড়তে পারেন-

বিকাশমান শিশু তার মা-বাবা ও পরিবেশে থেকে বিভিন্ন ধ্বনি শুনে তা অনুসরণ করে এবং ক্রমাগত মৌখিক নৈপুণ‍্য ও পারগতা অর্জন করে। এ ক্ষেত্রে শুদ্ধ উচ্চারণে যদি তার ভাষা শোনার সুযোগ পায়, তবে শুদ্ধভাবে বলাটাও আত্মস্থ করতে সক্ষম হয়। শিশুদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বলার পরিসর বাড়তে থাকে। এভাবে নিজেদের বিভিন্ন চাহিদা প্রকাশে তারা বলতে পারদর্শী হয়ে ওঠে।

শিশুদের বিদ‍্যালয় শিক্ষায় পঠন দক্ষতা অত‍্যন্ত কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।পঠনের মাধ‍্যমেই শিশুদের প্রাথমিক বা প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা আরম্ভ হয়। পঠনের শুরুতেই অভিভাবক ও শিক্ষকের সচেতন প্রয়াস কাম‍্য। শুদ্ধ উচ্চারণ, স্বরের ওঠানামা, আবেগ ইত‍্যাদি দিকের প্রতি লক্ষ‍্য রেখে  সামনে আদর্শ স্থাপন করে পঠন অনুশীলন করতে হবে।

পঠন দক্ষতার জন‍্য কিছু পূর্ব প্রস্তুতি প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে।শিশুর জড়তা এবং আড়ষ্টতা কাটিয়ে ওঠার জন‍্য ছড়া, আবৃত্তি অনুশীলনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে এবং অপভাষা , অপষ্ট ভাষা ব‍্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে। এভাবেই শিশু পঠন দক্ষত অর্জন করতে সক্ষম হবে।

শিশুকে  ভবিষ্যতে তার মাতৃভাষার সঠিক ব্যবহার ও মাতৃভাষায় অধ‍্যয়নে দক্ষ করে তুলতে এবং একজন সুপাঠক করে তুলতে শৈশব কাল থেকেই  তার পঠন দক্ষতা অর্জন করানো অতি প্রয়োজনীয়।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।