Home ইসলাম যে আমলে জিন ও মানুষের ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকা যায়

যে আমলে জিন ও মানুষের ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকা যায়

প্রতিকী ছবি।

হাবিবা রহমান উজরা: আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) নিম্নোক্ত দোয়ার মাধ্যমে হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন, এই দোয়ার মাধ্যমে তোমাদের পিতা [ইবরাহিম (আ.)] ইসমাঈল ও ইসহাকের জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। দোয়াটি হলো : ‘আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শায়তানিন, ওয়া হাম্মাতিন, ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩৭১)

দোয়ার অর্থ : আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কলেমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় কামনা করছি।

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, গতকাল রাতে আমাকে একটি বিচ্ছু কামড় দেয়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তুমি সকাল-বিকাল এই দোয়া পড়লে ‘আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি .. ‘ সৃষ্টিজগতের কোনো কিছু তোমার ক্ষতি করবে না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং : ২৭০৯) 

আরও পড়তে পারেন-

দোয়ার মর্যাদা ও গুরুত্ব : হাদিসের ব্যাখ্যাকাররা বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতকে সন্তানদের যাবতীয় অনিষ্ট থেকে রক্ষার পদ্ধতি শিখিয়েছেন। যেমন—তিনি শিখিয়েছেন এমন সব বিধান, যার মাধ্যমে আমরা দৈনন্দিন জীবনে আল্লাহর সাহায্য ও নিরাপত্তা লাভ করতে পারি। তিনি জান্নাতি যুবকদের দুই নেতা হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর নিরাপত্তার জন্য এই দোয়া পাঠ করেছেন, যা দোয়ার গুরুত্ব ও মর্যাদা বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। হাদিসে ব্যবহৃত ‘আল্লাহর পরিপূর্ণ কলেমা’র অর্থ—আল্লাহর পবিত্র নাম, পবিত্র কোরআন ও তার গুণাবলি। আর ‘কুদৃষ্টি’ মানে মানুষ, জিন বা অন্য কোনো সৃষ্টির এমন দৃষ্টি, যা ক্ষতির কারণ হয়।

ঝাড়ফুঁক বৈধ হওয়ার শর্ত : আলোচ্য হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, শরিয়তে ঝাড়ফুঁক বৈধ। তবে শর্ত হলো—

১. পাঠকৃত বাক্যে শরিয়তবিরোধী কোনো শব্দ বা বাক্য থাকতে পারবে না।

২. দোয়ার সঙ্গে জাদুর মতো নিষিদ্ধ কোনো বিষয়ের সংমিশ্রণ থাকতে পারবে না।

৩. অন্তরে এই বিশ্বাস ধারণ করতে হবে যে আল্লাহই আমাকে উপকৃত করবেন। দোয়া একটি উপায়-উপকরণ মাত্র। আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে দোয়ার উপকার বা ক্ষতি করার কোনো শক্তি নেই।

হাদিসের শিক্ষা : হাদিসবিশারদরা আলোচ্য হাদিসের কিছু শিক্ষা উল্লেখ করেন। তা হলো:

ক. আল্লাহর নামের অসিলা গ্রহণ করা বৈধ।

খ. উল্লিখিত দোয়ার মাধ্যমে শিশুদের জন্য আল্লাহর নিরাপত্তা কামনা করা মুস্তাহাব।

গ. কুদৃষ্টি ও তার ক্ষতির বিষয়টি সত্য।

ঘ. শয়তানের অনিষ্ট থেকে সবারই নিরাপত্তা কামনা করা আবশ্যক।

ঙ. পরিবারের অভিভাবক শিশুদের বিশেষ যত্ন নেবে এবং তাদের কল্যাণকর বিষয়গুলো শেখাবে।

আল্লাহ সবাইকে জিন-ইনসানের ক্ষতি থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।