Home লাইফ স্টাইল কিছু মানুষ কেন উদার এবং সহানুভূতিশীল হয়?

কিছু মানুষ কেন উদার এবং সহানুভূতিশীল হয়?

কথায় আছে মানুষের ব্যবহারই মানুষের পরিচয়। মানুষ যত উদার ও দয়াবান হয়, তাকে তত বেশি করে বাকি মানুষেরা ভালোবাসে। সহানুভূতিশীল মানুষের সংখ্যা যত বাড়বে, এই পৃথিবী বসবাসের জন্য ঠিক ততটাই বেশি সুন্দর হয়ে উঠবে। মানুষের এই গুণগুলি সাদরে গ্রহণযোগ্য হলেও, মানুষ ঠিক কী থেকে বা কোন কারণে এই গুণগুলি রপ্ত করে তা এখনও অব্দি অজানা।

যেহেতু এই গুণগুলি সমস্ত মানুষের মধ্যে সচরাচর দেখা যায় না, তাই কেন কিছু মানুষ উদার এবং সহানুভূতিশীল হয় সেই কারণ আমাদের অজানা। ঠিক এই বিষয় নিয়েই Arizona State University’s Center for the Study of Religion and Conflict এর একদল গবেষক এবারে নতুন গবেষণা করলেন। এই গবেষণাতে তারা দেখতে চেয়েছেন কিছু মানুষের উদারনৈতিক হওয়ার কারণ। তারা আরও দেখতে চেয়েছেন তাদের ধর্ম কোনোভাবে তাদের কে এক্ষেত্রে প্রভাবিত করছে কিনা।

কীভাবে করা হয়েছে সহানুভূতিশীল সংক্রান্ত গবেষণা?

এই গবেষণার জন্য মুসলিম এবং ক্যাথলিক মানুষদের বেছে নেয়া হয়েছিল। এই গবেষণার সাথে যুক্ত বিজ্ঞানী ক্যারোলিন ওয়ার্নার জানালেন যে তারা দেখতে চাইছেন কীভাবে কারো প্রতি কোনো একজনের উদারনৈতিক মনোভাব তার উপর প্রভাব ফেলে। তারা দেখতে চেয়েছেন পরবর্তীকালে তাদের মধ্যে যারা অন্যদের সাহায্য করছেন এবং যারা করছেন না তাদের পার্থক্য কোথায়। গবেষকরা দেখতে চেয়েছেন ধর্মের কোন কোন বিষয় মানুষকে তাদের সময়, প্রচেষ্টা এবং অর্থ দান করতে উদ্বুদ্ধ করে!

আরও পড়তে পারেন-

গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া দুই ধর্মের ক্ষেত্রে সেই বিষয়গুলির মধ্যে কতটা সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্য রয়েছে। ডাবলিন, মিলান, প্যারিস এবং ইস্তানবুলের মুসলিম ও ক্যাথলিক মানুষদের নিয়েই প্রধানত গবেষণাটি করা হয়েছে। প্রফেসর ওয়ার্নার এর কথায় ,”এর আগে অনেক গবেষণায় দেখা গেছে ধার্মিক মানুষেরা সাধারণত যারা অতটা ধার্মিক নন, তাদের থেকে বেশি দয়াবান হন। এই গবেষণায় ধার্মিক মানুষেরা কতটা বেশি বা কম উদার ও সহানুভূতিশীল তার খোঁজ করা হচ্ছে না। বরং দেখার চেষ্টা করা হচ্ছে ধর্মের কোন কোন বিষয় মানুষকে দয়াবান করে তোলে।”

কী কী জানা গেল এই গবেষণায়?

এই গবেষণাতে অনেক কারণ বা বিষয় স্পষ্ট ভাবে উঠে এসেছে। যেমন মুসলিমরা মনে করে যদি আল্লাহ তাদের প্রতি মেহেরবানী করে থাকে, তাহলে তাদের দায়িত্ত্ব গরিব-দুর্বল দের সাহায্য করা। তারা মনে করে এই ভাবে তারা নবীজির দেখানো পথে হাঁটছেন। ক্যাথলিকরা একটু অন্যভাবে দয়াবান। যীশু খ্রিস্টের প্রতি তাদের প্রবল ভালোবাসা থেকেই তারা দানধ্যান করে থাকেন। অনেক সাদৃশ্যও উঠে এসেছে গবেষণাতে। যেমন, সাহায্যপ্রার্থী যদি চেনা কেউ হন তাহলে সেই সম্প্রদায়ের প্রায় অনেকেই সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন। কখনও কোনো গরিব খাবার দোকানে এলে, দোকানদার তার সাথে খেতে বসছেন টেবিলে। দুই ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে এভাবে সাহায্যকারী এবং সাহায্যপ্রার্থী দের মধ্যে একটি সংযোগ ঘটে। আরও একটি বিষয়ে দুই ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য দেখা গেছে। তাদের ধর্মপ্রচার বা কোনো সম্মেলনে সবাই মুক্তহস্তে এগিয়ে আসে।

চারটি শহরেই দুই ধর্মাবলম্বী মানুষদের থেকে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়েছে এই গবেষণা। তাদের যাজক বা গুরুরা এই গবেষণা সম্পর্কে জানার পর উৎসাহী হয়েছেন ফলাফল জানতে। প্রফেসর ওয়ার্নার জানান, “মানুষ তাঁর নিজের ধর্ম সম্পর্কে আরও গভীরভাবে এখন জানতে ইচ্ছুক। গবেষণাতে প্রকাশ বেশিরভাগ মানুষ ধর্মের প্রভাবেই ধীরে ধীরে সহানুভূতিশীল এবং দয়াবান হয়ে মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসেন।” দয়া বা সহানুভূতিপ্রবণতা এমন গুণ, যা পৃথিবীতে আরও বেশি করে মানুষের মধ্যে দেখা দিলে আরও ভাল তা সমাজের পক্ষে। আর দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে মানুষের নিজ নিজ ধর্ম তাদের এই পথে হাঁটার দিশা দেখাচ্ছে।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।